ভারতের ওডিশায় আঘাত হানার ২১ ঘণ্টা পর ৪ মে সকাল ছয়টার দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। আরও উত্তর দিকে চলে গিয়ে সকাল নয়টার দিকে ফরিদপুর ও আশপাশের অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি পরে আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে গেছে। এতটুকু খবর নিশ্চিত হওয়া গেলেও, ফণী ফণা তুলে এসেছিল নাকি ফণা তুলে আসেনি, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফণীর 'ফণা' সংক্রান্ত এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে একই ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে সমকাল এবং জনকন্ঠের দুটি একেবারে আলাদা ধরনের শিরোনামের কারণে। ফণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর জানিয়ে দৈনিক সমকালের শিরোনাম, 'ফণী এলো ফণা তুলে'। অন্যদিকে দৈনিক জনকন্ঠের শিরোনাম, 'ফণা তুলে আসেনি ফণী।'
একই ফণী নিয়ে এমন দুটি ভিন্ন ধরনের তথ্যে বিভ্রান্ত হয়ে গেছে বাংলাদেশের পত্রিকা পাঠকরা। ফণী কি তাহলে ফণা তুলেছিল, নাকি তোলেনি? এক পক্ষ ফণীর ফণা দেখলো, অন্য পক্ষ দেখলো না কেন?
এ ব্যাপারে বরিশালে অবস্থানরত দৈনিক সমকালের একজন সাংবাদিক ঘূর্ণিঝড় ফণীর কসম কেটে বলেন, 'অবশ্যই ফণী ফণা তুলে আসছে। আমি নিজে ফণীর ফণা দেখছি। সাপের মতো ফণা তুলে কুন্ডুলি পাকায়ে কুন্ডুলি পাকায়া পাকায়া সামনে আগাইলো। ছোবল মারার জন্যও আগাইছিলো। অনেক বাতাস থাকায় ছোবল দিতে পারে নাই। মোবাইল উইড়া যায় কিনা সেই ভয়ে ছবি তুলতে পারি নাই। কিন্তু আমি ফণা দেখছি, বিশ্বাস করেন!'
অন্যদিকে দৈনিক জনকন্ঠের পটুয়াখালী অবস্থানরত সাংবাদিক জানালেন অন্যরকম তথ্য, 'ঘূর্ণিঝড় ফণীর কোনো ফণা ছিল না। ফণাওয়ালা সাপ আর ঘূর্ণিঝড় দুইটাই আমি আগে দেখছি। ফণা আমি চিনি। এইটা ফণাছাড়া ঘূর্ণিঝড় ছিল। ফণাওয়ালা ঘূর্ণিঝড় এমন হয় না, অন্যরকম হয়।'
তবে কনফিউজিং এই হেডিংদ্বয় নিয়ে একজন ফেসবুকারের মতামত, 'বাঙালি একটা ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারেও দুই ভাগ হয়ে গেলো। ফণীর ক্ষয়ক্ষতি ছাপিয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ালো ফণী কি ফণা তুলেছে, নাকি তোলেনি?' আরেকজনের মন্তব্য, 'ফণীর ফণাটা শ্রোডিঞ্জারের বিড়ালের মতো কিছু হয়ে থাকতে পারে। এটা একই সাথে ছিল, আবার একই সাথে ছিল না। পর্যবেক্ষক কোন পত্রিকার সাংবাদিক, তার উপর ফণা থাকা না থাকাটা নির্ভর করে।'