আমি উৎসবপ্রিয় বাংলাদেশিদের আচরণে মুগ্ধ, বাকি জীবন এখানেই থাকতে চাই: করোনাভাইরাস

৪৬৩ পঠিত ... ১৮:৪৯, এপ্রিল ১১, ২০২১

Ami ekhanei thakbo (1)

জীবনানন্দ এই বাংলায় বারবার ফিরে আসতে চাইলেও, ফিরে আসাআসির অনিশ্চয়তায় পড়ে থাকতে চান না চীনা ভাইরাস করোনা। তিনি এই বাংলায় পাকাপাকিভাবে থেকে যেতে চান। উৎসবপ্রিয় এই বাংলাদেশিদের বড্ড ভালোবেসে ফেলেছে এই ভাইরাসটি।

করোনাভাইরাসের ভবিষ্যৎ গন্তব্য শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় এক জ্যেষ্ঠ করোনাভাইরাস মুচকি হাসি দিয়ে বলেন, ‘কোথায় যেন মুগ্ধতা, ভালোবাসার একটা অদৃশ্য মায়ার টান অনুভব করি এখানে। এখানকার মানুষগুলো যেন আমাদেরকে ভালোবাসার বন্ধনে বেঁধে ফেলেছে। এ যেন এক অদ্ভুত প্রেম, অদ্ভুত ভালোবাসা।’

ইতোমধ্যে পুরো পৃথিবীই ভ্রমণ করে ফেলেছে ভাইরাসটি। কোথাও বাংলাদেশের মত এমন করোনাবান্ধব অতিথিপরায়ণ দেশ পাননি বলে জানান তারা। সবাই কোন না কোনভাবে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। একমাত্র বাংলাদেশের মধ্যেই একটা ভাইরাস-ভ্রাতৃত্ব দেখলাম, এমনটা জানিয়ে অন্য এক জ্যেষ্ঠ ভাইরাস বলেন, ‘প্রথম যেবার এদেশে আসি। চিন্তায় ছিলাম, এয়ারপোর্ট দিয়ে ঢুকতে দিবে তো! পৃথিবীর যত দেশেই গিয়েছি, প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। কিন্তু এই দেশে হইনি। এয়ারপোর্ট দিয়ে কোন ধরণের বাঁধা ছাড়াই ঢুকে গিয়েছি। এরপর তো দেশটাই আমাদের হয়ে গেল। করোনা ফ্রেন্ডলি এমন এনভারমেন্ট আর সিস্টেম খুব একটা দেখিনি।

তবে কিছু ভয়ের কথাও জানান এক করোনাভাইরাস। তিনি বলেন, ‘প্রথমবার যখন আমাদের বাহকদেরকে কোয়ারেন্টিন করাবে শুনলাম, ভেবেছিলাম অন্ধকার ঘরেই চৌদ্দদিন পর জীবন শেষ। পরে দেখি প্রশাসন সবাইকে যার যার বাড়ি পাঠিয়ে দিলো। এরপর তো আমাদের আর কোন চিন্তাই থাকলো না।’

করোনা ও বাংলাদেশের এই বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ‘সীমিত পরিসর’ স্ট্রেটেজির প্রশংসা করেন করোনা ভাইরাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তারা বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে ‘সীমিত পরিসর’ স্ট্রেটেজি ব্যবহার করে আমাদেরকে বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে দেয়ার সুযোগ ইতিহাসে বিরল। সেই বিরল কাজটি করে বাংলাদেশ প্রশাসন প্রমাণ করেছে তারা আমাদের প্রকৃত বন্ধু।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেককে আলাদা করে ধন্যবাদ দিয়ে এক ভাইরাস বলেন, ‘উনি অত্যন্ত মহান, সজ্জন ব্যক্তি। সকল ধরণের সহযোগিতার পাশাপাশি তিনি নিজে যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আশেপাশে ৩৬ জন মানুষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আহ! এমনকি ওনার টিকা নেওয়ার দিনটির কথাও ভোলার নয়। আহা, একসাথে এত বাহক আমরা কক্সবাজার, বান্দরবানেও পাইনি।'

এক পর্যায়ে সমবেত কণ্ঠে সভাটিতে জীবনানন্দের বিখ্যাত একটি কবিতা আবৃত করা হয়। সে সময় জীবনানন্দের হ্যাংওভারে থাকা এক করোনা বলে, ‘আমরা অত তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না। এই দেশে আমাদের হেঁটে হেঁটে বাড়ানোর সুযোগ আছে। ক্লান্ত হয়ে গেলে বসে জিরিয়ে নেয়ার অবসরও আছে।’

৪৬৩ পঠিত ... ১৮:৪৯, এপ্রিল ১১, ২০২১

Top