বিজয় সরণির জ্যামে বসে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করলেন বনানীর বিথী

৩৩৯ পঠিত ... ১৮:০১, মার্চ ১৫, ২০২২

Jam-e-biye

প্রতিটি কয়েনের দু’টো পিঠের মতোই প্রতিটি সমস্যার অপর পিঠেও রয়েছে লুক্কায়িত কোনো শুভ দিক৷ কেউ একজন বলেছিলেন, ‘Every problem is an opportunity in disguise’। তারই বাস্তব প্রতিফলন দেখিয়ে দিলেন বনানীর বিথী রহমান (২৪) নামের এক তরুণী। সবাই যখন বিজয় সরণির জ্যামে বসে ঢাকাকে গালাগালি করতে ব্যস্ত, গরমে তেল চিটচিট  অবস্থায় কপাল গড়িয়ে পড়ছে ঘাম কিংবা চোখ থেকে জল, তেমনই এক সংকটময় মুহূর্তে হাতে আলোর মশাল তুলে নেওয়ার মতই এক পদক্ষেপ নিলেন এই তরুণী। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিজয় সরণীর ইয়ার্কি প্রতিনিধি জানান, জ্যামে বসেই বিয়ের কাজ সেরেছেন বিথী এবং পাত্রপক্ষ। 

বাসের ছাদে শামিয়ানা টাঙিয়ে আয়োজন করা হয় গায়ে হলুদ এবং বিয়ের। রান্নার আয়োজন করা হয় বাসের ইঞ্জিনের তাপেই। শুধু তাই নয়, বিয়ের আয়োজনে এগিয়ে আসেন ত্রিসীমানার ভেতর জ্যামে আটকে থাকা বেশিরভাগ বাস, কার এবং তাতে অবস্থানরত যাত্রীরা। মেয়ের বাসের যাত্রী মেয়েপক্ষ এবং ছেলের বাসের যাত্রী ছেলেপক্ষ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়া বাসে বেশ কিছু ট্রাভেল ভ্লগার, ফুড ভ্লগার এবং ইন্সটাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার থাকায় বিয়ের ছবি এবং ভিডিও নিয়েও কোনো সমস্যা পোহাতে হয়নি। 

এক বিস্তর সাক্ষাৎকারে বিথী জানান, ‘কখনও কল্পনাও করতে পারিনি  আমার জীবনে এমন বিস্ময়কর কিছু ঘটতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক হবার পর থেকেই একটা ইচ্ছা ছিলো ডেস্টিনেশন ওয়েডিং-এর। তবে সেটা যে নিজের দেশেই, দেশের মাটিতেই বসে এতো চমৎকার করে করা সম্ভব—তা আমাকে বিজয় সরণীর জ্যাম শিখিয়েছে!’

স্বামীর সাথে কীভাবে পরিচয় হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে বিথী হাসতে হাসতে বলেন, ‘এটা তো আরো বেশি ইন্টারেস্টিং। আমাদের বাস দুটো প্রথমে পাশাপাশিই আটকে ছিলো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে থাকতে আমাদের চোখাচোখি হয়, টুকটাক কথাবার্তা শুরু হয়, প্রথম দেখাতেই আমাদের একজন আরেকজনকে পছন্দ করে ফেলি। রাতের বেলা ওর ঘুমন্ত চেহারা দেখে তো একদম প্রেমেই পড়ে গেলাম। সেই থেকে শুরু। মাঝে একবার জ্যাম ছাড়ি ছাড়ি করছিলো, বিশ্বাস করবেন কি-না জানিনা, ভীষণ কষ্ট হয়েছে সেই মুহূর্তে। অনেক দ্বিধায় ছিলাম জ্যাম ছেড়ে দিলে কী করবো..তবে বিজয় সরণী আমাকে হতাশ করেনি। কয়েক সেকেন্ড পরই আবার জ্যাম লেগে আমাদের একসাথে মিলিয়ে দিয়েছে...’

আজ রাতেই বাসের পেছনের সিটে পর্দা টানিয়ে বিথী এবং মারুফের হানিমুনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিথীর বাসের দরজায় সুতা টেনে গেট ধরা হবে। শালীপক্ষের নির্ধারিত দাবি পূরণ করেই মারুফকে পৌঁছতে হবে বিথীর কাছে...

৩৩৯ পঠিত ... ১৮:০১, মার্চ ১৫, ২০২২

Top