ধর্ষণ একটি জঘন্য ও গুরুতর অপরাধ। বাংলাদেশে এই অপরাধ সঙ্ঘটিত হয়ে থাকে অধিক ও অস্বাভাবিক পরিমাণে। কিন্তু 'পুলিশ মামলা নিতে চায়নি', এই কথাটিও আমরা সচরাচরই শুনে থাকি। সমস্যাটা কী তাহলে, ধর্ষণ মামলা নিতে পুলিশ বা আইন-শৃংখলা বাহিনী এত দেরি করে কেন বা নিতে চায় না কেন? আমরা ভাবতে চেষ্টা করেছিলাম কিছু সম্ভাব্য কারণ।
১# আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের অপরাধ চেনে। খুন, হত্যা, চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সাথে তারা পরিচিত থাকলেও ধর্ষণ কোন ধরনের অপরাধ তারা তা বুঝে উঠতে পারে না। সেজন্য মামলা নিতে দেরি হয়।
২# ধর্ষণের অভিযোগ আসলে মামলার আসামী ও ভিকটিম কে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা বুঝে উঠতে পারে না। পরে যদি ভুল করে ধর্ষককে ভিকটিম ও ধর্ষণের শিকারকে আসামী করে বসে, সেই ভয়ে মামলা নেয় না।
৩# ধর্ষণ বিরোধীদলীয় আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, ব্লগ কিংবা কার্টুন ধরনের কিছু নয় বলে ব্যবস্থা নিতে এত দেরি হয়।
৪# 'ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি।' একটা ব্যাধির ব্যবস্থা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন নিবে? এই কাজ তো ডাক্তারদের। এমনটা মনে করে তারা বসে থাকে।
৫# ধর্ষণ ও দর্শনের মাঝে তারা কোন তফাৎ করতে পারে না। সেজন্য কেউ যখন গিয়ে বলে 'আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি'। তারা ভাবে দর্শনের শিকার হয়েছে। দর্শন তো ভালো জিনিস, ব্যবস্থা কী নিবে!
৬# সম্ভবত ধর্ষণের মামলা সরাসরি নেয়ার কোন নিয়ম নেই। ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি প্রথমে ৪-৫ দিন এদিক সেদিক ঘুরবে, এরপর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিবে কিংবা কোন ভিডিও ভাইরাল হবে, এরপরই মামলা নেয়ার নিয়ম।
৭# পাপকে ঘৃণা করুন পাপীকে নয়। এই মর্মকথায় বিশ্বাস করে তারা ধর্ষণের প্রতি নিজেদের ঘৃণা ছুড়ে দিয়ে ধর্ষককে ভালোবাসতে শুরু করে।
৮# ধর্ষককে তারা এতটাই ঘৃণা করে যে এতটাই ঘৃণা করে তার নামও শুনতে চায় না। অন্যের মুখের তার নাম উচ্চারিত হোক তাও চায় না। নিজেরা তো নিতে চায়ই না।
৯# তারা আসলে ভালোবাসাবাদী। ধর্ষককে ভালোবাসা দিয়ে ভালো করে ফেলার নিমিত্তে তারা গোপনে কাজ করে যায়। সেজন্য মামলা নিয়ে ধর্ষকের ভালো হওয়ার পথ তারা বন্ধ করতে চায় না।
১০# বাংলা সিনেমাতে আমরা দেখি, কেউ ধর্ষণের শিকার হলে রাজুকে জোরে ডাকলে সে চলে আসে। কিন্তু বাস্তবে ধর্ষণের শিকার কেউ ধর্ষণের সময় 'পুলিশ' বলে জোরে চিৎকার করে না দেখে তারা রাগে অভিমানে মামলা নেয় না।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন