২০১৯ বিশ্বকাপের ৩৮তম ম্যাচে বার্মিংহামের ঐতিহাসিক এজবাস্টনে মুখোমুখি ভারত ও ইংল্যান্ড। কিন্তু নিয়তির অদ্ভুত পরিহাসে এই ম্যাচটি রূপ নিয়েছে অন্য এক সমীকরণে। আজ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের পক্ষ হয়ে ভারত লড়ছে একদিকে আর অন্যদিকে সেই চিরশত্রু ইংল্যান্ড৷ আর গত শতাব্দীর চল্লিশের দশককে মনে করিয়ে দেওয়া ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড একরকমের রানের পাহাড় গড়ে করেছে ৩৩৭ রান।
আজকের ম্যাচটি যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৪৭ সালে ইংরেজদেরকে এই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ইতিহাসটাই। এদিকে ম্যাচের শুরুতেই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যেন দুইশো বছরের অত্যাচার ৫০ ওভারের মধ্যে শুরু করে দিয়েছিল। জেসন রয় আর জনি বেয়ারস্টো যেন হয়ে গেছিলেন লর্ড রয় আর লর্ড বেয়ারস্টো। যারা নিরীহ ভারতীয় চাষি চাহাল আর কুলদীপ যাদবকে দিয়ে জোর করে করাচ্ছেন নীলচাষ।
কিন্তু এই ম্যাচ যে জিততেই হবে ভারতের! কারণ এই জয় শুধু ভারত নয় বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের জন্যও সমান দরকারি। আর তাই আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং এ ওপেনিং করতে নামবেন ব্রিটিশবিরোধী সফল জুটি জওহরলাল নেহেরু এবং মহাত্মা গান্ধী। ইংল্যান্ডকে বিতাড়িত করা অর্থাৎ হারানোর জন্যই এমনটা হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তাদের সফল পার্টনারশিপ ভারতীয় উপমহাদেশকে একবার শত্রুমুক্ত যেহেতু করতে পেরেছে, এবারও পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শুরুতে অহিংস, পরবর্তীতে সহিংস ইনিংস খেলে জয়ের জন্য লড়াই করবেন তারা, জানা গেছে এক অজ্ঞাত সূত্র থেকে।
তবে এই ইতিহাসখ্যাত শক্তিশালী জুটি সফল হতে না পারলে ওয়ান ডাউনে কোহলীর বদলে মারকুটে ব্যাটসম্যান ভগত সিং। ধুন্ধুমার ইনিংস খেলে সমগ্র উপমহাদেশের পক্ষ নিয়ে ভারতের স্কোরকার্ডটি এগিয়ে নিবেন তিনি। মারকুটে ইনিংস খেলে তিনি ইংরেজদের বোলিং অ্যাটাকে পরে সাজঘরে ফিরে গেলে মিডল অর্ডার সামলাতে আসবেন সুভাষ বসু। সাথে পার্টনারশিপে থাকতে পারেন তিতুমীর। বাঁশের কেল্লার বদলে তিনি আজ উইলো কাঠের ব্যাটে মাঠে গড়বেন রানের কেল্লা।
তবে ভারতবর্ষের টার্গেট হতে পারত অনেক বেশি। যখন ইংল্যান্ড মোটামুটি চারশ রানের পাহাড় করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই নীলচাষি যাদব বিপ্লবী হয়ে লর্ড রয়কে বধ করেন। এরপর আরেক বিপ্লবী মোহাম্মদ শামির নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের রানের লাগাম টেনে ধরে ভারত। অনেকেই বলছেন, সূর্যসেনের আত্মাকে বিশেষ ক্ষমতাবলে এজবাস্টনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল চট্টগ্রাম থেকে। ইনিংসের মাঝে দীর্ঘসময় ধুকলেও শেষে নিষ্ঠুর স্টোকস রানকে নিয়ে যান সুবিধাজনক এক পর্যায়ে। এখন দেখার বিষয় ভারত কি পারবে পুরো উপমহাদেশের প্রত্যাশার বোঝা কাঁধে নিয়ে ৩৩৮ রানের লক্ষ্য পূরণ করতে। গত শতাব্দীর বিপ্লবীরা কি পারবেন এবার?