রাস্তায় নিজে ময়লা ফেলে নিজেই পরিস্কার করে খ্যাতি পাওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম সুপ্রভাত বাসের ধাক্কায় নিহত ছাত্র আবরার হোসেনের নামে দুই মাসে ফুট ওভারব্রিজ নির্মানের ঘোষণা দিয়েছেন।
গত বছর আগস্টে এবারের ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরেই জাবালে নূর বাসের ধাক্কায় মৃত স্কুল ছাত্র-ছাত্রীর সংবাদে হেসেছিলেন মন্ত্রী শাহাজাহান খান। সৌভাগ্যজনকভাবে হাসাহাসির কোনো ঘটনা ঘটেনি এবার। বরং শুরু হয়েছে সড়ককে ফুল প্রুফ নিরাপদকরণে এক যুগান্তকারী উদ্যোগের।
তাহলে কি এখন প্রতিটা দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির নামে একটা করে ওভারব্রিজ বানানো হবে? এমন সম্ভাবনা দেখতে পেয়েই বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, অদূর ভবিষ্যতে ফুট ওভারব্রিজ তৈরিতে বিশ্বের এক নম্বর দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উন্নয়নকর্মী জানান, '২০২৫ সালের মধ্যে সারাদেশে কয়েক লাখ ওভারব্রিজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি এভাবেই প্রতিদিন দূর্ঘটনার মাধ্যমে মানুষ মরতে থাকলে খুব সহজেই ওভারব্রিজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে আশানুযায়ী নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলা সম্ভব।’
এ পর্যায়ে পাশ থেকে মাঠ পর্যায়ের একজন সড়ক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘সড়কের নিরাপত্তায় ফুটওভার ব্রিজের আসলে কোনো বিকল্প নাই। যে দেশে যত ফুটঅভার ব্রিজ, সেই দেশের সড়ক সবচেয়ে নিরাপদ। দেখলেন না জেব্রা ক্রসিংয়েও মানুষ মারা পড়লো? কোনোদিন শুনছেন ফুটওভার ব্রিজে কেউ গাড়িচাপা পড়ছে?’
কিন্তু ওভারব্রিজগুলো তো সড়কে থাকে না, সড়কের উপরে থাকে! এতে সড়ক নিরাপদ হয় কীভাবে? দূর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য আইন-কানুন প্রয়োগ করা গেলেই তো ওভার ব্রিজগুলো তৈরির টাকা বাঁচানো সম্ভব, এমন প্রশ্ন করা হলে ঐ ব্যক্তি মুচকি হেসে বলেন, 'সড়ক নিরাপদ না, তাই না? আপনার তাইলে সড়কের উপর দিয়া হাটেন। ড্রাইভাররা আইন-কানুন বুঝবে না এইটাই তো স্বাভাইক। ওরা তো ড্রাইভার, নাকি?’
অন্যদিকে নতুন এই উন্নয়নের লক্ষমাত্রা পূরণের জন্য দেশের সকল ড্রাইভার ও পথচারীর সহযোগিতা কামনা করেছে মবিল পার্টিখ্যাত পরিবহন শ্রমিক সমিতি।
ইতোমধ্যে জানা গেছে, অনেক বাবা-মা তাদের বাচ্চার সহজ এবং ছোট নাম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওভারব্রিজের নামকরণে জটিলতা দূর করার জন্যই এই উদ্যোগ। বাবা-মায়েরা চায়, বাচ্চা বড় হয়ে এক্সিডেন্টে মারা যাওয়ার পর তার নামে যখন ওভারব্রিজ হবে, নামটা যেন সবাই সহজে পড়তে পারে। নামকরণ বোর্ডে ছোট নাম হলে কতৃপক্ষের বোর্ড বানাতেও সহজ হবে। শিশুরাও এইম ইন লাইফ রচনায় ‘বড় হয়ে ওভারব্রিজ হওয়ার ইচ্ছার কথা লিখছে বলেও অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে।
সড়ক নিরাপত্তার দিকে থেকে পিছিয়ে থাকলেও ফুটওভার ব্রিজে সমৃদ্ধতম দেশ হয়ে উঠবো আমরা, সেই স্বপ্ন পূরণে হয়তো আর খুব বেশি দেরি নেই।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন