সারাক্ষণ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম নিয়ে মেতে থেকে অবশেষে টিকটকার হয়ে পড়লে ত্রিরত্নকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে দেন সুজন খালু।
ইদের সময় হাসপাতালের রোগীদের মন ভালো করতে মুক্ত মাঠে বাতাবিলেবু দিয়ে ফুটবল, হ্যান্ডবল, টক-শো গেম খেলতে সবাইকে মাঠে নেয়া হয়। ত্রিরত্ন কোন এক ফাঁকে পালায় সেখান থেকে। অনুকূলচন্দ্রের আশ্রমে গিয়ে দুপুরের খাবার খায়।
এরপর রাস্তায় হেলমেট পরা সেবকদের কাছে মন্ত্রীর স্ত্রী-র ভাগ্নে পরিচয় দিলে; তারা বলে, ‘ওহ তোমরা তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভাগ্নে। চলো তোমাদের বাইকে করে ঈশ্বরদী পৌঁছে দিই।‘
ঈশ্বরদীতে পৌঁছে রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্রের রাশিয়ানদের বালিশ হাতে ঘুরতে দেখে; ত্রিরত্ন তাদের নিয়ে একটি টিকটক করে ফেলে। টিকটক দেখে ঢাকা থেকে রেল খালা ফোন করে বলেন, ‘ঢাকায় চলে আয়; তোদের এবার রাঁচিতে রেখে আসবো।‘
রেলমন্ত্রীর স্ত্রী ভাগ্নেত্রয় উন্নয়নের সুবর্ণায় গিয়ে এসি কোচে বসে। আবার একটা টিকটক করে। হঠাৎ এসে হানা দেয় টিকেট চেকার। ভাগ্নে ত্রয় কোরাস করে,
‘তিনভাগ্নে বেকার
তাই বলে কী শখ নেই তাদের
দেশটা ঘুরে দেখার!
আসলে পরে চেকার
বললে হেসে ভাগ্নে রত্ন
ট্রেনটা আমার খালুর।
টিকেট চেকার গেয়ে ওঠে,
সব সখারে পার করিতে নেবো আনা আনা
তোমাদের বেলা নেবো সখা
শোভনের ভাড়া
সোনা চলো নন এসি গো…’
সুপারম্যানের আন্ডারওয়ারের মাঝ থেকে অনেক কষ্টে এক হাজার টাকার একটা নোট বের করে দেয় সুজন ভাগ্নে।
: আগে ঢাকা যেয়ে নিই, ভালো হয়ে যাও শফিক!
তিনভাগ্নে কেঁদে কেঁদে টিকটক করে,
‘এ আমার কেমন খালুগো
পরিচয় দিতেই ধরিয়ে দিলো
জরিমানার আলুগো।‘
এই টিকটক দেখে রেগে ফায়ার হয়ে সুজন সখি বলেন, ‘সুজন তুমি এক্ষুণি বরখাস্ত করো ঐ স্বাধীনতার শত্রু টিকেট চেকারকে।‘
সুজন একটু আমতা আমতা করলে সখি বলে, ‘পঞ্চগড়ের মন্ত্রীর পাওয়ার নাই, আগে জানলে ঢাকার টাওয়ারকে বিয়ে করতাম।‘
টিকেট চেকার বসের ফোন পায়, ‘প্যাক আপ শফিক, খেয়েছো জমিদার গিন্নীর কিক। বেগম সাহেবার তিন ভাগ্নের কাছে নিয়েছো জরিমানা। তোমাকে তাই ঢাকা রেল অফিস বলেছে, তোমার অফিসে আসতে মানা। এখন তুমি ভাগ্নে রত্নদের মতো বেকারছানা।‘
ফেসবুকে ‘তুমি ভালো হয়ে যাও শফিক’ খবরটি চাওর হয়ে গেলে; রঙ্গভবনে দোলা লাগে।
সিটটা না হয় রাতে পেয়েছো; তাই বলে সিদ্ধান্তও নেবে মাঝরাতে? নাহ এটা মানা যায় না। মাঝরাতে সিদ্ধান্ত নিতেন কেবল স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। রঙ্গভবনে এসে প্রধান রঙ্গদার বিছানায় পা রেখে, বরখাস্তের চিঠি ধরিয়ে দিয়েছিলেন জলপাই জিয়া। লাঠি দেখিয়ে বলেছিলেন,
‘ওগো সায়েম; তুমি কি করতে চাও পোগোতিচিল কায়েম?
লাইলাতুল বরখাস্ত কি পোগোতিচিলকে মানায় সুজন? একি করলে, তুমি যে স্ত্রৈণচিল হয়ে গেলে!’
ফেসবুকের তৈলবানেরা মহল্লার নিও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহা বাবুদের হাঁকা সয়াবিন তেলের উচ্চ মূল্যের পক্ষে জাস্টিফিকেশন দিতে সবাই তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণ খুঁজতে ইউক্রেন চলে গেছে তখন। ফেসবুকের ভাগ্নে রত্ন ও রেল ভ্রমণ স্টোরি দেখেই মন্ত্রীর উদ্ধারকারী জাহাজ এম ভি তৈলবান আবার ঢাকা বন্দরে নোঙ্গর করে।
বরখাস্ত মন্ত্রী করেছেন নাকি তার দপ্তরের লোক করেছে তা প্রমাণ সাপেক্ষ। মন্ত্রীর গরীব ভাগ্নে প্রমাণ করে, এই সরকারের মন্ত্রী সৎ ও পবিত্র। উন্নয়নের সৎ সরকার বারবার দরকার।
মন্ত্রীর স্ত্রীর তিন ভাগ্নে সাইবার বুলিতে অজ্ঞান হয়ে গেলে, বাতাবি লেবুর রস খাইয়ে তাদের জ্ঞান ফেরানো হয়।
তৈলবানের একটি অংশ টাইম মেশিনে করে নিয়ে যায়, একাত্তরে, মন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নেদের চাচার শ্বশুরের ভাগ্নেরা রাজাকার ছিলেন। সুতরাং অরা স্বাধীনতার সপক্ষের সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে, এক হাজার টাকার জন্য ফার্স করেছে।
কিন্তু উগাণ্ডার প্রধানমন্ত্রী তাহাজ্জুদের নামাজ শেষে বলেন, ‘আবার তোরা মানুষ হ।‘ শফিক চেকারের পদোন্নতি পুরস্কারের সুপারিশ করেন। আর মন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নেদের দুস্থ টিকটকার ভাতা দিতে বলেন।
ঢাকায় অপেক্ষমান শৃগালেরা, যারা রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে সুজন পতনের জন্য তসবিহ জপছিলো; তারা কান্নায় ভেঙে পড়ে।
চারিদিকে তখন হ্যাশট্যাগ উগাণ্ডার পিএম-এর খই; সঙ্গে অত্যন্ত টক আওয়ামী দই।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন