প্রিয়ট্রমা

৫১৪ পঠিত ... ১২:৪৩, মে ০২, ২০২২

story-cover (2)

কর্মক্ষমে নাকি বয়সের দোষে দেয়ালে দেয়ালে শ্যাঁওলা জমে, ভ্রমে নির্ঘুম উন্মত্ত চোখের প্রখরতায় আয়নার প্রতিবিম্বে পরিক্রমণ চলে, ঘষে দেয়াল, সবকিছু মুছে ঝকঝকে নতুন রং লাগিয়ে নিজেকে উৎসারিত করে তোলে নতুনরূপে, তুরুপের তাস, হাঁসফাস, দাসপ্রথার পূজায় নিজের রূপ-লাবণ্যের এক্সিবিশন, দর্শকের করতালি, জোড়াতালি, এলোপাথাড়ি ব্রহ্মচারী সদাহাস্যরসাত্মক, মারাত্মক ত্বকীয়তায় সৌন্দর্যশালীনতা অমলিন, মিলনের পূর্বাপর খবরাখবর দেন-দরবার, টাকা-জমি-ক্ষমতা-লোভ-হিংসা-রোজা-পূজা-বেহেস্ত-হূরলালসা সারাক্ষণ ধরাশায়ী, সাধারণের নাম করে লুটে-পুটে খেয়ে হজ্ব করে পাপের খাতা ধুয়ে পায় নিদারুণ তৃপ্তি, ঘাপটি মেরে ফুটপাতে রাত কাটায় নিঃস্ব,  প্রার্থনা শেষে স্রষ্টার ঘরে তালা ঝুলে, লাশ পঁচা গন্ধ, রন্ধ্রে রন্ধ্রে সন্দেহ, দান-খয়রাত দিনদুপুরে পুকুরচুরিদৃশ্য অবলোকনে কোণঠাসা ধারণাতীত বাড়ন্ত শিশুর হিসুতে বিছানা ছয়লাব, কয়লাতে ময়লার দাগ, সার্ফ এক্সেলের দায়ীত্বশীলতা, শ্লীলতাহারা উদ্বাস্তু, প্রস্তুত প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, সতীত্বহীন চরিত্র, পরিত্রাণ খুঁজে হয়রান, সাকিবের কয় রান, পেরেশান, খান খান স্বপ্ন, কল্পনায় প্রকল্পিত তীব্রতর প্রেম, শরীর, কাম, লোভ, রোগ-শোক, হোক প্রতিবাদ, সংবাদ, প্রবাদ-প্রবচন প্রহসনের হাস্যকর রহস্য উদঘাটনে টানাপোড়নের নির্ভার সব্যসাচী, চিকিৎসা সেবার বাহারি তেহারি-কাচ্চি-বিরিয়ানির নিয়মিত মিনতিতে আকুল হইলো প্রাণ নাচিলো ধমনী, রমণীকূল তৃণভোজী, জীবিত প্রভাতে তীব্রকায় নিরাকারে সঁপিলো হিয়া, শিয়া-সুন্নী-হিন্দু-মুসলিম-খ্রীষ্টান-মুন্নী-শীলা, ছিলা মুরগি গিরগিটি, টাকার কারবার, মদ, মা, মাটি, দেশ-বিদেশ, আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে, আমি যেন সেই কাজ করি প্রয়োজনে, জেনে-শুনে বিষ, একুশ বাইশ তেইশ বছর ধরে ধারালো ধূম্রজালে মাছেদের আনাগোনা, লাফালাফি, পার্টি করে ডার্টি পোশাক, কসাইয়ের বিন বাজে, হেমিলন ঘুরে দাঁড়ায়, পাড়ায়-মহল্লায়, পড়াইতে চায় বাসায় গিয়ে বিদেশী ভাষা, আশায় বুক বাঁধে, কাঁধে ট্র্যাজারার, রাজার পতিতপল্লীর মায়ার হুঁঙ্কারে মাইকে সেতারের ম্যাৎকার, গেইটে ঠায় দাঁড়িয়ে খোদার্ত মানুষ, কুকুর একাকার! অন্নখানে পণ্যভোজ, রোজ, আফিমের ডোজ-নামচা, দুধ-চা, লাল চা, চাল-তেলবাজ, আলুবাজ, পিঁয়াজবাজরা রাজার বাজার রাখে নিয়ন্ত্রণে, মন্ত্র পড়ে ঝাড়-ফুঁক দেয় বিজ্ঞানী, অজ্ঞান জ্ঞানী, বাণীজ্যিক চিন্তাশিল্পকলা রুটিশীল মানুষের পোঁদে ফোঁড়া ফুটে ফেটে যায় দায়সারা পাহারাদার, ফাদারের কাছে নান-বিসর্জন, অর্জন সফেদ পোশাক, সবজি গ্যালমান, নাম-ডাক তাক লাগায়, রাগায়, মাখায়, তাকায়, টাকা হেরি ক্ষান্ত কেনো কলম তুলিতে, চক্ষু বিনা ইনকাম হয় কি সহীতে? বিপরীত পীড়িত ত্বরিত চিরতার পানি, ঘানি ভাঙ্গা মাস্টার্ডখোর প্রখর বিদ্যাশক্তিতে পারদর্শী, বড়শীতে দুম্বা ধরে, ডরে বুক কাঁপে, তাপনিয়ন্ত্রীত ঘরে রিহার্সেল চলে স্বর্গের পূর্ব-প্রস্তুতি, স্তূতি করে সর্বহারা, গর্ব করে মরবো জেনেও তালপাতার সেপাই, যা পাই তাই নিয়ে চিরকাল কাটাবো, তবু আমারে দেবো না *ুদিতে!

শ্মশানে গুলশানে সবারই আনাগোনা, পূণ্যবাহী জাহাজে প্যাঁচানো স্বর্ণলতিকা, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে মঙ্গাবাসী, শীতলক্ষায় লাশ্যময়ী ভাসে, ডুবে কেউ জল  খায় না, লজ্জায় রোজ কাটে ভ্রম, ইদানিং নিদারুণ করুণাময় মননে শয়নে স্বপনে প্রাণপনে নেত্রকোণের পানি দৃশ্যমান হয় না, হায়নারা হানা দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে চিনিয়েছে নীচতার চিরায়ত রুপ, পুরোদস্তুর রপ্ত করেছি রক্তারক্তির কৌশল, ছলে বলে দলে তলে টলে চলমান সম্মান, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবোধ, মঙ্গল কামনারত শনি, নিছক দেশপ্রেমিকের দ্বেশপ্রীতি লতা গুল্মকে প্যাঁচিয়ে ভরতনাট্যমের প্রদর্শনী ক্ষীপ্র গতিতে, এগিয়ে চলে কৃচ্ছ-সাধনের নামে কচ্ছপ দৌড়, প্রতিবাদে দেয়ালে প্রশ্রাবের ম্যাপ, চেপে ধরে শিশ্ন, প্রশ্ন তোলা যাবে না, এটা খাবে না, ওটা ধরবে না, মরতে চাইলে মোস্ট ওয়েলকাম, হলুদ খাম, ভেতরের চিঠি গায়েব, নায়েবের কণ্ঠে রাজার বসবাস, আভাস মেলে তেলে জলে মিলনমেলার, মেলানিনের দোষে ফেলানিরা ঝুলে, লেজুড়বৃত্তি শিক্ষাবৃত্তির মতোই সম্মাননীয়, সুতোর টানে ধোঁয়ায় অন্ধকার, বাতাসে আতরের গন্ধ, বন্ধ চোখ, লোকেরা কলা খায় কলা বেচে, একলা বসে লালন রবীন্দ্রনাথ পড়ে, ঘরে ঘোরে উচাটন, পঁচন ধরে ব্রেনে, ট্রেনের বগিতে, হোটেলের লবিতে, কবিতে, ছবিতে, হবিতে, চর্বিতে তীব্র কামোন্মাদনা, অধূনালুপ্ত প্রাপ্তবয়ষ্ক হস্তশিল্প, হিরো হিরোইন ইয়াবা আইস, নাইস অওসাম ডুড, কেউ চোখে দেখে না, হাতড়িয়ে বেড়ায়, কেউ হাত বাড়ায়, কেউ আম খেয়ে বিচিটা ধরিয়ে দিয়ে বলে- চুষে দেখো, অনেক টেশ!

