জানুয়ারি ২০২২ সেশনে অনুষ্ঠিত এফসিপিএস প্রথম পর্ব পরীক্ষায় কৃতকার্য এক হাজার চিকিৎসকই আলাদা আলাদা কোচিং সেন্টার খোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। সবগুলো সেন্টারই গড়ে উঠছে ফেসবুককে কেন্দ্র করে। ইতোমধ্যে পাশকৃত চিকিৎসকরা সবাই মিলে কয়েক হাজার গ্রুপ খুলে ফেলেছেন বলে জানা গেছে। একটি মূল গ্রুপের আন্ডারে লং ব্যাচ, শর্ট ব্যাচ, ক্রাশ ব্যাচ, এক্সাম ব্যাচ, রিভিশন ব্যাচ ইত্যাদি নামে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গ্রুপ।
শুধু তা-ই নয়, বাজারে ট্রাইপড, মাইক্রোফোন ইত্যাদিরও চাহিদা বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেন্টররা এসব কিনতে ভীড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন দোকানে।
এদিকে, অসংখ্য গ্রুপের কবলে পড়ে নতুন শিক্ষার্থীদের অবস্থা দিশেহারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, 'বুঝে উঠতে পারছি না, কী করবো? প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখছি দশ বারোটা গ্রুপের মেম্বার হয়ে গেছি। এখন ফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক খুলতেও ভয় লাগছে।'
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা যারা সময় কাটাতে ফেসবুকে আসি, তাদের জন্য সময়টা খুব কঠিন হয়ে গেছে। হোমপেইজ স্ক্রল করলেই দেখা যায়, একসাথে তিন-চারটা সাবজেক্টের ক্লাস চলছে।'
তিনি আরো বলেন, 'বাবা মা-ও এখন ফেসবুকে সময় দেয়ার জন্য খুব প্রেশার দিচ্ছেন। এবার এফসিপিএস পাশ না করলে বাসা থেকে বের করে দেবেন।'
এদিকে এ খবর শুনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ কলেজ ও ফিজিশিয়ান্স-এর একাধিক কর্তাব্যক্তি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, 'বিসিপিএস-এর শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি দেশের কোচিং খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, এটা জেনে আমরা অবাক!'
তিনি আরো বলেন, 'বিষয়টা নিয়ে আমরাও ভাবছি। হয়তো আগামীতে এফসিপিএস প্রথম পর্ব পরীক্ষা তিন দিনের বদলে চারদিন নেবো। চতুর্থ দিনের পরীক্ষাটি হবে কোচিং-এর উপর। কীভাবে গ্রুপ খুলবেন, কীভাবে গ্রুপে ইনভাইট করবেন, কীভাবে ক্যামেরার সামনে ক্লাস নেবেন ইত্যাদি বিষয়ে সিঙ্গেল বেস্ট এবং এমসিকিউ ভিত্তিক পরীক্ষা নিলে মন্দ হয় না।'
এ ব্যাপারে এক মেন্টরের সাথে যোগাযোগ করা হলে গ্রুপের লিংক দিয়ে মেন্টর বলেন, ‘ভাইয়া প্লিজ জয়েন করুন।‘
জবাবে এই প্রতিবেদক জানান তিনি একজন চারুকলার ছাত্র।
এ কথা শুনে মেন্টর বলেন, 'তাও জয়েন করেন। আপনি চারুকলায়ই থাকেন, প্রবলেম নাই। সাথে একটা এফসিপিএস পার্ট ওয়ানটাও থাকলো, খারাপ কী?'