করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় দেশে এক সপ্তাহের লকডাউন দিয়েছে সরকার। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ব্যস্তটা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। ঘরের প্রতিটি খাটের তলা খালি করতে পরিবারের সবাই মিলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা।
নতুন বরাদ্দ আসবে, তাই সেসব রাখার জায়গা প্রস্তুত করতে হবে। এর মধ্যে অনেক খাটের তলায় আগের বরাদ্দ জিনিস রয়ে গেছে, ওগুলো সরাতে হবে- এমন নানামুখী কাজে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পরিবারগুলো উৎসবমুখর পরিবেশে কাজ করে যাচ্ছে। কাজ করতে করতে ঘেমেনেয়ে একাকার এক চেয়ারম্যান বলেন, 'দেশের জন্য, মানুষের জন্য আমরা সবসময় নিবেদিত প্রাণ। সরকার চাল-ডাল দিলে ওগুলো যদি না রাখি, তা তো বেয়াদবি হয়ে যাবে। সেজন্যই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করছি। ঘরের কাজ শেষে আবার চাল রাখার জন্য পুকুর রেডি করতে হবে। ওখানে এখনো গত বছরের চাল পড়ে আছে।'
ঘাম মুছতে মুছতে তিনি বলেন, 'ঘাম শুকানোর আগেই মূল্য পরিশোধ করতে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে। লকডাউন চলে আসছে, এখনো ত্রাণ আসলো না! এগুলা কেমন সিস্টেম? এত দেরি করলে তো আবার এলাকার মানুষ, সাংবাদিকরা টের পেয়ে যাবে। আমাদের তো ওদিকেও খেয়াল রাখতে হয়। দেশে তো শান্তিমত ভালো কাজ করা যায় না ভাই।'
এক পর্যায়ে তিনি 'অই করিম, আশেপাশে সাংবাদিক আছে নাকি দেখ তো! পাইলে আমার গাবের লাঠিটা নিয়া আসিস।' বলে হুঙ্কার দিলে আমাদের প্রতিনিধি দ্রুত পালিয়ে যান।
কর্মতৎপর অন্য এক চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে গেলে ব্যস্ততার কারণে তিনি সময় দিতে পারেননি। জানা যায়, ত্রাণের নতুন তেল রাখার জন্য পুরোনো তেল সরিয়ে খাটের তলা পরিষ্কারে তিনি মহাব্যস্ত। পরে তার মেম্বার ছেলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, 'আব্বা অনেক ব্যস্ত। খাটের তলায় আগের বারের তেল রয়ে গেছে। সেই তেল রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। আব্বা ঠিক করেছে ওই তেল দিয়ে পরিবারের সবাই মিলে তৈলস্নান করবে। আব্বা আবার একদমই অপচয় পছন্দ করেন না।' একপর্যায়ে আমাদের প্রতিনিধিকেও তৈলস্নানের আমন্ত্রণ জানান এই মহানুভব চেয়ারম্যান-মেম্বার পরিবার।