বিউগলের করুণ সুরে বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিখিল বাংলাদেশ শরবত বানানো কমিটির সদস্যরা

৭৩৪ পঠিত ... ১৭:৩৯, মে ০৬, ২০২১

shorbot-biday

ইফতারের আগে আগের সময়টা এমনিতেও কেমন বিষণ্ণ। কিন্তু শরবত কারিগরদের চামুচ-জগের টুংটাং আওয়াজে এই সময়টা জুড়েও যেন উচ্ছ্বাসের শতরঙ ফুটে উঠে। রোজার শুরু থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে এই সময়টা জুড়ে। কিন্তু রোজার শেষের শুরুর এই সময়টায় যেন চারপাশে টুংটাং উচ্ছ্বাস মাখা সুরের বদলে বেজে যাচ্ছে বিউগলের করুণ সুর। শরবত বানানোর পাট যে চুকিয়ে আসছে। আর মাত্র অল্প কিছু দিন পরই যে নিখিল বাংলার শরবত কমিটির সদস্যরা নিজেদের চামুচ-জগ তুলে ফেলবে।

কমিটির পুরোনো সদস্য রায়হান। ১৩ বছর যাবত ৯ জনের পরিবারের শরবত বানানোর দায়িত্ব তার। এইবারের পর হয়তো চামুচ-জগ হাতেই নিবেন না তিনি। মনটা তাই একটু বেশিই খারাপ। কষ্ট লুকাতে না পেরে প্রতিদিনই কেঁদে যাচ্ছেন। শরবতে লাগছে না লবণ। নিজের চোখের নোনাজলেই বানাচ্ছেন শরবত। অনুভূতি জানতে চাইলে কান্নার জন্য কথাই বলতে পারেননি। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বললে তারা জানান, 'এজন্য এত কষ্টের কী আছে! আপনারা না আসলে তো জানতেই পারতাম না, শরবত ইদানিং এত লবণ বেশি কেন? আপনারা খালি যান, এরপর ওরে দেখতেছি।'

সদ্য শরবত কারিগর হিসেবে সেই শৈশবেই নাম লিখিয়েছেন লিজা। প্রতি রোজায় দিচ্ছেন সার্ভিস। ঈদ ঘনিয়ে আসায় মন খারাপ তারও। শরবত বানাতে বানাতে তিনি জানান, 'একটু খারাপ লাগছে। তবে ব্যাপার না। আমি ঠিক করেছি ঈদের পরও শরবত বানাবো। এবার মজা পায়া গেছি।'

যদিও লিজার এমন আকাংক্ষায় চিনি ছাড়া পানি ঢেলে দিয়েছেন লিজার বাবা। তিনি বললেন, 'কাউকে পাই না দেখে ওরে এই কাজ দিছি। মাত্র ২১ দিনে ও আমার ২১ কেজি চিনি শেষ করছে। ঈদের পরও শরবত বানাইলে চিনি কি ওর বাপে আইনা দিবো নাকি!'

৭৩৪ পঠিত ... ১৭:৩৯, মে ০৬, ২০২১

Top