গুলি তো হাজমলা নয় যে তা জনগণের পোকিত বন্ধুরা চুষে খাবে!

৮২২ পঠিত ... ১৫:২৫, এপ্রিল ১৮, ২০২১

Guli 2

পুলিশ কিংবা এলিটফোর্স গুলি চালালে; এক শ্রেণীর উন্নয়ন বিমুখ লোক ফেসবুকে এসে পুলিশ ও এলিটফোর্সের সমালোচনা করে। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারেনা তারা; জনগণের টাকায় এই যে পুলিশের জন্য অস্ত্র ও গুলি কিনে সরকার পুলিশকে বিতরণ করে; তা ঠিক কেন করে; এর উত্তর দিতে পারেন সমালোচক মহল!

এমন তো নয় যে, পুলিশ সকাল-দুপুর-রাতে একটি করে গুলি খাবে ওষুধ হিসেবে। বুলেট তো ফ্লাজিল ট্যাবলেট নয় যে, পেট নেমে গেলে পুলিশ গুলি খেয়ে তার দুর্বল বঙ্গস্থলীর হেফাজত করবে।

আসলে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় কখনো যাননি; নিতান্ত শখের বসে ড্রইংরুম বুদবুদের মধ্যে রাজনীতির আলাপ করেন; কিংবা এই যে কিছু বিরোধীদল যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবার মতো জনভিত্তি; তারা এটা বোঝেন না যে, গুলিই সকল শক্তির উৎস।

এই যে উন্নয়নের বিরাট বাহুবলী এস আলম গ্রুপ; যাদের ভূমি অধিগ্রহণে সরকার ঋণ মওকুফ করেছেন; এই বিরাট অংকের টাকা শোধ দেবার হাত থেকে জানে আলমদের দুঃশ্চিন্তামুক্ত রাখা হয়েছে; এর কারণ হচ্ছে; এস আলম গ্রুপ যেন সব দুঃশ্চিন্তা মুক্ত থেকে উন্নয়নের মুক্তিযুদ্ধ জয় করতে পারে।

সুতরাং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের 'কয়লা খনির ময়লা শ্রমিক'দের উচিত হয়নি; এস আলমের মতো এমন একটি পরহেজগার গ্রুপের কাছে বেতন চাওয়া; তাদের বিচলিত করা। এস আলম গ্রুপ মসজিদ বানিয়েছে; সেইখানে গিয়ে নামাজ পড়েন; পোলা-মাইয়া মাদ্রাসায় পাঠান; সেটা এস আলম গ্রুপ স্থাপন করেছে। এইভাবে বেহেশতের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন। এস আলম গ্রুপ যেহেতু মসজিদ ও মাদ্রাসা বানিয়েছে; বেহেশতে এই গ্রুপের জন্য কক্ষ বরাদ্দ হয়েছে। তাদেরকে এই বাতাবি লেবুর বেহেশতে একটু নিশ্চিন্তে থাকতে দিন; আসল বেহেশতে থাকার মহড়া করতে দিন। বেতন চেয়ে বিব্রত করবেন না। বেতন চেয়ে বিক্ষোভ করলে উন্নয়নের পুলিশ আসে উন্নয়নের 'ভীষণ ১০০ বছরে'র জিডিপি ও অর্থনীতি রক্ষায়। তখন তাদের হাতে যে বন্দুক ও গুলি থাকে; তা দিয়ে শ্রমিক শিকার করবে না তো কী করবে তারা! গুলি তো হাজমলা নয় যে তা চুষে পুলিশ তার রাষ্ট্রক্ষমতার বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।

এই কতগুলি বামপন্থী লোক আছে; সত্তর বছর ধইরা রাজনীতি করেও নিজস্ব কোন লোকবল নেই। কারণ জনগণ সাম্যের বুলি চায় না। তারা চায় উন্নয়নের গুলি। তা-ও বামাতিগুলি এসে শ্রমিক অধিকারের পক্ষে ক্রন্দন শুরু করে। এতো ইম্প্র্যাক্টিক্যাল হলে কী চলে নাকি! উন্নয়ন কী কার্ল মার্কস নিজেই বুঝেছেন? উনি বোঝেন নাই। সেইখানে তার শিষ্যরা কী করে বুঝবে। উন্নয়ন বুঝতে ফকির-দরবেশ-পদ্মগোখরা হতে হয়।

