পি সি সরকারকে পেছনে ফেলে এখন উপমহাদেশের সেরা ম্যাজিশিয়ান পি কে হালদার

৩৪৩৬ পঠিত ... ১৮:১৯, জানুয়ারি ১২, ২০২০

ভারতের বিশ্বখ্যাত জাদুকর পি সি সরকারের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? কিন্তু 'টাকা জাদুকর' খ্যাত পি কে হালদারের নাম শুনেছেন কি? না শুনে থাকলে শুনে নিন এবং জেনে নিন, পি কে হালদারই এই মুহূর্তে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ম্যাজিশিয়ান। অন্য ম্যাজিশিয়ানদের মতো শুধু খরগোশ কিংবা সাধারণ তৈজসপত্র নয়, পি কে হালদার গায়েব করেছেন ৩৫০০ কোটি টাকা!

বলা হয়, জাদুর পেছনের কৌশল জানতে পারলেই জাদুটা যেন শেষ হয়ে গেলো! তবে এই জাদুকরের জাদুর কলাকৌশল জানলে তাকে আপনি আরও বড় জাদুকর ভাবতে বাধ্য হবেন।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে কমপক্ষে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মালিকানায় অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে। সেই চার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এখন চরম খারাপ। একটি বিলুপ্তের পথে, বাকি তিনটিও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। নানা কৌশল করে এসব প্রতিষ্ঠান দখল করেছেন প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার। প্রতিষ্ঠান দখল করার জন্য নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলেছেন, শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন, দখল করা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে টাকাও সরিয়েছেন। এমনকি দেশের বাইরেও কোম্পানি খুলেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের সময় পি কে হালদার প্রথমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং পরে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। আর এসব কাজে তাঁকে সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন—এই দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার চোখের সামনেই সবকিছু ঘটেছে। খবর: প্রথম আলো।

ওদিকে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে উনাকে আর পায় কে! টাকার সঙ্গে যে নিজেকেও গায়েব করে ফেলেছেন টাকাজাদুবিদ্যার এই জনক!

এ ব্যাপারে একজন লোকাল ম্যাজিশিয়ানের সাহায্য নিয়ে ম্যাজিকযোগে আমরা যোগাযোগ করি কিংবদন্তি এই জাদুকরের সঙ্গে। জাদুকরের হ্যাট থেকে বের হয়ে ফোনটি ধরেন এক খরগোশ। জাদুর খরগোশ জানান, পি কে হালদার স্যার এখন গায়েব হওয়া টাকা আবারও ফিরিয়ে আনার জাদুবিদ্যায় ব্যস্ত। স্যারকে চাওয়া হলে খরগোশ তার ক্লোজ ফ্রেন্ড কচ্ছপকে পাঠান স্যারকে ডেকে আনতে। অতঃপর কয়েক ঘন্টা ফোন ধরে রাখার পর পি কে স্যারকে পাওয়া যায়।

ফোন ধরতেই জাদুকরী এক হাসি হেসে হালদার স্যার বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই জুয়েল আইচের জাদু দেখতাম। এটা ওটা গায়েব করে দিতেন, একবার তো একটা মেয়েকেও মাঝ বরাবর কেটে ফেললেন! পি সি সরকারের জাদুও অনেক দেখেছি। সবসময় ভাবতাম, সবার চেয়ে বড় জাদুকর হবো। এমন কিছু করবো যা কখনো কেউ করেনি। আজ অনেক বছরের জাদুচর্চায় তা সম্ভব হয়েছে।'

নিজের অনবদ্য জাদু সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, 'কোনো জাদুকরকেই আমি একটা কয়েন ছাড়া কিছু গায়েব করতে দেখিনি। অথচ দেখুন, কি সহজেই ৩৫০০ কোটি টাকা গায়েব করলাম! জুয়েল আইচের মতো হয়তো কোনো মেয়েকে কেটে অর্ধেক করতে পারিনি, কিন্তু আইন-কানুন, নীতি-নির্ধারণকে একেবারে মাঝ বরাবর কেটে ফালা ফালা ঠিকই করেছি!'

জাদুর কৌশল সম্পর্কে পত্রিকায় যা যা ছাপা হয়েছে, সবই কি ঠিক? এতরকম কাহিনী করেই কি গুলো টাকাগুলো গায়েব করেছেন? এই প্রশ্ন শুনে তিনি রহস্যময় হাসি হেসে বলেন, 'হ্যাঁ এবং না। হাহাহা, এটাই তো জাদু। সব কৌশল বলে দিলে জাদু দেখাবো কী করে?'

তবে প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরটি পড়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বয়ং পি সি সরকার। কিংবদন্তি এই ম্যাজিশিয়ান মুগ্ধতা জানিয়ে বলেন, 'টাকা গায়েব করার এমন জাদু শেষবার দেখেছিলাম নাউ ইউ সি মি সিনেমায়। উপমহাদেশে কখনো দেখিনি, হয়তো কেউই দেখেনি। প্রশান্ত কুমার হালদারের জাদুবিদ্যার বিশালতা যেন প্রশান্ত মহাসাগরকেও হার মানায়। আমি পি সি সরকার নই, উপমহাদেশের সেরা ম্যাজিশিয়ান আসলে পি কে হালদার সাহেবই। সাচ এ ম্যাজিকাল জিনিয়াস!'

৩৪৩৬ পঠিত ... ১৮:১৯, জানুয়ারি ১২, ২০২০

Top