হচ্ছে হচ্ছে করেও হচ্ছিল না। অবশেষে করোনাকাল তাঁদের জীবনে প্রেম নিয়ে এল। যে অনলাইন ক্লাস নিয়ে ছিল রাজ্যের বিরক্তি, সেই অনলাইন ক্লাসের ফাঁকে চ্যাটিং করতে করতে প্রেম হয়ে গেল নোয়াখালীর নিব্বা-নিব্বির। এ উপলক্ষে তাঁরা মিষ্টি বিতরণের অনলাইন ইভেন্ট খুলেছেন। করোনা শেষ হলে নোয়াখালীর পাশাপাশি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় মিষ্টি বিতরণ করা হবে।
প্রেম শব্দটা শুনে প্রথমেই আমাদের এক প্রতিবেদকের (মানে এই রিপোর্টেরই প্রতিবেদক আর কি) বুকে হাহাকার জেগে ওঠে। নিজে প্রেমে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলে নতুন প্রেমের গল্প শুনলেই তিনি সচরাচর ঝাপিয়ে পড়েন। খবর সংগ্রহ করতে তাই মোবাইলে ম্যাসেঞ্জার অন করে নিজ আগ্রহেই এগিয়ে যান তিনি।
নোয়াখালীর নিব্বা-নিব্বিকে ম্যাসেঞ্জারে এক্টিভ দেখালেও দীর্ঘক্ষণ কোনো রিপ্লাই পাওয়া যায়নি। ধারণা করা যায়, তারা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করছেন। অতঃপর টানা এক সপ্তাহ নক দিতে থাকার পর তাদেরকে পাওয়া গেল।
প্রথমে কথা শুরু করলেন নোয়াখালীর নিব্বি। ফোনে সাত টাকা মিনিট কলচার্জ এমন ভঙ্গিতে ঝড়ের গতিতে তিনি বলেন, 'জানেন ভাইয়া আমি মানত করেছিলাম, খোদা অনেক তো কষ্ট দিলা। এবার একটু প্রেমের মুখ দেখাও। আমার জন্য একটা কিউট রনবীর কাপুর টাইপ বয়ফ্রেন্ড পাঠাও। আমি ভালোবাসা দিয়ে ওকে রনবীর সিং করে তুলব। অবশেষে খোদা আমার কথা শুনল।'
কিভাবে প্রেম হলো জানতে চাইলে নোয়াখালীর নিব্বা বলেন, 'আর বলবেন না। বিরক্তিকর অনলাইন ক্লাস। আমি হইলাম ব্র্যান্ডেড ব্যাকবেঞ্চার। এমনিতেই ক্লাসে মোবাইলে গুতাই। আর আমারে করতে কয় অনলাইন ক্লাস। স্যারের মতো স্যার ক্লাস নেয়। আমি ক্লাসে এটেনডেন্স দিয়ে সুন্দর ওর সাথে চ্যাটিং করতাম। বিরক্তি থেকে চ্যাটিং শুরু করে আস্ত একটা প্রেম করে ফেললাম।'
প্রেমের জন্য আসল ক্লাসের চেয়ে অনলাইন ক্লাসই ভালো, এমন মতামত জানিয়ে নিব্বি আরও যোগ করলেন, 'আসল ক্লাসে তো কথা বলতেই থাকা যায় না। এদিকে অনলাইন ক্লাসে আপনি ভিডিও অফ করে মিউট করে নিজেরা আলাদা ভিডিও কলেও প্রেম করতে পারবেন। এমনকি একটা না, একসাথে চার পাঁচটা প্রেম করাও কোনো ব্যাপার না।’
এই পর্যায়ে নোয়াখালীর নিব্বা একটু ইনসিকিউওর হয়ে স্ট্রেইট্ট ফেসের ইমো দিলেও আমাদের প্রতিবেদক খুশি খুশি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন এবং ইমোটি ইগনোর করেন।
এদিকে নিব্বার কাছে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘ভিডিও অফ রাখায় কোনটা যে কে বুঝতে পারছিলাম না। তাই সুমি ভেবে রুমির সাথে চ্যাট করতে করতে প্রেম হয়ে গেলো। এদিকে ইদানিং ক্লাসে সুমিও নক দেয়। অনলাইন ক্লাস বলেই সামলাতে পারছি। আসল ক্লাসে দুজন একসাথে নক দিলে কি যে হতো!’
এছাড়াও নিব্বা-নিব্বি যৌথ মোটিভেশনাল বিবৃতিতে বলেন, 'তোমাদের যাদের প্রেম হচ্ছে না, কোনোভাবে হতাশ হবে না। ক্যাম্পাস বন্ধ তাতে কী! নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করো। নেভার স্টপ প্রেমিং।'