'অনুপস্থিত মেধাবী কোটা' চালু করলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

৭১৫ পঠিত ... ১৬:৫৯, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯

কোটা নিয়ে চাকরি, শিক্ষার বিভিন্ন সেক্টরে কোটা পূর্ণ করার কথা তো আমরা সবাই জানি। এছাড়া প্রশাসনিক চিরকুট কোটা, প্রশ্নফাঁস কোটা, সহমত ভাই কোটা, পলিটিকাল সুপারিশ কোটাসহ এমন অনেক 'আনঅফিসিয়াল' কোটার সঙ্গেও আমরা পরিচিত। এমনকি কিছুদিন আগে এক মহিলা সাংসদের প্রক্সি কোটায় পরীক্ষা দেয়ার খবরও আমরা শুনেছি। এইসব কোটার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী হোক কিংবা পরীক্ষার্থীর ভাড়াটে মেধাবী হোক কেউ না কেউ অন্তত পরীক্ষার হলে আসতো, খাতায় লিখতো।

তবে এবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এলো সম্পূর্ণ নতুন এক কোটা সিস্টেম। 'অনুপস্থিত মেধাবী কোটা নামে' এই নতুন কোটা সম্প্রতিই চালু হয়েছে সেখানে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে কলা ও মানবিক বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করলে সেখানে মেধা তালিকায় ১২ তম অবস্থানে মো: সাজ্জাদুল ইসলাম নামে এক শীক্ষার্থীর নাম আসে। কিন্তু ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির রেজিস্টার খাতায় এই শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখা যায় (খবর: ইত্তেফাক)। পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও মেধা তালিকায় এত শুরুর দিকে নাম থাকা এই আধ্যাত্মিক মেধাবী সম্পর্কে খবর নেয়ার কথা ভাবেন।

কিন্তু eআরকি টিমের প্রতিনিধিদের 'অনুপস্থিত প্রতিনিধি কোটা' চালুর তীব্র দাবির মুখে কাউকেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো যায়নি। তবে বিশেষ চিন্তার কিছু নেই। eআরকির পাঠকদের কথা বিবেচনা করে আমরাও অনুপস্থিত থেকে খবর সংগ্রহ করতে পেরেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনার পেছনে কী মহৎ উদ্দেশ্য ছিলো জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে আমরা একটা তারবার্তা পাঠাই। ফিরতি তারবার্তায় আমাদের জানানো হয়, 'স্যাররা সবাই অনুপস্থিত। উপস্থিত কোটায় আমি পিয়ন তমিজুল আছি। যা জিগানের আমারে জিগান।' একই প্রশ্ন পিয়ন তমিজুলকে আবার করলে তিনি বলেন, 'ঐ পোলা যেই সেন্টারে পরীক্ষা দিছিলো ওইখানে আমরা কেউ আছিলাম না। তবে যেহেতু মেধা তালিকায় নাম চইলাই আইছে তাইলে ধইরা লন পোলা মেধাবী আছে। মেধাবী অনুপস্থিত হইলেও মেধা তালিকায় অনির্বায্য! হিসাব সোজা।'

পিয়ন তমিজুলের কাছ থেকে ভালো কোন উত্তর না পেয়ে শেষমেষ আমরা কর্তৃপক্ষের বাসাতেই উপস্থিত হই। আমরা অনিয়ম নিয়ে কোন কথা না বললেও কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান, 'এখানে আসলে অনিয়মের কিছু নাই। মেধাবী শিক্ষার্থীদের অসুখ, বিসুখ, পড়তে পড়তে পরীক্ষার ডেট ভুলে যাওয়া, যাতায়াত সমস্যা, ডেটিং ইত্যাদি বিষয়ের কথা বিবেচনা করে আমরা "অনুপস্থিত মেধাবী কোটা" নামে নতুন একটি কোটা যুক্ত করেছি। এখানে অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের মাঝ থেকে লটারির মাধ্যমে একজন কিংবা দুইজনকে মেধা তালিকায় স্থান দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, 'শুধু পরীক্ষা কোনভাবেই একজন মেধাবীকে ডিফাইন করতে পারে না। মানুষ মূলত মেধাবী হয় বুদ্ধিমত্তায়। আমাদের এই প্রক্রিয়ায় মূলত বুদ্ধিমত্তাকেই মেধার মাপকাঠি হিসেবে দেখা হয়। কেমন বুদ্ধিমত্তা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই ধরেন, সেটিং-সুটিংয়ের বুদ্ধিমত্তা আর কি! কখন কোথায় মাথা খাটাইতে হবে কোথায় হাত খাটাইতে হবে, কোথায় মামা-কাকা খাটাইতে হবে এইসব। মানে হইতেছে আমরা এমন প্রবলেম সলভিং স্কিলটা দেখি আর কি।'

স্কিল দেখলে লটারি কেন করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'লটারির আগে আসলে পরীক্ষার্থীদের বাপ-মায়ের সাথে আমাদের একটু বুদ্ধি পরামর্শ হয়। মূলত সেখানেই একটা গায়েবী আওয়াজে আমরা লটারির বিজয়ী পেয়ে যাই।'

৭১৫ পঠিত ... ১৬:৫৯, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯

Top