বর্ষাকাল চলে আসলেও অনেক ধীর গতিতে চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, মাটি কাটা সহ নানা সরকারি বেসরকারি কাজ। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ও মাটি কাটার এমন স্লথ গতি নিয়ে ওয়াসা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষই হতাশা ব্যক্ত করেছেন । রাগ ঝাড়ছেন শ্রমিকদের উপর। শ্রমিকরাও স্বীকার করে নিয়েছেন এই দায়। আশেপাশে দর্শকের ভিড় না থাকায় কাজের গতি এমন ধীর হয়ে গেছে বলেও জানান তারা।
কোদাল পাশে রেখে বিষণ্ণ চেহারা নিয়ে বসে থাকা একজন শ্রমিক আমাদের বলেন, 'আশেপাশে মানুষ না দেখলে শইল্লে বল পাই না। সব কাজেরই তো একটা জোশ লাগে, উৎসাহ লাগে। যেইটারে আপনারা কন মোটিভেশন। ওইটা নাই আসলে। হেরলাইগা কাজ আগাইতে চায় না।'
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এই শ্রমিক আরো বলেন, 'ফাঁকা মাঠে খেলার কষ্ট, ফাঁকা মাঠে কনসার্ট করার কষ্ট আর ফাঁকা রাস্তায় মাটি কাটার চ্যালেঞ্জ, কষ্ট আপনারা বুঝবেন না।'
রাস্তার দিকে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা অন্য এক শ্রমিক বলেন, 'হেরা আসে। দেখে। গল্প গুজব করে। ওইগুলাতে তো বল আছেই। তার উপ্রে ধরেন, মাঝে মাঝে নির্দেশনা দেয়া। 'ভাই, এমনে কাটেন, ওমনে কাটেন, এদিক দিয়া কাটেন, ওদিক দিয়া কাটেন, ঘুরায়ে কোপ দেন, ফিরায়ে কোপ দেন' এই কথাগুলো আমাদের কানে আসার সাথে সাথে শরীর ছাইড়া দিয়া কোদাল অটো উঠানামা করতো।'
কোদাল রেখে চলে যেতে যেতে ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করে একজন বলেন, 'মনডা ভালা না। এই বছর মনে হয় সব রাস্তা খুঁড়তে পারুম না। দর্শক লাগবো। আপনার যদি একজনও ফলোয়ার না থাকে, আপনি কি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে পারবেন? বুকে হাত দিয়া বলেন...'
এই স্লথ গতি নিয়ে ওয়াসার এক কর্মকর্তাও বললেন, 'এভাবে চললে আসলেই দেশের সব রাস্তা এই বছর খোড়া যাবে না। এইটা আমাদের জন্যও হতাশার। রাস্তা না খুড়লে আমাদের তো আর কাজকাম নাই।'
এই সমস্যা সমাধানে মাটিকাটা দর্শকদের জন্য ভিড় করে মাটিকাটা দেখার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার কথাও বলেন এই কর্মকর্তা।