বহুদিন পর বিজয় সরণির জ্যাম দেখে আবেগে কেঁদে ফেললো মিরপুরের এক ভাই

৪৫৭ পঠিত ... ২১:১৯, জুন ০৩, ২০২০

দিনের পর দিন বিজয় সরণির জ্যামে বসে থাকতে থাকতে এই জ্যামের সাথে ঢাকা শহরের বেশিরভাগ মানুষেরই একটা আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। লকডাউনের কারণে দীর্ঘ ২ মাসেরও বেশি সময় বিজয় সরণির জ্যামের সাথে সময় কাটাতে না পেরে নিয়মিত বিরতিতে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি স্মৃতিকাতরতায় লাকডাউন কাটিয়েছেন মিরপুরের এক ভাই। বিজয় সরণির জ্যামের সাথে এই দীর্ঘ বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পেরে লকডাউন খোলার সাথে সাথেই তিনি বিজয় সরণি চলে আসেন। সেই পরিচিত বাম্পার টু বাম্পার চতুর্মুখী জ্যামের বিজয় সরণি দেখে নস্টালজিয়ায় ঘন্টাখানেক রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদেন তিনি।

কাঁদতে কাঁদতেই তিনি আমাদের বলেন, 'আহা! কতদিন পর সেই পরিচিত দৃশ্য। চতুর্মুখি গাড়ির লম্বা লাইন, হর্ণ, সিগন্যালের লাল-হলুদ বাতি! এ যেন চোখের, মনের, মস্তিষ্কের শান্তি। লকডাউনে থাকতে থাকতে ডিপ্রেশনে চলে গেছিলাম। এইসব দেখে আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছি। কখনও ভাবিনি বিজয় সরণির প্রিয় জ্যাম আবারও ফিরে পাবো!'

প্রাণভরে বিজয় সরণির জ্যামের স্বাদ নিতে চাওয়ার আশা ব্যক্ত করি তিনি আরো বলেন, 'চারদিকের গাড়িগুলোতেই উঠতেছি। জ্যামে বসে জাহাঙ্গীর গেট থেকে একবার ফার্মগেট যাচ্ছি, ফার্মগেট থেকে আবার জাহাঙ্গীর গেট যাচ্ছি। এভাবে চারদিকের জ্যামে বসেই সময় কাটানোর ইচ্ছা আজ। প্রতিবারই দুইবার করে সিগন্যালে পড়তেছি। তবে ৩-৪ বার করে পড়তে পারলে ভালো লাগতো। এত আবেগ লাগতেছে ভাই, এক প্যাকেট পাউরুটি কিনে যদি এই জ্যাম দিয়ে মাখায়ে খেয়ে ফেলতে পারতাম!'

চোখের জল মুচে মুচকি হাসিতে স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে তিনি আরো বলেন, এই বিজয় সরণির জ্যামে বসে বছরের পর বছর 'ওয়ার্ক ফ্রম জ্যাম' মডেলে কাজ করেছি আমি। একসময় এমন অবস্থা হয়েছে আমি বিজয় সরণির জ্যাম ছাড়া কোন কাজই করতে পারতাম না। বিশ্বাস করবেন কি না জানিনা, এই জ্যাম না থাকায় 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' মডেলে আমি একদমই মানাতে পারিনি। অফিসে আবেদনও করেছি, বাকি জীবন আমি ফুলটাইম 'ওয়ার্ক ফ্রম বিজয় সরণির জ্যাম' মডেলে কাজ করতে চাই।

৪৫৭ পঠিত ... ২১:১৯, জুন ০৩, ২০২০

Top