প্রেমের টানে চীনের মেয়ে বাংলাদেশে, ফিরিয়ে দিলেন নোয়াখালীর কাশেম

৮৩৮৬ পঠিত ... ১৮:৪৪, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০

প্রেম মানে না ধর্ম, বর্ণ, স্থান, কাল, সিনিয়র, জুনিয়র কিছুই। সাম্প্রতিক সময়ে প্রেমিক-প্রেমিকা আমদানিতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সাফল্য যেন প্রচলিত এই ধারণাকে ইউনিভার্সাল ট্রুথে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েদের (বিশেষ করে ছেলেদের!) প্রেমের টানে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ইতোমধ্যে প্রেমিক-প্রেমিকারা এদেশে চলে এসেছে। তবে এবার ঘটেছে সম্পূর্ণ বিপরীত এক ঘটনা।

প্রেম ধর্ম, বর্ণ না মানলেও মানে রোগ-শোক; সম্প্রতি এক চীনা নারীর অভিযোগ এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নোয়াখালীর কাশেমের সাথে প্রায় ১ বছরের মতো তার প্রেমের সম্পর্ক। ফেসবুকের পরিচয়ের ৩ মাসের মাথাতেই তাদের পরিচয় প্রণয়ে পৌঁছায়। অতঃপর বাংলাদেশের ছেলেদের প্রেমের টানের উপর বিশ্বাস রেখে নোয়াখালীর কাশেমের প্রেমের টানে গত পরশু চীন থেকে লুকিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন এই চীনা তরুণী! তবে বাংলাদেশে এসে চীনা তরুণী যোগাযোগের চেষ্টা করলে কাশেম তাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং আবারো চীনে ফিরে যেতে বলে। এমন ভয়ানক প্রতারণা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না চীন থেকে আগত এই নারী।

কান্নায় ভেঙে পড়ে চীনা তরুণী ভুং চুং কি eআরকিকে জানান (চীনা থেকে অনুদিত), 'বাংলাদেশের ছেলে হয়েও কাশেম এতটা হৃদয়হীন প্রতারক হবে এটা আমি কোনদিনও ভাবিনি। প্রণয়ের পর বিয়ের ব্যাপারে আমাদের কথা হয়েছিলো। গত মাসের প্রথম দিকে ও নিজেই আমাকে বলেছে বাংলাদেশে চলে আসতে। গতবছরও অনেক করে বলেছে। সেজন্যই আমার আসা। অথচ এখন ও কারো সামনে মুখ তো খুলছেই না, এমনকি মুখ থেকে মাস্কও খুলছে না।'

কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি আরও বলেন, 'এক বছর ধরে আমাদের প্রেম। চীনে ফেসবুক নেই, তবু কাশেমের জন্য আমি ভিপিএন দিয়ে ফেসবুক চালাই। আমার মনের ফেসবুকে ও-ই ছিল জাকারবার্গ। কত রোমান্টিক বাংলা গান লিখে পাঠাতো ও আমার জন্য, চীনই গো চীনই তোমারে ওগো বিদেশিনী... আর আজ সে আমাকে বললো, চায়না মেয়ে তুমি অন্য কারো হও!'

এই পর্যায়ে তিনি কান্নায় আরও একবার ভেঙে পড়েন।

চীনা এই তরুণীকে ফিরিয়ে দেয়ার পেছনে কি করোনা ভাইরাসই কোন প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে কি না জানতে চাওয়ার জন্য আমরা নোয়াখালীর কাশেমকে খুঁজে বের করি। সরাসরি দেখা করতে চাইলে তিনি আমাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করেন। অতঃপর ভিডিও কলে তাকে মাস্ক পরে উপস্থিত হতে দেখা যায়। করুণ মুখে তিনি জানান (নোয়াখাইল্লা থেকে অনুদিত), 'ভাই চ্যাট করতেও ভয় লাগে। গত এক মাস ধইরা মাস্ক পইরা চ্যাট করি। তাও কেমন যেন কাশি কাশি লাগে। ছোটবেলা থেইকা কাশিটা একটু বেশি বইলা নাম রাখছে কাশেম। এই অবস্থায় এত বড় রিস্ক আমি কেমনে নেই বলেন? আমি যদি নেইও, আমার বাসায় তো ওকে মেনে নেবে না।'

বাসায় না মেনে নিলে কী হয়েছে? আপনি মেয়েটার সাথে চীনে চলে যান? এমন প্রশ্ন করলে কাশেম আতঙ্কিত হয়ে কাশতে শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে কলটি কেটে দেন।

ওদিকে কাশেমের নামে প্রতারণার মামলা করবেন কিনা, এমনটা জানতে চাইলে ভুং চুং কি জানান, 'মামলা করতে হলে এয়ারপোর্ট থেকে বের হতে হবে। আমাকে তো এয়ারপোর্ট থেকেই বেরোতে দিচ্ছে না।'

তবে এত বড় প্রতারণার শিকার হয়েও কাশেমকে ঘৃণা করতে পারছেন না এই চীনা তরুণী। কাশেমের উদ্দেশে কিছু বলতে চান কিনা, এমনটা জানতে চাইলে তাই তবুও হেসে বললেন, 'করোনা করে হলেও, চিঠি দিও।'

৮৩৮৬ পঠিত ... ১৮:৪৪, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০

Top