পুলিশের গুলি আছে তো ভোট আছে; দলের ক্যাডারের গুলি আছে তো ভোট ব্যাংক আছে। জনগণ যেইটা খাইতে চায়; তা তারে খাইতে দ্যান। খবরদার থাড়ুদারি করবেন না।

এই যে পুলিশ প্রধান বললেন, পুলিশের কাছে ভারী অস্ত্র আছে; শুনে মনটা আনন্দের কান্নায় ভারি হয়ে এলো। অস্ত্র আছে মানে গুলি আছে; গুলি থাকলে সেই গুলি জনগণ খাবে ট্যাবলেট হিসেবে। শ্রমিক বেতন চাইলে সে গুলি খাবে; জয়শ্রীখণ্ড থেকে আসা 'মানবতার দাদু' রাজ অতিথি'র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করলে সে গুলি খাবে। এইগুলি হচ্ছে পবিত্র ক্যাপসুল; যা জনগণকে যাপিত জীবনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়ে বেহেশতের পাসপোর্ট হাতে ধরিয়ে দেয়।

এমনি একটা পাসপোর্ট করতে গেলে পুলিশ চা-মিষ্টি খেয়ে তবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেয়। কিন্তু বেহেশতের পাসপোর্টের আবেদন করলে; পুলিশ বিনাখরচে; কেবল জনগণের পয়সায় কেনা গুলি খাইয়ে 'আগে এলে আগে পাইবেন' ভিত্তিতে তা মুহূর্তের মাঝে দেয়। কক্সবাজারের পুলিশ প্রদীপ যাদের বেহেশতের পাসপোর্ট দিয়েছিলো; তারা এখন কত সুখে আছে হেভেনে; লং ডিস্টেন্স কল করে একটু জেনে নিয়ে তারপর পুলিশ ও গুলির পরশমনির সমালোচনা করতে আসবেন। আপনি তো জীবনে একটা গুলিও খাইয়া দেখেন না; আবার আসছেন গুলির সমালোচনা করতে।

সরকার ও পুলিশ জনগণের জন্য ইহকালে বাতাবি লেবুর বেহেশতে ও পরকালে পোকিত হেভেন নিশ্চিত করেছে। এজন্য কোথায় কৃতজ্ঞ হবেন; তা না; আপনারা সমালোচনা করেন। এইজন্য বলি সেধে মানুষের উপকার করতে নেই। এই অনিচ্ছুক জনগণকে উন্নয়ন এনে দেয়াটাই ভুল হয়েছে।

আর করোনাভাইরাসের ছোবলে মানুষ যেরকম শ্বাসকষ্ট পেয়ে দম আটকে মরে; তার চেয়ে পুলিশের একটি গুলি অনেক বেদনাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করে। শুধু কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হবে উন্নয়নের মৌমাছি হুল ফুটিয়েছে; পরক্ষণেই নিজেকে পাবেন হেভেনে। সেখানে খুশিজলের নহর আছে; 'মি টু' মুক্ত শহর আছে; আঙ্গুর আছে; আপেল আছে; দুধের নহরে ঠান্ডা ও গরম বিভিন্ন ফ্লেভারের আনন্দ স্রোত আছে।

এতো বড় উপকার আপনার জীবনে এর আগে কে করেছে; সবাই বেহেশতের লোভ দেখায় কিন্তু এরপর দলের ও তেলের ও সংসারের ঘানি টানায়। কিন্তু পুলিশ হচ্ছে জনগণের পোকিত বন্ধু। সে যে কথা দেয়; তা সে রাখে। আপনার সামান্য ট্যাক্সের পয়সায় কেনা গুলিতে কী অসামান্য বেহেশত সে আপনাকে উপহার দেয়।

তাই তো উন্নয়নের গাতক 'শিয়াল কহেন' ফর্মিয়েছেন, এই "বেহেশতের জন্য গুলি প্রকল্প" যদি আপনার পছন্দ না হয়; আপনি এই বাতাবি লেবুর বেহেশত ছাইড়া আপনার পছন্দের পরাজিত শয়তানের দোজখে চইলা যান। ছাগু কুনহানকার। অভার এন্ড আউট।

৮২২ পঠিত ... ১৫:২৫, এপ্রিল ১৮, ২০২১

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top