পাশের বাসার ওয়াইফাই দিয়ে অনলাইনে ক্লাস করছেন এ যুগের বিদ্যাসাগর

৫৪৭ পঠিত ... ১৫:২৪, আগস্ট ২২, ২০২০

আগের সেই যুগ নেই। নেই কুপিবাতি, চাঁদের আলোতেও আগের মতো বইয়ের লেখা দেখা যায় না। স্ট্রিটলাইটের নিচে বসলে উদাস হয়ে যেতে ইচ্ছে হয়, গান গাইতে ইচ্ছে হয়, প্রেম করতে ইচ্ছে হয়; এত ইচ্ছের পর পড়ালেখার ইচ্ছে হওয়ার অবসর আর পাওয়া যায় না! বিদ্যাসাগর হওয়ার পথে এত এত বাধা; তাই বলে কি এ যুগে কেউ আর বিদ্যাসাগর জন্মাবে না!

এমন অনিশ্চয়তাকে ওয়াইফাই লাইন কেটে উড়িয়ে দিয়েছে এ যুগের পটেনশিয়াল বিদ্যাসাগররা। মডার্ন টাইম, মডার্ন স্ট্রাগল, মডার্ন মনীষী- এমন ভাবনাকে সামনে রেখে পাশের বাসার ওয়াইফাই দিয়ে অনলাইন ক্লাস করছে তাঁরা। কেউ হ্যাক করে, কেউ বা পাসওয়ার্ড চুরি করে আবার কেউ অনলাইন ক্লাস করবে বলে পাশের বাসার বড়ভাইয়ের কাছে হাত পেতে নিচ্ছে পাশের বাসার ওয়াইফাই।

তবে বেশিরভাগ মডার্ন বিদ্যাসাগরের বাসায় রিয়েল আইপির ওয়াইফাই থাকলেও শুধু ক্লাস করার ক্ষেত্রে তারা বেছে নিচ্ছে পাশের বাসার ওয়াইফাই। এর কারণ জানতে চাইলে এ যুগের এক বিদ্যাসাগর বলেন, 'সবসময় স্ট্রাগল থাকবে না, মনীষী হতে হলে স্ট্রাগল ক্রিয়েট করে নিতে হবে। সেজন্যই আমরা নিজের ওয়াইফাই দিয়ে অনলাইন ক্লাস করি না।'

কেউ কেউ একইসাথে বিদ্যাসাগর ও নজরুল হওয়ার পথেও আগাচ্ছেন। এমনই এক মাল্টিমনীষী বলেন, 'পাশের বাসার ওয়াইফাই দিয়া ক্লাস করি, ফলে লাইনে সমস্যার কথা বলে প্রায়ই ক্লাস ফাঁকি দেই আর নিজের রিয়েল আইপি দিয়ে লেটোগান শুনি। এ যুগে আপনাকে শুধু মনীষী হলে হবে না, হতে হবে মাল্টিমনীষী। যেটাকে বলে কম্বো প্যাক।'

দামোদর নদী পার হয়ে মায়ের সাথে দেখা করতে যাবেন কিনা, এমন প্রশ্ন করলে এই মাল্টিমনীষী বলেন, 'আবারো অ্যানালগ যুগে চইলা গেলেন। দামোদর নদী পাড়ি দেয়া লাগবে না। ভিকারুন্নিসার গার্লফ্রেন্ডের জুম আইডি নিয়ে রাখছি। ভার্চুয়াল সাঁতার কেটে ওখানে যাই। ক্লাস করি, প্রক্সি দেই। এইটাই আমার মনীষী স্কিল।'

শুধু মনীষী না, কেউ কেউ হতে চাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা। এমনই একজন বলেন, 'অনলাইন ক্লাসের জন্য সফটওয়্যার, ক্যামেরা, গ্রাফিক্স কার্ড, হাইস্পিড ইন্টারনেট, নতুন ল্যাপটপ, সিংগারা, খাতা-কলম বাবদ ১০ কোটি টাকা ব্যবসা করেছি। বড় হয়ে বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ নয়, আমি সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই।'

৫৪৭ পঠিত ... ১৫:২৪, আগস্ট ২২, ২০২০

Top