ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে চায় সারা বিশ্ব, ডেঙ্গুতে নোবেল দেয়ার দাবি

২১৯ পঠিত ... ১৬:১৩, আগস্ট ২৪, ২০১৯

প্রাণঘাতী ডেঙ্গু নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগের মধ্যেই মশাবাহিত এই ‘রোগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার’ জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের হাতে সম্মাননা তুলে দিল 'ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি'। শুক্রবার এফডিসিতে ‘শুধু সরকারি প্রচেষ্টা নয়, জনসচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় বাংলাদেশের সফলতার চিত্র তুলে ধরেন তাজুল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এই রোগ মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের ‘সক্ষমতা বেশি’। অনুষ্ঠান শেষে ‘ডেঙ্গু মোকাবেলায় সর্বাত্মক চেষ্টার জন্য’ তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বিতর্কের আয়োজক প্রতিষ্ঠান ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। খবর: বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর।

এরপর থেকেই এই পুরস্কারের ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে সাড়া পড়ে যায়। ডেঙ্গুকে ঠিক কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন তাজুল ইসলাম? লোকচক্ষুর একেবারে আড়ালে কোথা থেকে চলছে ডেঙ্গুর এমন 'সুনিপুণ' নিয়ন্ত্রণ? জানতে আমাদের ডেঙ্গু গবেষণা দল মশারির ভেতর ঢুকে ঘুমিয়ে পড়ে কল্পরাজ্যে অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। ইনসেপশন টাইপ কয়েক লেয়ারের ড্রিম পার হওয়ার পর একটি আন্ডারগ্রাউন্ড বাংকারে খুঁজে পাওয়া যায় সেই 'ডেঙ্গু কন্ট্রোলিং হেডকোয়ার্টার'। ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কন্ট্রোল প্যানেলের সামনে বসে আছেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

প্রতিদিন এত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, সবখানে ভয়ংকর মশার উপদ্রব। তাহলে ডেঙ্গু ঠিক কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে? জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী মুচকি হেসে একটি লাল রঙের বোতাম চেপে বলেন, 'বলুন তো এটা কী হলো? জানেন কিছু?'

আমাদের প্রতিবেদক বোকার মতো তাকিয়ে থাকলে তিনি ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেন, 'বোতাম চাপামাত্র এডিস মশার একটা আস্তানা ধ্বংস হয়ে গেলো। সব কন্ট্রোলে আছে। এগুলো তো আমার এক আঙুলের খেল।' এই পর্যায়ে তিনি আরেকটি বোতাম চেপে আরও একটি আস্তানা ধ্বংস করেন।

কিন্তু এত কন্ট্রোলের পরও ডেঙ্গু পরিস্থিতি এত দুর্বিষহ কেন, জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, 'ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তো আগে ডেঙ্গু হতে হবে রে ভাই। উন্নত দেশগুলাতে দেখেন, ওরা কি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? পারে না। কারণ ওখানে তো ডেঙ্গু হয়ই না, নিয়ন্ত্রণ করবে কীভাবে! অনেক মানুষের ডেঙ্গু হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ব্যাপারটা কন্ট্রোলের মধ্যেই আছে।'

এ পর্যন্ত বলার পর তিনি কয়েকটি এডিস মশার সঙ্গে ভিডিও চ্যাটে তাদেরকে এখনই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলে তারা দ্রুত সেখান থেকে সরে পড়ে। আমরাও কিঞ্চিত আতঙ্কিত হয়ে কন্ট্রোল রুম ত্যাগ করি।

এদিকে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়াসহ ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্যান্য দেশের সরকারও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য তাজুল ইসলামের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন। ইন্দোনেশিয়ার এক মুখপাত্র জানান, 'উনার মতো ডেঙ্গুকন্ট্রোলার নেই বলেই তো আমাদের এই অবস্থা। ফ্রি হলে একটু যদি আমাদের দেশে এসে পায়ের ধুলা দিতেন, সেই ধুলাতেই হয়তো অর্ধেক এডিস মশা মরে শেষ হয়ে যেত। খুব সমস্যায় আছি ভাই, এখন বাঁচা-মরা সব কিছু মন্ত্রীসাহেবের উপর...'

এছাড়া যেসব দেশে এখনো ডেঙ্গু ছড়ায়নি, তারাও আগে থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে তাজুল ইসলামকে চায়। স্যান ফ্রান্সিসকোর অধিবাসী একজন জানালেন, 'প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর। আমাদের আশা, উনি আমাদের এই গরিব দেশে এসে দুবেলা ভাত খেয়ে গেলেও এখানে কোনোদিন কোনো এডিস মশা আসার সাহস পাবে না।' 

অন্যদিকে সম্মাননার পাশাপাশি তাজু ইসলামকে ডেঙ্গুতে নোবেল দেয়ারও দাবি জানিয়েছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। মেসির হাতে না উঠতে পারা যেমন বিশ্বকাপের ব্যর্থতা, তেমনি তাজুল ইসলামের হাতে না উঠতে পারাও নোবেল পুরস্কারের ব্যর্থতা, এমনটাই ভাবছেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মানবাধিকার কর্মী জানান, 'নোবেল প্রাইজে ডেঙ্গু বিষয়ক কোনো ক্যাটাগরি নেই, এটাই তো কষ্টের। দ্রুত উনার জন্য বিশেষ ক্যাটাগরি করে ডেঙ্গুতে নোবেল দেয়া হোক।'

ঠিক কী কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন তাজুল ইসলাম? এমন প্রশ্নে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির একজন নাম না প্রকাশ করার রিকোয়েস্ট করে জানান, 'আমরা তো বিতর্ক নিয়ে কাজ করি। ইদানিং বিতর্কের টপিক কমে গেছে। তাই জাতির উদ্দেশে বিতর্ক করার নতুন টপিক ছুড়ে দিতেই এই বিতর্কিত সম্মাননা।'

২১৯ পঠিত ... ১৬:১৩, আগস্ট ২৪, ২০১৯

Top