বাসর রাতে বিয়েতে পাওয়া নিজেদের উপহারগুলো দেখছে শিহাব ও রুনা। অনেক উপহার। ঘরের মেঝে প্রায় বোঝাই। বড়সড় চৌকো একটা বাক্স বেছে নিল শিহাব। চকচকে লালর্ যাপারটা খুলতে গিয়ে প্রায় ছিঁড়েই ফেলল। বেরিয়ে এলো ডিনার সেট।
'এটা খুবই কাজের জিনিস' বলল রুনা। 'ডিজাইনটাও সুন্দর!'
'হ্যাঁ ভালো হয়েছে' প্যাকেটটা গুছিয়ে রাখতে রাখতে বলল শিহাব।
লম্বাটে একটা প্যাকেট খুলল রুনা। ভেতরে বাহারি কাজ করা বিছানার চাদর।
শিহাব বলল, চাদরটা বেশ দামি, তাই না?
'হ্যাঁ, নতুন সংসারে এটাও প্রয়োজনীয়!' বলল রুনা।
'এটাতে একটা ফুলদানি!' আরেকটা প্যাকেট খুলতে খুলতে বলল শিহাব।
'এই যে দেখ, তোমার খুব কাজের জিনিস- এ্যাশ ট্রে!' রুনার হাতে শোভা পাচ্ছে কঙ্কালের খুলিসদৃশ দুর্দান্ত ছাইদানি। প্রফুল্ল হয়ে উঠল শিহাবের মন।
'আর এইটা একটা শো-পিস!' বলল রুনা।
'আবারও ডিনার সেট?' শিহাব আপসেট।
'বিছানার চাদরও!' ঠিকমত দেখলই না রুনা।
'আর ওটাতে?'
'টেবিল ল্যাম্প।'
'আচ্ছা, ভালো...'
'এই যে ইস্ত্রি!'
কাজের জিনিস, ভাবল শিহাব। তবু রসিকতা করল, 'এক ফুলশয্যায় দু-দুটো স্ত্রী থাকা ঠিক হলো কি?'
দেখতে দেখতে প্রায় সবগুলো উপহার সামগ্রী দেখা হয়ে গেল তাদের। তারা কিছুটা ক্লান্ত, খানিকটা হতাশ। প্রয়োজনীয় জিনিসটা পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে একটা প্যাকেট বাকি আছে। ছোট্ট চারকোণা প্যাকেট। শিহাব উত্তেজিতভাবে প্যাকেটটা খুলছে। রুনাও উৎকন্ঠিত।
'নাহ!' একরাশ হতাশা ঝরল শিহাবের কন্ঠে। 'আংটি, সোনার আংটি!' মন মেজাজ বিগড়ে গেছে তার।
'চলো...'! রুনাও হতাশ।
তারপর তারা ফুল শয্যায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। ছোট, কিন্তু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপহারটা তাদের কেউ দেয়নি। শিহাব অন্তত তার বন্ধুদের ওপর আস্থা রেখেছিল।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন