পলিটেকনিক অধ্যক্ষদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ

৭৮৮ পঠিত ... ১৬:৫৬, নভেম্বর ০৩, ২০১৯

সম্প্রতি রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে পাজাকোলা করে পুকুরে ফেলে দেন ওই ইন্সটিটিউটের সহমত ভাই নেতা কর্মিরা। সহমত ভাইদের বেশ কিছু অন্যায় দাবির সাথে সহমত ভাই বলে পাশে না থাকার জন্য এমনটা করে তারা। ফেলে দেয়ার পর সাঁতার জানা থাকায় বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছেন বলে জানান অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

ঘটনাস্থলে থাকা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, অন্তত ১০ জন তরুণ অধ্যক্ষকে দ্রুতগতিতে পুকুরের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ তাঁর হাত ধরে টানছিলেন, আবার কেউ পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছিলেন। এরপর তাঁকে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন মুগ্ধ হয়ে জানান, 'ও আল্লা, স্যাররে কী সম্মানডাই না করে এখনকার পোলাপান! বাদশাহ আলমগীরের পোলায় শিক্ষাগুরুর পা ধোয়ায় দিছিলো, এরা তো পুরা শরীরই ধোয়ায়ে দিল।' এ পর্যায়ে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে একবার চোখে মোছেন।

আরেকজন শিক্ষক জানান, 'ছেলেগুলো খুবই ভদ্র। নোংরা নর্দমায় না ফেলে পুকুরে ফেলেছে। শিক্ষকের প্রতি এমন সম্মান এই যুগে দেখাই যায় না।'

তবে এমন ঘটনার পর দেশের সব পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষককে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। এবং ভবিষ্যতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য সকল যোগ্যতার পাশাপাশি সাঁতারে দক্ষতা অর্জনের যোগ্যতাকে বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারেও মত দেন।

একজন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহমত ভাইদের এই কর্মের প্রশংসা করে বলেন, 'তারা শিক্ষকদেরকে সম্মান করতে জানে। পানিতে না ফেলে হাঁতুড়ি দিয়ে বাড়ি দিলে তো আর বাঁচনের কাম আছিলো না। আমাদের সোনার ছেলেরা নিজেরদেরকে একটু নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের উচিত তাদেরকে সাহায্য করা। তারা একটু দুষ্টুমি করুক। আমাদের উচিত তাদের সেই দুষ্টুমির সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেয়া। সেজন্যই অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষকদেরকে বাধ্যতামূলক সাঁতার শেখানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।'

অধ্যক্ষদের এই নতুন ইউনিফর্ম সম্পর্কে এই 'সহমত স্যার' জানালেন আরও কিছু পরিকল্পনা, 'একই সাথে সাঁতারের কস্টিউমকে শিক্ষকদের ড্রেস হিসেবেও অনুমোদন দিবো। আকস্মিক আক্রমণ এড়িয়ে সেই আক্রমণকে উপভোগ করার জন্য সর্বদা সাঁতারের কস্টিউম পরে চলাফেরা করবে শিক্ষকেরা। পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ বলে কথা, এইটুকু টেকনিক মানে জীবনদক্ষতা না থাকলে কীভাবে হবে বলেন?'

শিক্ষকদের সাঁতার শেখানোর পাশাপাশি ছাত্রদের একটু সবল করার দাবিও তোলেন আরেক পলিটেকনিকের এক অধ্যক্ষ। খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে তিনি জানান, 'পুকুরের কিনারায় গভীরতা কম থাকে। ফলে কিনারায় ফেললে শুরুতেই পায়ে আঘাত পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়। শুরুতেই পায়ে আঘাত পেলে সাঁতার শিখেও তো কোন লাভ নাই। সেজন্য ছাত্রদের শক্তি বৃদ্ধিতে তাদের হারবাল চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যেন তারা শইল্লে বল পেয়ে এক ধাক্কাতেই আমাদেরকে মাঝ পুকুরে ফেলতে পারে। একই সাথে বেশি পানিতে ঝাঁপ দেয়ার মজাটাও পাওয়া হয়ে যাবে।'

এ সময় শিক্ষকদেরকে পুকুরে ফেলে দেয়ার পর শিক্ষকরা পুকুর থেকে মাছ ধরলে সেই মাছে নিজেদের হিস্যা দাবি করে সহমত ভাইদের সমাবেশ করতে দেখা যায়।

৭৮৮ পঠিত ... ১৬:৫৬, নভেম্বর ০৩, ২০১৯

Top