১০ হাজার টাকা দিয়ে বটি কেনা কর্মকর্তাকে বাসায় ঢুকতে দিচ্ছে না গিন্নী

১৬৭৩ পঠিত ... ১৬:৫৫, জুলাই ২০, ২০২০

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রথম শ্রেণির এক কর্মকর্তা গত দুইদিন যাবত ফুটপাতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘুমাচ্ছেন বাস্তুহারাদের সাথে। রয়েছেন করোনা ঝুঁকির মধ্যে। এতদিন ধরে কামাই রোজগার করে যে বউকে তুমুল সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন, সেই বউ নাকি বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন তাকে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে খোঁজ নিলে বের হয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু একজন না, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি প্রজেক্টের সাথে যুক্ত থাকা বেশিরভাগ কর্মকর্তাই এমন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কাউকে গিন্নী বাসা থেকে বের করে দিয়েছে, কাউকে নিজের গর্ভধারিণী মা-ই বাসায় ঢুকতে দিচ্ছে না।

খবর নিয়ে জানা যায়, এইসব কর্মকর্তারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি প্রজেক্টের জন্য ৩০০০ হাজার টাকা দামের বটি ১০০০০ টাকায়, ৪০০ টাকার মশলার বাটি ২০০০ টাকায় ও ২৫০ টাকার চা-চামুচ কিনছেন ১০০০ টাকায়। ২৫ হাজার টাকা দামের চেয়ার ৫০ হাজার টাকায়, ৫০ হাজার টাকার ল্যাপটপ দেড় লাখ টাকায় ও ১ লাখ টাকার এসি কিনছেন ২ লাখ টাকায়।

এভাবে বেশি দাম দিয়ে এই প্রজেক্টের আওতায় ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার কেনাকাটা করার একটি প্রস্তাব একনেকে অনুমোদনও পেয়েছে।

এমন খবর প্রকাশের পরই নাকি ক্ষেপেছেন ওইসব কর্মকর্তাদের মা-বউরা। এমনই একজনের বউ eআরকিকে জানান, 'আমি হওয়ায় এই বলদের লগে সংসার করে যাচ্ছি। অন্য কেউ হলে কবে একে বাসা থেকে বের করে দিতো। আপনারাই বলেন, একটা বলদ ছাড়া কেউ ১০০০০ টাকা দিয়ে মাছ কাটার বটি কিনে?'

কাঁদতে কাঁদতে জনৈক গিন্নী আরো বলেন, 'আমার জন্য শাড়ি, গয়না কিনে। কয় দাম নাকি ৩০ হাজার, ৪০ হাজার। কিন্তু বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভাবিদের কাছে শুনি তারা নাকি একই ডিজাইনের শাড়ি-গয়না ৩-৪ হাজারে কিনে। এই বলদ ব্যাটার কারণে কতবার যে কত জায়গায় অপমান হয়েছি বলে শেষ করা যাবে না।'

চোখমুখ শক্ত করে অন্য একজনের বউ বলেন, 'এইসব বলদের অফিসও করার দরকার নাই। আমরা করবো। দরদাম কইরা ক্যামনে কেনাকাটা করতে হয় দেখাইয়া দিবো। আমি এই বটি ১০০ টাকায় কিনতাম!'

অন্য এক কর্মকর্তার মাও বেশ ক্ষেপেছেন। কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে তিনি বলেন, 'সামান্য মশলার বয়াম কেউ ২ হাজার টাকায় কিনে? ফ্রিজে দুনিয়ার বয়াম পইড়া আছে। বললে তো আমিই বয়াম দিয়া দিতে পারতাম। তাছাড়া আইসক্রিম কিনলে এমনিতেই বয়াম পাওয়া যায়। এই পোলা ছোটবেলা থেইকা আমারে জ্বালাইতেছে, এহন দেশটারেও খাইতেছে। আর কত বড় হইলে আমার পোলাটার বুদ্ধি হইবো বলেন তো!'

তবে এই কর্মকর্তার বাবা বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, 'এই পোলা তো বলদ না! চোর! ছোটবেলা থেকেই। ওর মায়েরে বললে তো কষ্ট পাবে, আপনাদেরকেই বলি। আলুর কেজি যখন ১০ টাকা ছিল, তখনও ওরে বাজারে পাঠাইলে আইসা বলতো কেজি ৩০ টাকা রাখছে। যাই হোক, এইটা আবার ছাপায়া দিয়েন না...' 

১৬৭৩ পঠিত ... ১৬:৫৫, জুলাই ২০, ২০২০

Top