সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা। তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন গত কয়েক বছর ধরে। বিভিন্ন সময় নানান প্রসঙ্গে তিনি বারবার আলোচনায় এসেছেন। কখনো কোন মন্তব্যে করে বিরোধীদলকে চিন্তায় ফেলেছেন, কখনো ফটোসেশন করে হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ার হিরো, কখনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে সাবধান করেছেন দুর্নীতিবাজদের। সম্প্রতি সিনেমা-লেখক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি, তার লেখা উপন্যাসে নির্মিত হচ্ছে সিনেমা গাঙচিল! ছবি তুলতে পছন্দ করা সদাহাস্য এই মানুষটি বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সকলের কাছে বিভিন্ন পরিচয়ে পরিচিত।
ওবায়দুল কাদেরকে নিজেদের মানুষ মনে করেন মিডিয়ার লোকজনেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিভি অভিনেতা বলেন, ‘অভিনেত্রীদের সাথে তার সাবলীল ছবি তোলা দেখে মনেই হয় না তিনি পর্দার কেউ নন। দেশি বিদেশি নায়িকাদের সাথে তার হাসিমুখ প্রমাণ করে তিনি আমাদেরই একজন।’ অন্য এক মিডিয়াকর্মী জানান ‘নায়িকারাও স্যারকে খুব পছন্দ করেন। ওপার থেকে ঋতুপর্ণা দিদি এলেই স্যারের খোঁজ করেন। কাদের স্যারকে সবাই পছন্দ করেন।’
অন্যদিকে এসব দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে ফটোগ্রাফার সমাজ। তাদের ভাষ্যমতে, ওবায়দুল কাদের একজন দুর্দান্ত মডেল। শত ব্যস্ততার মাঝেও ওবায়দুল কাদেরের অন্যতম পছন্দের কাজ হচ্ছে ফটোসেশন। তিনি নিয়মিত বিরতিতে প্রায়ই ঘরে-বাইরে, অফিসে, জনতার মাঝে, কিংবা একান্তই প্রকৃতির মাঝে নিজের ফটোসেশন করেন। আর সেসব প্রকাশিত হয় ফেসবুকে। এর মাঝে কোন কোন অ্যালবাম সবার কাছে পায় প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা। ২০১৮ সালের আগস্টে প্রকাশিত ‘চ্যালেঞ্জিং টাইমস’কে অনেকেই বাংলাদেশ ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় ফটো অ্যালবাম বলে রায় দিয়েছেন। তাই ফটোগ্রাফার এবং মডেল সমাজের দৃষ্টিতে ওবায়দুল কাদের তাদেরই একজন।
এছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের আরেকটি পরিচয় হচ্ছে তিনি এক সময় সাংবাদিকতাও করেছেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনি ঘোষণাও দিয়েছিলেন যে, যদি পরবর্তী মেয়াদে মন্ত্রীত্ব না পান, তাহলে হয়ত সাংবাদিকতা পেশাতেই আবার ফিরে যাবেন। তখন সাংবাদিক মহলেও বেশ সাড়া ফেলেছিল ওবায়দুল কাদেরের এই ঘোষণা। যদিও আবার নির্বাচিত হয়েছেন, পেয়েছেন মন্ত্রীত্বও, তবুও সাংবাদিকদের আশা ওবায়দুল কাদের ফিরে আসবেন সাংবাদিকতায়।
তবে সবকিছুর পাশাপাশি ওবায়দুল কাদের ঘুরেফিরে বারবার আলোচনায় এসেছেন বিএনপি নিয়ে কথা বলে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিএনপি নিয়ে নানান বক্তব্য দিয়ে আসছেন। কখনো প্রতিপক্ষ দলটির সমালোচনা তো কখনো তাদের প্রশংসা করেন, কখনো বিভিন্ন ভুল পদক্ষেপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। এসব করেই বর্তমান সময়ে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর পছন্দের মানুষ হয়ে গেছেন তিনি। সম্প্রতি দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ওবায়দুল কাদেরকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। তার বক্তব্য, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের এখন স্বেচ্ছায় বিএনপির উপদেষ্টা হতে চলেছেন। খামাখা আওয়ামী লীগে থেকে তাঁর লাভ কী? বরং ওবায়দুল কাদেরকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, বিএনপির দরজা খোলা আছে।’
এ ব্যাপারে বিএনপির এক পালিয়ে থাকা কর্মী আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে আমাদের জানান, ‘কাদের স্যারের মতো একজন উপদেষ্টার অভাবেই আজ বিএনপির এই দশা। আমার ধারণা, স্যারকে উপদেষ্টা হিসেবে পাশে পেলে আমরা এই সংকটকাল কাটিয়ে উঠতে পারবো!’
সবার মতামত জানতে পেরে আমাদের এই ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় আমাদের প্রশ্ন করে, ওবায়দুল তুমি কাদের?
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন