বিয়ের গেটে অতিরিক্ত টাকা দাবি করায় ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করতে চায় বরপক্ষ

১২৬৫ পঠিত ... ২১:১০, আগস্ট ২৪, ২০১৯

গত বুধবার রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় এক বিয়েবাড়িতে ‘গেট ধরা’কে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কনেপক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে বরপক্ষের উপর হামলা করে। এতে বরের মাথা ফেটে যায় এবং আরও অনেকে আহত ও অবরুদ্ধ হন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসে। খবর: কালের কণ্ঠ। 

এই খবর প্রকাশের পরপরই দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে বিভিন্ন সামনের দিনে পাত্রপক্ষ হতে পারেন এমন মানুষদের কপালে। বিয়ের গেটে বরপক্ষকে কোণঠাসা করে কনেপক্ষের চাঁদা দাবির ঘটনা আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। তবে একে কখনোই ভালো চোখে দেখেননি বরপক্ষের লোকজন। আর রংপুরে কনেপক্ষের আক্রমণের ঘটনার পর এবার অনেকেই ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করতে চান।

বিয়ের অনুষ্ঠানে গেট ধরার ব্যাপারটি সাধারণত দুই পক্ষের মুরুব্বিরা আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করে নেন। তারপরেও সব বিয়ের গেটেই দীর্ঘ বচসা চলে টাকা পয়সা নিয়ে। তাই নির্ধারিত মূল্যের বেশি রাখার ব্যাপারটি নিয়ে এবার ভোক্তা অধিকার আইনের সহায়তা চান বরপক্ষ। বরপক্ষের এক তরুণ বলেন, ‘কত জার্নি করে বিয়েবাড়িতে যাইতে হয়। এরপর তারা ক্লান্ত পথিকের সাথে অতিরিক্ত টাকা চায়। দাম যেটা ঠিক করা সেইটার বেশি চাইলে কেমন লাগে বলেন? এখন ভোক্তা অধিকার আইনই পারে আমাদের রক্ষা করতে।’ অফ দ্য রেকর্ডে তিনি এও জানান, ভোক্তা অধিকার মামলায় জরিমানার এক-চতুর্থাংশ পান অভিযোগকারীই। সেদিক দিয়ে এটি তাদের জন্য বেশ অর্থকরীও।

গেট ধরার ব্যাপারটিকে অপসংস্কৃতি আখ্যা করে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বিয়াতে কি শুধু মেয়েপক্ষের পোলাপানেরই হাতখরচ লাগে নাকি? ওদেরকে টাকা দিতে দিতে ফতুর হয়ে যাইতে হয়। ছেলের ভাইবোনদেরও তো খরচ আছে। এই অপসংস্কৃতির বিলোপ হওয়া প্রয়োজন।’ এছাড়াও বরের জুতা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টিকে সন্ত্রাস বলে আখ্যা দেন তিনি। তবে বিপরীত কথা বলছেন কনেপক্ষের লোকজন। এক তরুণ বলেন, ‘গেট ধরা বাংলার হাজার বছরের  একটি ঐতিহ্য! যারা কৃষ্টি-কালচার নিয়ে ভাবে না, শুধুমাত্র তারাই এটি নিয়ে কটুক্তি করতে পারে।’

আইনি লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই কনেপক্ষও। কনেপক্ষের এক তরুণী বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার আইনে মামলার ভয় দেখিয়েই যদি তারা ভাবে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে, তবে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। বাংলাদেশ থেকে এখনো আইনের শাসন বিলুপ্ত হয়নি। দরকার পড়লে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব। সেখানে আপিল করে দ্বিগুণ টাকা অর্জন করতে পারব।’ জুতা অপহরণের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমনিতেও আমরা আর এমন করব না। সামনের দিনে অপহরণ করব বরের স্মার্টফোন। বরপক্ষের কাউকে দিব না ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড। তখন দেখব, বিয়ের প্রোগ্রামে বসে আর কেউ লাইভে যেতে পারে কি না!’

১২৬৫ পঠিত ... ২১:১০, আগস্ট ২৪, ২০১৯

Top