অপু-শাকিবের দাম্পত্য জীবনের মতো মিডিয়া যদি সাধারণ দম্পতির জীবন নিয়েও নিউজ করতো

২৭২৯ পঠিত ... ২২:১২, নভেম্বর ২৬, ২০১৭

কোনো এক সমাজবিজ্ঞানী বলেছিলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটের পর সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে চলমান সংকট হলো অপু-শাকিব সংকট! অপু বিশ্বাসের 'নিরুদ্দেশ' হওয়া থেকে শুরু করে অপু বিশ্বাসের শিশুসমেত প্রত্যাবর্তন এবং এরপর দাম্পত্য জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি সমস্যা নিয়ে দেশ ও জাতি ভীষণ চিন্তিত। চিন্তিত হতেই পারেন, অপু-শাকিব দম্পতির দাম্পত্য জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটি যে আপনাকে জানাচ্ছে দেশের সবধরণের মিডিয়া! অন্য যে কোন 'সাধারণ' দম্পতির জীবনের খুঁটিনাটি বিষয় কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েনকেও এমন মিডিয়া কাভারেজ দেয়া হলে, নিউজগুলো এমন হতে পারে কিনা, একটু দেখুন তো!

আজ সোমবার বাদ আছর ঢাকার মোহাম্মদপুরে হয়ে গেল কুদ্দস আর জরিনার বিয়ে। বিয়ে নিয়ে তেমন কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। তবে গেটের টাকা নিয়ে বরপক্ষ আর কনেপক্ষের মাঝে হালকা মন কষাকষি হয়ে যায়। ভাইবোনদেরকে গেটের ফিতা কাটা বাবদ খুব বেশি টাকা পরিশোধ না করায় কুদ্দুসের প্রতি জরিনা কিছুটা মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তবে এই ঘটনায় তার কোন হাত নেই বলেই জানান কুদ্দুস। এমন কি বিয়ের পর নিজের হাতকে আর কোনো ঘটনায় জড়ানোর ইচ্ছাই নেই, এবার হাতকে পূর্ণ বিশ্রাম দিতে চান, এমনটাও জানান তিনি।

 

এই ভারতীয় উপমহাদেশের যাবতীয় রীতি-নীতিকে কলাগাছ দেখিয়ে বাসরঘরে দুধের গ্লাসের বদলে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে ঢুকেছেন জরিনা। অপ্রীতিকর এই ঘটনায় কুদ্দুসের বন্ধুরা ক্ষুব্ধ হলেও কুদ্দুসের প্রতিক্রিয়া জানা যায় নি। তবে কি পুরো বৈবাহিক জীবন কুদ্দুসকে গরম পানি খেয়েই পার করতে হবে, এমন প্রশ্ন রেখেছেন কুদ্দুসের বন্ধুদের অনেকেই। এই ঘটনায় কুদ্দুসের শালা-শালীদের সমন্বয়ে পঁচিশ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

হুট করেই নিজের ফ্রেন্ডলিস্টের সকল ছেলেবন্ধুকে ডিলিট করে দিয়েছেন জরিনা। জরিনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা জরিনার ওপর ক্রাশ আছে এমন এক যুবকের কাছ থেকে তথ্যটি জানা যায়। গণ-আনফ্রেন্ড করার ঘটনার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন জরিনা নিজেই। তবে এর কারণ সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে রাজি হন নি। ওদিকে অপর সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুদ্দুসের সঙ্গে গতরাতে হয়ে যাওয়া একটি ঝগড়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই আনফ্রেন্ডকরণ...

 

এই নিয়ে চতুর্থবার বাসার ছাদে সিগারেট খেতে গিয়ে স্ত্রী জরিনার হাতে ধরা খেলেন কুদ্দুস। বাসার কাজের বুয়ার সূত্রে জানা গেছে, গত পরশুই কুদ্দুস লুকিয়ে সিগারেট খেতে গিয়ে তৃতীয়বার ধরার খাওয়ার পর জরিনা সিগারেট ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে তাকে দশ দিনের আল্টিমেটাম দেন। আল্টিমেটাম পাওয়ার এক দিনের মাথায়ই কুদ্দুস এমন কান্ড করায় জরিনা প্রচণ্ড মন খারাপ করেছেন!

 

সন্তান নিতে চাওয়ার ব্যাপারে কুদ্দুস এবং জরিনার মধ্যে আবারও দেখা দিয়েছে নতুন মতানৈক্য। এই মুহুর্তেই সন্তান নিতে চান কুদ্দুস। একটি পারিবারিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি পরিবারের ময় মুরব্বির উপস্থিতিতে তিনি এই ঘোষণা দেন। ওদিকে আগামী পাঁচ বছরের আগে কোনো ভাবেই সন্তান নিতে চান না ঘোষণা দিয়ে পৃথক একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন জরিনা। এই ঘটনা নিয়ে তাদের পরিবারের দাদী এবং নানীমহলে কিঞ্চিতে চাঞ্চল্য দেখা গেছে... 

