ছাত্রদের 'গেস্টরুম করানো'র সুবিধার্থে প্রতি হলে ৫টি করে গেস্টরুম চায় ঢাবি ছাত্রলীগ

৫৮০ পঠিত ... ২১:১৯, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০

নবীন শিক্ষার্থীদের ম্যানার শেখানোর উদ্দেশ্যে ‘গেস্টরুম করানো’ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে গতকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে। তবে এই হাতাহাতি ‘গেস্টরুম করানো’র পক্ষ শক্তি ও ‘গেস্টরুম করানো’র বিপক্ষ শক্তির মাঝে হয়নি। হাতাহাতি করা দুই দলই ‘গেস্টরুম করানো’র জন্যই হাতাহাতি করেছেন।

ছাত্রলীগের লেখক ভট্টাচার্যের গ্রুপের কর্মীরা সাধারণত রাত ৮ টার দিকে গেস্টরুম করালেও সোমবার রাতে তারা রাত ১০ টায় গেস্টরুম করাতে যান। কিন্তু রুটিন অনুযায়ী রাত ১০ টায় ‘গেস্টরুম করানো’র কথা ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের গ্রুপের নেতাকর্মীদের। লেখকের গ্রুপের নেতাকর্মীদের ম্যানার ভেঙ্গে ম্যানার শেখাতে আসাটা একেবারেই পছন্দ হয়নি আল নাহিয়ান খান জয়ের গ্রুপের নেতাকর্মীদের। ফলে তারা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আর এই থেকেই হাতাহাতি। এক পর্যায়ে লেখকের অনুসারীরা রড ও স্ট্যাম্প নিয়ে সংঘর্ষেরও প্রস্তুতি নেন। খবর: প্রথম আলো।

গেস্টরুম করানোর জন্য রুম সংকটের আশু সমাধান আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতি হলে ৫টি করে গেস্টরুম রাখার দাবি তোলেন। তাদের বক্তব্য, পর্যাপ্ত পরিমাণ গেস্টরুম না থাকলে ছেলেপেলেদের ম্যানার শেখানো যাবে না। আর ম্যানার শেখাতে না পারলে নিজেদের ভেতরের ম্যানার ফুলেফেঁপে মাঝে মাঝে বড়ভাইদের কিছু বাজে ম্যানার সামনে চলে আসবে, এই ব্যাপারটি মোটেও মেনে নিতে পারছেন না ঢাবি ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।

ছাত্রলীগের এই দাবির খবর সংগ্রহ করার জন্য ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কাছ থেকে ম্যানার শেখা eআরকির এক প্রতিনিধিকে পাঠানো হয়। ছাত্রলীগের এক কর্মী আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, 'শইল্লে গেস্টরুম করার জোস-জস লইয়া আইসা যদি দেখি গেস্টরুমে অন্য কেউ গেস্টরুম করাইতেছে তখন কেমন লাগে কন? শইল্লে থেইকা জোস চইলা গেলে তো খেইলা মজা পাওন যায় না! হেল্লিগা একটু ঝামেলা হইয়া গেছিলো! হলে হলে ৫ থেকে ৭ টা গেস্টরুমের ব্যবস্থা না করাইলে এই সমস্যার সমাধান হইবো না। ছাত্রলীগের গ্রুপ ১০টা, অথচ একটাই গেস্টরুম। কেমনে পোষাইব বলেন?'

আপনারা তো একই দলের লোক, গেস্টরুম সবাই একসাথে করাইলে হয় না? আমাদের প্রতিনিধির এমন প্রশ্নে অন্য এক নেতাকর্মী জানান, 'এক দল হইলেও ভাই তো মিয়া আলাদা! ভাইগোর ভাষাও আলাদা। আলাদা আলাদা ভাইয়ের জন্য আলাদা আলাদা ম্যানার শেখাইতে হয়। আমাদের গ্রুপের গেস্টরুম করার সিস্টেম একরকম, অন্য গ্রুপের গেস্টরুমের সিস্টেম অন্য। ইট ভ্যারিজ ফ্রম ভাই টু ভাই।'

শুধু গেস্টরুম করানোর জন্য প্রতি হলে ৫টা গেস্টরুম বেশি হয়ে যায় না? তাছাড়া এতগুলা গেস্টরুম দিলে ছাত্ররা থাকবে কোথায়? জানতে চাই আমরা। এই কর্মী বলেন, 'সভাপতি থেইকা শুরু কইরা কমিটির সব ভাইয়ের আলাদা আলাদা গ্রুপ, এরপর মনে করেন ক্যাম্পাসের কমিটির ভাইয়েরা আছে, এরপর আসেন হলের দিকে। ৫টায় হইবো মিয়া? ভালোভাবে গেস্টরুম করানোর জন্য হল প্রতি ২০-৩০ টা গেস্টরুম দরকার। তাছাড়া পোলাপানতো থাকবোই গেস্টরুম করানো আর ম্যানার শেখানোর উপ্রে। আলাদা কইরা থাকার জায়গার আর কোন দরকার আছে?'

এ পর্যায়ে তার পাশে দাঁড়ানো এক সহমত ভাই সহমত প্রকাশ করে বলেন, 'ভাই, গেস্টরুমই কিন্তু জাতির মেরুদণ্ড।'

হলে গেস্টরুমের সংকট থাকায় নিজেরাও পরিপূর্ণ ম্যানার শিখতে পারেননি বলে জানান অন্য এক কর্মী। তিনি বলেন, 'গেস্টরুমের অভাবে ভাইয়েরা বড় ভাইয়েরা আমাদের ভালোভাবে গেস্টরুম করাইতে পারে নাই বলেই আমরা রড আর স্ট্যাম্প লইয়া আজকে খাড়াইয়া আছিলাম। নইলে রড আর স্ট্যাম্প ভাইঙ্গাই ক্ষ্যান্ত দিতাম।'

৫৮০ পঠিত ... ২১:১৯, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০

Top