সম্রাট কারাগারে: মোঘল রাজদরবারে ডাকা হলো জরুরি সভা

৯৬২ পঠিত ... ১০:২১, অক্টোবর ০৭, ২০১৯

চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র‍্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু গত ছয় তারিখে র‍্যাবের এক বিশেষ অভিযানে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার হয় সম্রাট, ওরফে ক্যাসিনো সম্রাট!

ডিজাইন ও অলংকরণ: শফিক হীরা

ভোগ, বিলাস, পান, গান, প্রণয়া, বউ বিলাসী ও ডাক নামে সম্রাট রাখার মাধ্যমে এই সম্রাটকেই প্রভাবশালী মোঘলদের প্রো-ভার্সন মানে প্রো-সম্রাট মনে করা হতো। ফলে তার গ্রেফতার সারাদেশে আতঙ্ক ও থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি করার পাশাপাশি মোঘলদের রাজদরবারও কাঁপিয়ে দেয়! প্রো-মোঘল সম্রাটের এমন গ্রেফতারের পর রাজদরবারে ডাকা হয় বিশেষ সভা। মহামতি আকবরের সভাপতিত্বে এই সভায় প্রো-সম্রাটকে ট্রিবিউট দিয়ে আকবরের পাশেই প্রো-সম্রাটের হাসি হাসি মুখ করা একটি ছবি রাখা হয়। এ সময় প্রো-সম্রাটের সম্মানে বাকি সম্রাটদের দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করতেও দেখা যায়।

আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন সম্রাটগণ দাঁড়ানো থেকে বসার কথাই ভুলে যান। দীর্ঘ কয়েক মিনিট পর সম্রাট বাবরের 'এভাবে দরবার শান্ত কইরা রাখলে হইবো? মার্কেটে আলোচনা ছড়িয়ে কিচ্ছু করা লাগতো না' হুংকারে সবাই সম্বিত ফিরে পায়।

প্রো-সম্রাটকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সম্রাট শাহজাহান নিজের বক্তব্যে বলেন, 'সম্রাট মানুষ! ভাব-গাম্ভীর্য ও প্রভাব-প্রতিপত্তি ধরে রাখার জন্য একটু আধটু সাধনা ও নিজের মনখুশ মতো তো চলবেই! সাধারণ মানুষকে মোঘল সম্রাটদের ক্ষমতার ব্যাপারে ধারণা দেয়ার জন্য এটুকু না করলে ক্যামনে কী! আরে মিয়া, আমি যখন সম্রাট আছিলাম, আমিও এইসব করছি। তাজমহল নিয়া কাহিনী তো আপনারা জানেন! কই প্রো-সম্রাটতো তেমন বড় কোন অপরাধও করেনি! শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য করার খায়েশে একটু পকেট কাটছে। একজন সম্রাট এটুকু করতে পারবে না?'

নিজের বক্তব্যের শেষের দিকে এই উত্তরসূরির জন্য কিছুটা আফসোস করে সম্রাট শাহজাহান বলেন, 'পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে নিলে সব শিক্ষা নিতে হয়! এই প্রো-সম্রাট আধুনিকতার ক্ষপ্পরে পড়ে নিজের শৌর্য্যের জন্য বীর্যকে কাজে লাগানোর কথা ভুলে গেছে। মাত্র ২ সন্তান নিয়ে পৃথিবীটি টেকা দায়। আমি তো মাত্র মমতাজকে দিয়েই...'

শাহজাহানকে থামিয়ে দিয়ে সম্রাট আকবর বলেন, 'ফালতু কথা বাদ দাও!' রাজ্যের লেখকদের উদ্দেশ করে আকবর বলেন, 'বাংলাদেশ সরকারের কাছে আজই একটি পত্র লিখুন। লিখুন, আমি মহামতি আকবর বলছি, মোঘল সম্রাটদের পরম্পরা রক্ষায় ওই রাজ্যে আমাদের প্রো-সম্রাট খাজনা ও মাসোহারা সংগ্রহের কাজটি করতো! নির্বুদ্ধিতা ধরুণ আপনারা তাকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বলছেন। অতিসত্তর তাকে সসম্মানে খাজনা ও মাসোহারা সংগ্রহের জন্য নিজ অবস্থানে ফিরিয়ে না দিলে আপনাদের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।'

দূতের মাধ্যমে অতি দ্রুত চিঠি পাঠানোর আদেশ দিয়ে মহামতি আকবর সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সভা শেষে প্রবীণ সম্রাট বাবরকে গুনগুন করে 'আ সম্রাট এলোন ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড। ইটস আ টেরিবল থিং' বলতে শোনা যায়।

৯৬২ পঠিত ... ১০:২১, অক্টোবর ০৭, ২০১৯

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top