 

কুদ্দুস জরিনার সংসার আবারও চলে এসেছে খবরে। এর আগে আরও একাধিক ঘটনায় খবরে আসার পর এই পরিবারে তৈরি হয়েছে নতুন সংকট- কে বাজার করবেন? 
কুদ্দুসের শ্বশুরবাড়ি সূত্রে জানা যায়, জরিনা গত চার দিন যাবৎ বাপের বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাপের বাড়ি যাওয়ার আগেই তিনি যতদিন না কুদ্দুস সপ্তাহে তিনদিন বাজার করছেন তার আগে ফিরে আসবেন না- এমন আল্টিমেটাম দিয়ে যান। এদিকে কুদ্দুস এই বিষয়ে এখনও নিরুত্তাপ। eআরকি থেকে যোগাযোগ করা হলে বাজার করা নিয়ে এখনও তেমন কিছু ভাবছেন না বলে জানান তিনি। এই কয়দিন হোটেলে খেয়েই দিন পার করার পরিকল্পনার কথাটিও জানিয়েছেন কুদ্দুস। 

 

প্রায়ই দেরি করে বাড়ি ফেরেন কুদ্দুস। প্রায়দিনই স্ত্রী জরিনার বকাঝকা এবং 'গেট খুলবো না, বাইরে দাঁড়ায় থাকো' এমন হুমকির মুখোমুখি হয়েই কাটাতে হয় রাত। তবে প্রতিদিনই জরিনা কিছুক্ষণ পর গেট খুলে দিয়ে স্বাভাবিক আচরণ করলেও এরপর থেকে দেরি করে বাড়ি ফেরার ব্যাপারে আরও কঠোর হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একটি পারিবারিক প্রেস ব্রিফিং-এ তিনি অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'কাল দরজা খুলছি, খুলছি। এরপর থেকে দেরি করে আসলে আমি আর ঘরে ঢুকতে দেবো না, যা হয় হোক...'

 

গত কয়েকমাস যাবৎ গর্ভবতী জরিনা। বর্তমানে তাকে বাপের বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছেন তার বাবা-মা। তবে জানা গেছে, মূল সংকট জরিনা কিংবা স্বামী কুদ্দুস নন। মূলত তার শ্বশুর-শাশুড়ির এই বিষয়ে ঘোর আপত্তির কারণেই তৈরি হয়েছে জরিনার গর্ভ ধারণকালীন অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা। ঘরের বউ কেন বাপের বাড়ি যেতে থাকবে? তারা কি যত্ন নিতে পারেন না? এমন প্রশ্নও রেখেছেন জরিনার বড় ননদ...

 

সকালেই জন্ম নিয়েছে কুদ্দুস-জরিনার প্রথম পুত্র সন্তান। এই নিয়ে পুরো পরিবারে বিরাজ করার কথা ছিল উৎসবের আমেজ। অথচ সবকিছু ছাপিয়ে পরিবার আজ দু ভাগে বিভক্ত। বিভক্তির কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, মূলত সন্তানের নাম কী হবে তা নিয়েই দু' পক্ষে চলছে তীব্র বিরোধ। কুদ্দুসের বাবা-মায়ের পছন্দের নাম 'সোনা মিয়া', ওদিকে জরিনার বাবা-মায়ের পছন্দ 'মতি মিয়া'। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা নার্স জানিয়েছেন, সন্তানের নাম নিয়ে কুদ্দুসের বিশেষ কোনো মতামত নেই এবং জরিনার মতামতকে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে না... 

 

অনেক জল্পনা-কল্পনার পর এবার ঘর ভাঙছে কুদ্দুস-জরিনার। এর আগেও বনিবনা না হওয়া জনিত অনেক সমস্যা থাকলেও এবারই প্রথম এই সম্পর্কটি মোড় নিচ্ছে বিচ্ছেদের দিকে। সম্ভাব্য কারণ হিসেবে কুদ্দুসের অফিসের নতুন সুন্দরী কলিগকে দায়ী করেছেন জরিনার ক্লোজ বান্ধবীরা। এদিকে জরিনার চাকরি করতে চাওয়াকেই কুদ্দুসের পরিবার মূল সমস্যা বলে জানায়। অন্যদিকে বিচ্ছেদের পর সন্তানের দায়িত্ব কে নেবেন, তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। এ বিষয়ে জনপ্রিয় ফেসবুকারদের অনেকেই নিজের স্ট্যাটাসে তাদের মতামত ব্যাখ্যা করেছেন। নামকরা এক ফেসবুকীয় 'সম্পর্কবিদ' গতকাল লাইভে কুদ্দুস-জরিনার সন্তান কার কাছে থাকা উচিৎ, সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন। তবে কুদ্দুস এং জরিনা এখনই এ সম্পর্কে কিছু জানাতে চান না বলে জানিয়েছেন। 

ডিজাইন: হায়দার আয়ান

২৭২৯ পঠিত ... ২২:১২, নভেম্বর ২৬, ২০১৭

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top