সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াহুড়ায় লুঙ্গি পরেই ক্লাস করতে চলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা কি কখনো করেছেন? ঢাবিতে অবশ্য এই ঘটনা ঘটেও গেছে! ১০ এপ্রিল (বুধবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর উদ্যোগে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা লুঙ্গি পরে ক্লাস করেছেন, ঘুরে বেড়িয়েছেন। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের নাম তারা দিয়েছেন 'লুঙ্গি মহফেল'!
ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের চার শিক্ষার্থী নেহাল মুহাম্মদ, তারিকুল ইসলাম, মাজেদ নাসিম এবং কফিল ইবনে কামালের উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই ‘মহফেল’। গত ২ এপ্রিল নেহাল, তারিকুল এবং নাসিম এই তিন বন্ধু লুঙ্গি পরে ক্লাস করেন। এরপর কলা ভবনের পাশে শ্যাডোর রাস্তায় তিনজন মিলে একটি ‘শোডাউন’ করেন। এই শোডাউনের ভিডিওটি ফেসবুকে অভাবনীয় সাড়া পায়। এরপর সবার উৎসাহ দেখে এই তিন তরুণ এবং কফিল মিলে ঘোষণা করেন ‘ঢাবি লুঙ্গি মহফেল-১৯’এর।
বুধবার এই আয়োজনে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। দুপুরে টিএসসিতে জমায়েত হয়ে মিছিল নিয়ে কলাভবন, এফবিএস, আইইআর, মোকাররম, কার্জন প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় বিভিন্ন মজার স্লোগান দেন। লুঙ্গি পরে ফটোসেশনেও অংশ নেন অংশগ্রহণকারীরা। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা গান গেয়েছেন, আড্ডা দিয়েছেন, নিজেদের মাঝে পরিচিত হয়েছেন। মাহফিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ এদিন লুঙ্গি পরেই নিজ নিজ বিভাগে ক্লাস করেন। আসতে না পারা অনেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেদের লুঙ্গি পরা ছবি ইভেন্টে দিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। অনেকে আবার চাইছেন এমন একটা ফেসবুক গ্রুপ, যেখানে সবাই শুধুমাত্র লুঙ্গি নিয়েই কথা বলবে।
আয়োজকদের ভাষায়, লুঙ্গি নিয়ে এখনো আমাদের মাঝে ঔপনিবেশিক এক ধারণা বিদ্যমান। লুঙ্গিকে শ্রমজীবী মানুষের পোশাক হিসেবেই দেখা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই লুঙ্গি আমাদের এই অঞ্চলে যথেষ্ট জনপ্রিয় পোশাক হিসেবেই আছে। তাই লুঙ্গি নিয়ে সমাজের একটা অংশের নাক সিটকানো মানসিকতার প্রতিবাদস্বরূপ এই আয়োজন।
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আয়োজন এবারই প্রথম না। এর আগেও ঢাবির কিছু শিক্ষার্থী লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তবে এবারের আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার আশ্বাস দিয়েছেন আয়োজকরা। সবার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে প্রতি বছরই এমন আয়োজন করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন তারা।