বার্সা সমর্থকদের লিভার ধরে টান দিলো লিভারপুল

৩৯৯ পঠিত ... ১৬:১৬, মে ০৮, ২০১৯

গতকাল রাতে অ্যানফিল্ডে এক বিশেষ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিজেদের নামকরণের স্বার্থকতা প্রমাণ করে বার্সেলোনার কলিজা তথা ‘লিভার’ ধরে টান অর্থাৎ ‘পুল’ করল লিভারপুল। এই সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বার্সেলোনাকে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হল।

৭ মে দিবাগর রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক লিভারপুল ও প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জয় নিয়ে এগিয়ে থাকা বার্সেলোনা। প্রথম লেগের পর আত্মবিশ্বাসে আকাশেই উড়ছিল বার্সা শিবির। প্রথম লেগে কোন অ্যাওয়ে গোল না থাকায় লিভারপুলকে জিততে হত অন্তত চার গোলের ব্যবধানে। এই উড়ন্ত বার্সার বিপক্ষে যা অনেকটাই অসম্ভব। আর তার উপর লিভারপুল দলে এদিন ছিলেন না সালাহ এবং ফিরমিনো।

কিন্তু মাঠে এসব কিছু বুঝতেই দেয়নি ক্লপ বাহিনী। ডিভক অরিগি এবং জর্জিনিও ভাইনাল্ডামের জোড়া গোলে বার্সার জালে চার গোল দেয় লিভারপুল। আর শত চেষ্টা করেও পৃথিবীর দশজন খেলোয়াড়কে নিয়ে ভিনগ্রহের ফুটবলার লিওনেল মেসির দল একটি গোলও দিতে পারেনি। এই ম্যাচের পর বার্সেলোনার সমর্থকদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এই ঘটনায় পৃথক পৃথক শোকবার্তা দিয়েছে ‘বার্সেলোনা সমর্থক গোষ্ঠী’ এবং ‘নিখিল বাংলা আর্জেন্টিনা-বার্সা ঐক্যজোট’।

বার্সা সমর্থক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক লিওনেল মানিক বলেন, ‘এভাবে হবে ভাবিনি। মনে হচ্ছে কলিজাটা কেটে নিয়ে চলে গেল। এইবার ট্রেবল নিয়ে কতো কিছু ভেবে রাখছিলাম। কতোগুলো স্ট্যাটাস যে হাইড করে দিতে হইল! আমি তো সেহেরিতে কিছুই খাইতে পারি নাই।’ আবার আর্জেন্টিনা-বার্সা ঐক্যজোটে শোকের পরিমাণটা যেন একটু বেশিই। এই সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, ‘তেত্রিশ বছর কেটে গেল! মেসি তো বিশ্বকাপ ছুঁতে পারল না… ভেবেছিলাম এবারের ইউসিএল কাপটা মেসিই তুলে ধরবে! কিন্তু পারল আর কই!’

অন্যদিকে লিভারপুল ফ্যান ক্লাবের পাশাপাশি মাদ্রিদ ভিত্তিক নবগঠিত জোট ‘মাদ্রিদ-জুভ-লিভারপুল মহাজোট’-এ বয়ে গেছে আনন্দের বন্যা। ম্যাচ শেষে এই মহাজোটের সদস্যদের দেখা যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করতে। মিছিল শেষে মিষ্টি বিতরণের কথা থাকলেও সেহরির সময় হওয়ায় তা পিছিয়ে আজ ইফতারে নিয়ে আসা হয়েছে।

ঐতিহাসিক পরাজয়ে মুষড়ে পড়েছে বার্সা শিবির। বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে eআরকিকে বলেন, ‘হেরে যাওয়া জীবনের অংশ। কষ্ট ছিল না কোন। কিন্তু ট্রফিকেসে ট্রেবলের জন্য যে জায়গাটা খালি করা হয়েছিল, সেখানে এখন দুটো ট্রফি রাখতে হবে। মাঝের খালি জায়গাটায় ধুলোর আস্তরণ পড়ে যাবে। আমার আবার ডাস্ট এলার্জি আছে… এটা নিয়েই চিন্তা হচ্ছে।’ আর লিভারপুলের প্রধান সার্জন ইয়ুর্গেন ক্লপ তার চিকিৎসক দল নিয়ে আনন্দের সাগরে ভাসছেন। আগের ম্যাচে তিনটি সেলাই পড়া দলটি যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাই নিয়ে গর্বের শেষ নেই ক্লপের।

ম্যাচশেষে এক প্রতিক্রিয়ায় আনন্দিত ক্লপ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। সালাহ আর ফিরমিনো না থাকায় আমাদের ভয়ই হচ্ছিল। কিন্তু মিশরীয় মেসি না থাকলেও আর্জেন্টাইন মেসির অপারেশন ঠিকঠাক করতে পেরেছি। ছেলেরা ভালো খেলেছে।’ 

তবে লিভার তথা কলিজা হারিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বার্সা সমর্থকরা। উপরন্তু এই ম্যাচে বার্সা হৃদয়ও না জিততে পারায় তাদের কষ্টটা আরো বেশি। গত ইউসিএলেও কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ৪-১ গোলে জিতেও একইভাবে পরের লেগে ৩-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল বার্সা। এবারের ম্যাচ দেখে তাই কোন কোন বার্সা ফ্যান বলেছেন, 'অ্যাওয়ে গোলের মর্ম আজ বুঝলাম!' 

৩৯৯ পঠিত ... ১৬:১৬, মে ০৮, ২০১৯

Top