চাঁদপুরে নির্মিত হলো দেশের প্রথম বিদ্যুতচালিত ইলেক্ট্রিক বিল্ডিং

১৭৭৬ পঠিত ... ২১:৫০, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯

ভবন নির্মাণ অর্থাৎ কন্সট্রাকশন টেকনোলজিতে আমরা অনেক আগেই বিশ্বকে পেছনে ফেলে দিয়েছি। বিল্ডিং ও ব্রিজে রড়ের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে কস্ট মিনিমাইজিং, কাল্পনিক রাস্তার উপর বাস্তবিক কালভার্ট, ৪ তলা বিল্ডিংয়ের অনুমোদন নিয়ে ১৪ তলা বিল্ডিং করে ফেলা চালাক জাতি আমরাই। এতসব মহাজাগতিক অর্জনের মধ্যে এবার চাঁদপুরে পাওয়া গেলো নতুন সাফল্যের খবর। সেখানে নির্মিত হলো দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত ইলেক্ট্রিক বিল্ডিং।

সূত্র: ডেইলি স্টার

তথ্য সংগ্রহ ও চার্জ করার উদ্দেশ্যে বেশ কিছু পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে আমাদের প্রতিনিধি দেখেন, তিন তলা বিশিষ্ট ওই বাড়িটি তৈরি করেছেন সৌদি আরব প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী মাসুদা বেগম। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে আসা নকশা অমান্য করে আড়াই শতক জমির ওপর তিনি এই তিনতলা বাড়িটি তৈরি করেন। ভবনের দ্বিতীয় তলার মাঝখান দিয়ে দুই পাশের দেয়ালের কিছু ইট সরিয়ে ৪০০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার একটি ঘরের ভেতর দিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, স্থানীয় ঠিকাদারের পরামর্শে পৌর কর্তৃপক্ষের নকশা অমান্য করেছেন তিনি।

এই ঠিকাদারের আশেপাশে গেলে ৪০০ ভোল্টের কারেন্টের শক খেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ইমো মেসেঞ্জারেই এই ঠিকাদারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন আমাদের প্রতিনিধি। এমন অভিনব বিল্ডিং তৈরির প্রেরণা কোথায় পেলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, 'আমি আসলে পরিবেশকে বাঁচাইতে চাইছিলাম। ঘরের ভিত্রে দিয়া গাছ উঠায় গাছ না কাইটাই বিল্ডিং ওঠানের একটা ছবি দেখছিলাম ফেসবুকে। এমন একটা রাস্তা ও একটা স্টেডিয়ামও দেখছিলাম। ওইটা থেকেই আসলে সাহসটা পাইছি। খামাখা কারেন্টের তার কাইটা পরিবেশরে আন্ধার করে পরিবেশের এমন ক্ষতি আমি করতে চাই নাই। সেজন্যই নিজের লগে অনেক বুদ্ধি-পরামর্শ কইরা এই কাজটা করছি।'

আমরা জানতে না চাইলেও এই ঠিকাদার আমাদেরকে বিল্ডিংটির বেশ কিছু ফিচার সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, '৪০০ ভোল্টের এই তার থেকে মিটার ছাড়াই বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে দেশের বিদ্যুৎ বাঁচানোর পাশাপাশি এই বিল্ডিংয়ের বাথরুম, রান্নাঘরের পানির স্রোতকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতও যোগ করা সম্ভব। কাপড় নাইড়া দেয়ার জন্য আলাদা কইরা তার লাগানোর দরকার নাই, বাসার ভিতরেই তারে কাপড় নাড়তে পারবেন। এলাকার পোলাপান চাইলে এই শীতে ঘরের ভিতর থেইকাই ব্যাটমিন্টন খেলার জন্য লাইন নিতে পারবে। ফলে হুটহাট পুলিশ-মুলিশ আসলেও দেখবো না। খেলাধুলা কইরা যুবসমাজ নেশাপানি করবো না। যুবসমাজ নিয়ে আমরা না ভাবলে কে ভাববে!'

খুবই এনার্জেটিক এই লোকটি আরও জানান, 'শুনেন, এই বাসায় থাকলে দেখবেন, এনার্জি কখনো ফুরায় না। সবসময় এনার্জেটিক থাকবেন, গায়ে কারেন্ট থাকবো! বাসার একটা সুন্দর নাম ভাবছি, পাওয়ারহাউজ! এইখানে সবই পাওয়ার, না পাওয়ার কিছু নাই।'

কথাবার্তার শেষের দিকে এই ঠিকাদারের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে ৪০০ ভোল্টের লাইন থেকে চার্জ দিতে দিতে আমাদেরকে ভিডিও কল করেন। ভিডিও কল করে তিনি ৪০০ ভোল্টের তারের সাথে সিগারেট লাগিয়ে সিগারেট জ্বালিয়ে আমাদের বলেন, 'এই দেখেন, মাঝরাতে হুটহাট সিগারেট খাইতে ইচ্ছে করলে লাইটার না পাইলে এইটা দিয়া বিড়িও ধরানো যাইবো! পুরাই একটা রাজকীয় ব্যাপার।'

১৭৭৬ পঠিত ... ২১:৫০, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯

Top