কোয়ারেন্টিনের ১৩তম দিনে ঘরে বসে রকেট বানিয়ে ফেললেন বাংলাদেশি যুবক

৯৫৪ পঠিত ... ০৬:২৯, এপ্রিল ০২, ২০২০

কোয়ারেন্টিনের ঘরবন্দি সময়কে কাজে লাগানোর এক অসাধারণ নজির স্থাপন করলেন এক বাংলাদেশি যুবক। এইসব বেকার দিনে বেকার বসে না থেকে ইউটিউব টিউটরিয়াল দেখে দেখে নিজেই বানিয়ে ফেললেন নিজের ব্যক্তিগত একটি রকেট।

কোয়ারেন্টিনে মানুষ অনেক মজার মজার কাজ করছে। কেউ কেউ ফেসবুকের নানান গেম-ট্রেন্ডে সময় কাটাচ্ছে। আপনি রকেট কেন বানাতে গেলেন? জানতে চাইলে এই যুবক জানান, 'আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিলো একটা রকেট বানাবো। নানান ব্যস্ততায় শুরু করা হচ্ছিলো না। অবশেষে করোনাভাইরাসের বদৌলতে সুযোগটা পেয়ে গেলাম। তাছাড়া আমি চেয়েছিলাম, দেশকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো আলাদা কিছু একটা করতে।'

কিন্তু আপনি যা করেছেন তাতো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো কাজ; আমাদের এমন প্রশংসায় তিনি বলেন, 'আসলে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে এটা হতো না। ঘরে বসে থাকা নিয়ে সবার মনেই অনেক শোক, আমারও প্রচুর শোক ছিল। এতটাই শোক ছিল, ভাবলাম সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করলে সেই শক্তি দিয়ে একটা রকেট চালানো সম্ভব। আর তারপরই কাজে নেমে পড়া!'

সফল এই 'রকেট জার্নি'র ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কোয়ারেন্টিনের প্রথম দিন থেকেই দিনরাত শুয়ে শুয়ে ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখা শুরু করি। এরপর শুরু করি রকেটের কাজ। অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৪ দিনের মাথায়ই নিজের আস্ত একটা রকেট দাঁড় করিয়ে ফেলতে পেরেছি।'

চাইলে যে কেউই রকেট বানাতে পারে এমন মোটিভেশন দিয়ে তিনি আরও বলেন, 'যারা কোয়ারেন্টাইনের এই সময়কে অর্থপূর্ণ করে তুলতে চাও অথচ কী করে করবে বুঝতে পারছো না, তোমরা চাইলেই পারবে। জাস্ট এগিয়ে যাও প্যাশন নিয়ে। ইটস নট এ রকেট সাইন্স!'

অনুপ্রেরণাদানের জন্য তিনি, কোভিড ১৯ ডিজিজ, পরিবারের সদস্য ও রকেট গতিতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা আইইডিসিআর এবং বাংলাদেশ সরকারকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও পৃথিবী একেবারেই আর বাসযোগ্য নেই এমনটা দাবি করে তিনি আইয়ুব বাচ্চুর মতো গেয়ে ওঠেন, 'আরও বেশি কাঁদালে, উড়াল দেবো আকাশে...'।

রকেট আবিষ্কারক এই যুবকের এমন কৃতিত্বে বেশ গর্ববোধ করছেন যুবকের ভাই-ব্রাদার ও পরিবারের লোকেরা। যুবকের এক বড় ভাই বলেন, ওকে নিয়ে আমার সবসময় উচ্চাশা ছিলো। জানতাম ও একদিন এমন উচুতেই উঠবে। উপরের দিকেই ওর নজর থাকবে।

তবে কেউ কেউ রকেটের এই প্যাটার্নের সমালোচনাও করেছেন। এমনি একজন বলেন, এমন কাগজের রকেট অনেক আগেই ডাচ-বাংলা ব্যাংক বানিয়ে ফেলেছে। এই ভদ্রলোক তাদেরকে কপি করেছে। মানুষকে ধোঁকা না দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। এদিকে রকেটে থাকা পতাকার লাল বৃত্ত ঠিক জায়গায় না বসায় অনুমোদন না দেয়ার বিষয়ে হুমকিও দেন একজন সরকারি কর্মকর্তা।

তবে মাত্র ১৪ দিনে রকেট আবিষ্কারের খবরে অনেকের কাছ থেকেই বাণিজ্যিকভাবে আরো বেশি বেশি রকেট বানানোর প্রস্তাব পান তিনি। স্পেসে রাইড শেয়ার চালু করতে চাওয়া একটি কোম্পানির জন্য রকেটের অর্ডার অলরেডি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য, সেম ডিজাইনের অন্য কালারের কিছু রকেটের অর্ডারও দেন একজন। এই রকেট পরিবেশবান্ধব কিনা জানতে চেয়ে একজন বলেন, 'পরিবেশবান্ধব হলে আমার ১০০টা সিএনজিএর জন্য ১০০ টা রকেট অর্ডার করবো।'

তবে করোনাভাইরাস মহামারিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে আপাতত কোন ধরণের নগদ লেনদেন করছেন না তিনি। লেনদেন সংক্রান্ত সব ডিলই করছেন বিকাশের মাধ্যমে। আমাদেরকেও তিনি এই ইন্টারভিউ বিকাশের মাধ্যমেই দিয়েছেন।

৯৫৪ পঠিত ... ০৬:২৯, এপ্রিল ০২, ২০২০

Top