বিদ্যুৎ বিল মিটারের হিসাবে না আসায় উল্লসিত সিএনজিওয়ালারা

৪৫৫ পঠিত ... ২০:০২, জুন ১৬, ২০২০

মিটারে যাওয়ার কথা শুনলেই সিএনজি চালকদের মেজাজ গরম হয়ে যায়। যাত্রীরা তবু নাছোড়বান্দা। রাগ দেখিয়ে তারা বলে, 'দেশের সবকিছু চলছে মিটারে আর তোমরা বাপু কোন লাটসাহেব যে মিটারে যেতে চাচ্ছো না?' সিএনজিওয়ালাদের রাগ তখন আরো বেড়ে যায়। উত্তরে তারা কোনো যুতসই লজিকও দেখাতে পারতো না এতদিন।

তবে এবার যেন লজিকের সাথে নিজেদের মেলায় হারিয়ে যাওয়া সহোদরকে খুঁজে পেলো সিএনজিওয়ালারা। যার নাম বিদ্যুৎ বিভাগ। তারাও আজকাল মিটারের ধার ধারছে না। আজকাল মিটার ছেড়ে অনেক দূরে তাদের বসবাস।

ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা শাহনাজ পারভীনের প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ১০০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু লকডাউনের কারণে দুইমাস পরে যে বিল এসেছে, তাতে তার প্রতিমাসের বিল এসেছে দেড় হাজার টাকা করে। অথচ তার বাসায় ফ্রিজ আর টিভি, কয়েকটি ফ্যান ছাড়া অন্যকোন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নেই।

আরেকজন বাসিন্দা ফারহানা মিলি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, 'ঢাকা শহরে একুশ বছর ধরে বাসা ভাড়া করে থাকছি-- এত টাকার ইলেক্ট্রিসিটি বিল চোখে দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি। ‍দু'মাসের জন্য ১১,১২০ টাকা-- গড়ে প্রতি মাসে পৌনে ছয় হাজার টাকা। কীভাবে সম্ভব! (সূত্র: বিবিসি)

ফারহানা মিলির এই প্রশ্নটি নিয়ে আমরা সিএনজিতে ভাড়া করে বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসে যাই৷ সেখানে মিটারের ব্যাপারে জানতে চাইলে অনেকেই মিটার কি জিনিস চিনতে পারেন নি৷ তবে ওই অফিসের জনৈক জনদরদী কর্মকর্তা আমাদের একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বলেন, 'আপনেরে অফিসে ঘোরাঘুরি করতে দেখতেছি। ঘটনা কী? সমস্যা থাকলে আমাকে বলেন। সমাধান হয়ে যাবে। শুধু মিটার থেকে কয়েক হাজার টাকা বাড়ায়া দিয়েন।' বলেই তিনি একটি চোখ টিপ দিলেন।

অন্যদিকে মিটারের হিসাবে বিদ্যুৎ বিল না আসায় আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছেন সিএনজিওয়ালারা৷ উল্লাস প্রকাশ করে জনৈক সিএনজিওয়ালা বলেন, 'মিটার একখান বেহুদা জিনিস। এইটা বিদ্যুৎ অফিসও বুঝতে পারছে দেইখা ভাল লাগতেছে। আমরা অহন দলে ভারি হইলাম।'

ঠিক তখনই বিদ্যুৎ অফিসের একজন কর্মচারী এসে ওই সিএনজি চালককে মিটারে যেতে বলায় চালক অভিমানী কন্ঠে বলেন, 'এইটা কেমুন কথা কইলেন ভাইজান। আপনেরাও মিটারে চলেন না। আমরাও চলি না। আমরা হইলাম ভাই-ভাই। আপনে উঠেন পিছে৷ আপনেরে ফ্রি রাইড দিমু।' বলেই ভোঁ করে টান দিলেন তিনি।

৪৫৫ পঠিত ... ২০:০২, জুন ১৬, ২০২০

Top