সাহিত্য শিল্প বিনোদন পলিটিক্স প্রেম হিংসা ধর্ম কর্ম অর্থ নৈতিকতা বিবর্জিত কার্বনে সুন্দরবন ভোজন, গণ সমীক্ষায় রক্ষা পায় না চায়না ইটালি রেগুলার বোল্ড গোল্ড ডায়মন্ড, লন্ডভণ্ড, গণ্ডগোল, ত্রিভূজ প্রেম, মননশীলতার শীতলতায় পিতলের দাম আকাশচুম্বী, এমবিএ কালচার, চালচলনে অতুলনীয়, নীল মার্সিডিজে জেডির কিচিরমিচির, চিরদিন আমার কানে বাজায় বাঁশি, শিবের গীত বাজায় ওরা ধান বানতে, ধন ধান্য পুষ্প ভরা চায়না ইন্ডিয়ার যৌথ প্রযোজনা আমাদের নয় বসুন্ধরা তাহার মাঝে অবাধে ঘুরে বেড়ায় হাজার কোটি টাকা মেরে দেয়া হাজি শাপ, শিপের ব্যবসা, চামড়ার ব্যবসা, ধর্ম-ব্যবসা, সাবসে বাড়া ব্যবসা পলিটিক্স! “সাবাশ বাংলাদেশ” আবদুল্লাহ খালিদের ভাস্কর্য, অর্জিত হয়েছে নির্লজ্জতার তুঘলকি কাণ্ড! আন্ডারওয়ারে সুপারম্যানের লগো, ওগো প্রিয়ট্রমা করিও ক্ষমা, মাখনে পেখমমাখা খামাখা তামাশা, তুমি রবে নীরবে আরবের মরুভূমীতে ভীমরুলের কামড় কোমর দোলানো ললনা তুলনাতীত বর্তমান ঘিরে ঘুরে দাঁড়ানোর রণকৌশলতুল্য মূল্যহীন নির্লজ্জতা তারকারাজি আহাজারি, প্রত্যেকটা প্রাণীরই থাকে নিজস্বতা- চিন্তায় দেখায় রেখায় লেখায় শেখায় খাওয়ায় চাওয়ায় পাওয়ায়, না পাওয়ায় হতাশায় আশায় ভাষায় ভালোবাসায় হিংসায় ক্রোধে বধে বাধায় থাবায় লোভে পাপে চাপে তাপে আলাপে প্রলাপে কর্মে বর্ণে ধর্মে শরমে মরমে মরনে জন্মে স্বপ্নে কল্পনায় ভাবনায় ভাব নেয়ায় দেয়ায় ক্ষুধায়, খোদায় ঘুমে জাগায় খুশিতে কান্নায় রান্নায় ধান্দায় বিচারে চরিত্রে চুক্তিতে চুরিতে রক্তে ভক্তে শুঁকতে শোকে সুখে অসুখে চোখে মুখে গড়নে শরীরে পরনে স্মরণে ধরনে ধারণে ধারণায় প্রেরণায় জানায় ডানায় থানায় মানায় প্রতিবাদে প্রতিরোধে গর্জনে হুঁংকারে শংকায় চিৎকারে প্রতিহিংসায় হীনম্মন্যতার সূধায় মেধায়… ম্যান ইজ মর্টাল, চিত্রপটেতো বটেই, ঘটে যা সব সত্য নহে, হেলায় হারিয়ে ভেলা, খেলা দেখি, লাখে লাখে, রাখে আল্লা মারে কে? কেনা যায় সবই, নাকে তেল, ঘুম, ঝুম বৃষ্টি, দৃষ্টি প্রখর, নখের আঁচড়, লিপস্টিক, খোলা চুল, সুগন্ধী, পাখির কলতান, লতা মুঙ্গেষকর, তালের পিঠা, তিলের ভর্তা, পটল তুলছে কেউ, ঘেউ ঘেউ, মাইকে আ-ওয়াজ, নবান্নের আগমন, ধানের মূল্য, জৈব সার, রসালো লসাগু, বেগুণ-তেলে মাখামাখি, হাজ্বী চোরে শালা-দুলাভাই, পুলিশের জুতো পালিশ করে ভিক্টিম, ইলিশ ভাজা গন্ধ মৌ মৌ করে, নোবেল ভাবে জাতীয় সঙ্গীত নিয়া, লেভেল বুঝা বড় দায়, দাঁড়ায় জাতীয়তাবাদ, প্রশ্ন করে কী আছে তোমার? মায়ের দোয়ায় ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে চোখের ডাক্তার ব্লাড টেস্ট নিয়ে শনিগ্রহের রাহুর দোষ খোঁজে পায়! হাতে চাঁদ, রেখায় রেখায় লেখা সুপ্রষন্ন ভাগ্যদোষ, আঙ্গুলে পাথর, আতরের সুবাষে অমল টলমল। মলাটে ঢাকা স্বপ্ন, রোপণ করে আত্মহননের লোভ, ভোল পাল্টে এলজিইডির অন্ধকার দ্বীনের পথে ভেজা পা বাড়ায় ওরা, গোঁড়া, ব্যবসায়ী, নেতা, মাস্তান, রেপিস্ট, সেলিব্রিটিরা একই সাধনায় মুগ্ধ। রুগ্ণ, মৃত্যুপথযাত্রী মগ্ন ডাক্তারের নজরুলগীতিতে, মোক্তার রীতিনীতি মাফিক ট্রাফিক কন্ট্রোল করে, ঘরে-বাইরে-আকাশে-বাতাসে লাশের গুম-ন্ত বার্বিকিউ, মাউন্টেন ডিউ, ফাউন্টেন পেন, এনকাউন্টার, সেন্টার পয়েন্টে ক্লায়েন্ট বেলিড্যান্সে বাকরুদ্ধ, দাঁড়কাক কড়া নাড়ে, ঘাড়ে চাপাতির কোপ, উন্নয়নের প্রকোপ, ক্ষীপ্রতার সাথে প্রতিভাশূন্য গোয়ালঘরে বাঘের গর্জন, বের হয়ে আসে মুরগি, হাঁস, পাতালে মহামূল্যবান খনিজ পদার্থের অনুসন্ধান! অর্থহীন প্রলাপে অশ্রুসজল শ্রোতা লুঙ্গি ভিজিয়ে ফেলে, জেলে ছেলেধরা, ধলেশ্বরীর বুকে কারখানার বিষ্ঠা, পৃষ্ঠা উল্টায়, বিজ্ঞাপনে চোখ আটকায়- স্বপ্ন হাসিমুখের, চলো বহুদূর, জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে, প্রয়োজনে পাশে, সিম্পল ম্যাথ, বিশ্বজুড়ে তারকাদের প্রিয়, কোমায় সততা, ঘুমে অচেতন প্রগতি, চেতনানাশক দেশপ্রেম, প্রেস্টিজিয়াস পার্লারে সৌন্দর্য বর্ধন, গর্দভ সদর্ভে আত্মপ্রচারে স্নাত, লোকদেখানো কলা, কৌশলে ছলে বলে ইনিয়ে বিনিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায় নিদারুণ সারল্য, বেহায়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে, চামড়ার দাম আর পাওয়া যায় না, কাইন্ডনেস ছড়ানোর আপ্রাণ টিকটক শো!

