ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা করতে চান এডভোকেট মামলারুল হোসেন

১৩৩৮ পঠিত ... ২০:৪১, নভেম্বর ০৪, ২০২১

nazrul-dhormobirodhi

বিভিন্ন মানুষের শখ বিভিন্ন রকম। কেউ গান শুনতে ভালোবাসেন, কেউ বাগান করতে ভালোবাসেন, কেউ রান্না করতে ভালোবাসেন, কেউবা আবার খেলতে ভালোবাসেন। তবে এবার সবরকম শখের ভেতর ব্যতিক্রমধর্মী শখ নিয়ে হাজির হলেন মামলারুল হোসেন নামের এক এডভোকেট। তার প্রিয় কাজ মানুষের নামে মামলা করা। 

এ ব্যাপারে মামরুল সাহেবের এক সাক্ষাৎকার নেওয়া হলে তিনি বলেন, 'জন্মের পর থেকেই আমার ভেতর তীক্ষ্ম অনুভূতি বিদ্যমান। চার বছর বয়সে আমার বাবা একটা খেলনা সেট কিনে দিতে রাজী না হওয়ায় শিশুনুভূতি থেকে তার নামে প্রথম মামলা করতে গেছিলাম। বয়স কম থাকায় আমার মামলা গ্রহণ না করলেও, সেটাই আমার প্রথম মামলা এক্সপেরিয়েন্স৷ ব্যাপারটা আসলেই অসাধারণ। একবার মামলা না করলে এর স্বাদ আপনি টের পাবেন না। আমার মন খারাপ থাকলে, কিংবা করার মতো কোন কাজ না থাকলে মামলা দিয়ে আসি...'

মামলারুল সাহেব জানান, সকল অনুভূতির ভেতর তার ধর্মানুভূতিটাই সবচেয়ে প্রখর। বাউল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ব্যান্ডদলের বিরদ্ধে ধর্মানুভূতির মামলা ঠুকে দেওয়ার পর নিজেকে বেশ কনফিডেন্ট মনে হয় বলে জানিয়েছেন এই অ্যাডভোকেট। পরবর্তীতে কার নামে মামলা দিতে চান এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 

সম্প্রতি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার কিছু লাইন নতুন করে আঘাত হেনেছে এই আইনজীবীর অনুভূতিতে। সাময়িক ব্যথা কমানোর জন্য একটি সারজেল ৪০ খেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ডেস্কটপে ‘আপকামিং মামলা’ নামে একটা ফোল্ডার আছে। সেখানে যাদের যাদের কথা মাথায় আসে নোট করে রাখি। আপাতত সবার উপরে আছে কাজী নজরুল ইসলাম। ওইদিন সকালবেলা নজরুলের এক বই খুলে দেখি এক কবিতা, নাম মনে হয় ‘সাম্যবাদী’।

সেখানে গোটাগোটা করে লেখা —

মিথ্যা শুনিনি ভাই, 

এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোন মন্দির কাবা নাই।। 

এই লাইন দেখে আমার মোটামুটি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে যাওয়ার অবস্থা। ব্যাটার সাহস দেখছেন। ওর হৃদয় নাকি মন্দির কাবার চেয়ে বড়!! আমার ধর্মানুভূতিরা পারলে তখন  ভিতর থেকে বাইরে চলে আসে। শরীরটা ঠিক হওয়ার পরেই মামলা করতে যাবো..ফাইজলামি পাইছে?'

জাতীয় কবির বিরুদ্ধে মামলা করাটা কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ হবে এমন প্রশ্ন করা হলে বেশ বিরক্তবোধ করেন তিনি৷ প্রশ্নকারীর মুখের উপর বলেন, 'শুধু একটা ভুল হইলে মানা যাইতো। অসংখ্য কবিতার মধ্যে আবোল-তাবোল লিখছে। ছেলের নাম ছিলো আমার কৃষ্ণ মুহাম্মদ। চিন্তা করা যায় কী আস্পর্ধা! এই লোক কেমনে জাতীয় কবি হয় আমার সন্দেহ আছে। নিশ্চয়ই লবিং টবিং ছিলো...'

এছাড়া তিনি আরও বলেন, 'মানিক বন্দোপাধ্যায় না কী জানি এক লোক আছে.. ওইযে গল্প উপন্যাস লেখে যে...সে আবার লিখছে —ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্র পল্লীতে... আবার পুতুলের নাচ না জানি কী একটা লেখছে! এই লোকের বিরুদ্ধেও মামলা করবো। খুব শীঘ্রই। আর দেশবাসীর কাছে আমার আবদার রইলো, আপনাদের চোখে যদি এমন কিছু পড়ে, অবশ্যই আমাকে জানাবেন। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, পথভ্রষ্ট লোকদের সতর্ক করার জন্য সৃষ্টিকর্তা মাঝেমাঝে পৃথিবীতে কিছু এজেন্ট পাঠান। তাদের কাঁধে থাকে গুরুদায়িত্ব। আমি তেমনই একজন। আমার নাম মামলারুল হোসেন.. পেশা—মামলা করা...'

[বি.দ্রঃ eআরকিতে প্রকাশিত প্রত্যেকটি সঙবাদই কাল্পনিক। এগুলো ভুলেও বিশ্বাস করবেন না, আবার অবিশ্বাসও করবেন না] 

১৩৩৮ পঠিত ... ২০:৪১, নভেম্বর ০৪, ২০২১

Top