priyo trauma

: গরম লাগে কাকা!

: (কাকা শুনলো শরম) ও কিছু না, ছেইলে মাইনশের আবার শরম কীয়ের ব্যাডা?

গোটা বিশ্ব মহাচিন্তিত, নির্ঘুম, আতঙ্কিত, বিহবল! মাস্ক পরছে সবাই, মুখোশের আড়ালে বেঁচে থাকার আকুল চেষ্টা, পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ফেসবুক ওয়ালে গণসচেতনতা, অবচেতন মনে চেতনাশূন্য উন্নয়নজনিত পানিশমেন্টে দিগ্বিদিক! কোটি মানুষের শহরে বেঁচে থাকার, টিকে থাকার বাসনা, জোছনাহীন অট্টালিকার থাবায় ভাবনাজুড়ে লেজুড়বৃত্তি, মৃত্তিকার মতো নিষ্পাপ দৃষ্টি নিয়ে নবজাতক কাতর, পাথরের কান্না শুনে কবি, ছবি আঁকে কামার, সেলফিতে চামড়ার সৌন্দর্যের দৃশ্যায়ন, শয়নে-স্বপনে গোপনে বীজ-বপন, কৃপণ, লোভী, ধর্ষক, নেতা, মন্ত্রী, তান্ত্রিকের ভবিষ্যতবাণী, জ্ঞানী মুখ লুকায়, গু খায় হতাশাবাদী, বাতাসে বাঁশের গন্ধ, অন্ধ করে ভিক্ষা, শিক্ষা ঐক্য শান্তি প্রগতি তীর গতিতে বিঁধছে, জিতছে কেউ কেউ, হারছে সবাই, ভাই বোন আত্মীয়-স্বজন প্রিয়জন অপ্রিয়জন, প্রিজন নড়ছে, নজর কাড়ছে, ছেঁড়া কাঁথা, ব্যথানাশক ইনজেকশন, প্রথাগত জীবন-যাপন, রক্তাক্ত শার্টে আর্টিস্টিক শিষ্ঠাচার, পাঁচ ওয়াক্তে পূণ্যকামী, স্বামী বিবেকানন্দ কিংবা জীবনানন্দের পছন্দের অন্তরদৃষ্টিগত আগামীর পূর্বাভাসে ডুবে ডুবে জল দিয়ে নির্জলা সত্য ঈদের চাঁদ হয়ে উঁকি দেয়!

 

৫১৪ পঠিত ... ১২:৪৩, মে ০২, ২০২২

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top