ইনকোর্স পরীক্ষায় ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষকের ব‍্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় উদ্দ্যোগ

১২৯১৩ পঠিত ... ২২:১০, এপ্রিল ০৯, ২০১৯

লেখাপড়া আর পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীর মাঝেই একটা প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে, সেটা হচ্ছে 'এই যে এতো কিছু শিখছি। পরীক্ষায় পাশ করা ছাড়া বাস্তব জীবনে কি এগুলো কখনো কাজে লাগবে?’ সৃজনশীল পদ্ধতি চলে আসলেও পরীক্ষার প্রশ্নের মান খুব একটা বদলেছে এমন দাবি জোর গলায় কেউ সম্ভবত করতে পারবে না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের একটি প্রশ্নপত্র দেখে সেই বদ্ধমূল ধারণা খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে, প্রশংসাই করতে হয় একে।

৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) মার্কেটিং বিভাগের মাস্টার্সের একটি ইনকোর্স পরীক্ষার অভিনব প্রশ্নপত্রের ছবি ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে ফেসবুকে। মার্কেটিং ফর ননপ্রোফিট অর্গানাইজেশন কোর্সের এই প্রশ্নপত্রটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দক্ষতা অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে। বিয়ের বাজারে একজন হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নিজেকে উপযুক্ত পাত্র/পাত্রী হিসেবে প্রমাণ করতে এই প্রশ্নপত্রটির যেন কোন বিকল্প নেই।

এই কোর্সে শেখানো হয়, অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কিভাবে করতে হবে সেসব বিষয়। সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় পরিবারকে বলা হয় প্রতিষ্ঠান, আর এই প্রতিষ্ঠান গড়তে দরকার পড়ে বিয়ের। তাই পরিবারের মতন ‘অলাভজনক’ প্রতিষ্ঠানে কী করে নিজের ঢোল নিজে পেটানো যায়, তা নিয়েই ছিল ১৫ নম্বরের এই প্রশ্নটি।

ব্যক্তি জীবনে খুব দরকারি এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী আমাদের জানান, ‘বিয়ে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। মাস্টার্স চলে এলো, অথচ ওর বাড়িতে ঠিক করে প্রস্তাব পাঠাতে পারিনি। আজকের পরীক্ষা দিয়ে মনে হচ্ছে যেন কনফিডেন্স পেলাম। এখন আর কিছুই আমাকে আটকে রাখতে পারবে না।’ অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বন্ধুরা আমাকে বলতো যে, ঘটক ছাড়া নাকি আমার বিয়েই হবে না। আজকের পরীক্ষার পর নিজেকে যেন নতুন করে চিনলাম। এখন আমিই পারব হবু শ্বশুর-শ্বাশুরির কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে।’

এই প্রশ্নপত্রের আরও অভাবনীয় দিকটি হলো, পরীক্ষাটি ছিল পুরোপুরি বাংলায়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশের পর ইংরেজির তোপের মুখে এমনিতেই কাগজে কলমে বাংলা লেখা অনেকেই প্রায় ভুলে যায় বলে দাবি করেন অনেকে। সেখানে বিজনেস ফ্যাকাল্টিতে মার্কেটিং-এর মতো ডিপার্টমেন্টে বাংলায় পরীক্ষা বিষয়টিও বেশ ব্যতিক্রমী। জানা যায়, এই কোর্সের শিক্ষক অধ্যাপক সাইদুল হক এর আগেও বাংলায় পরীক্ষা নিয়েছিলেন। তাকে আমাদের eআরকির পক্ষ থেকে অভিনন্দন।

১২৯১৩ পঠিত ... ২২:১০, এপ্রিল ০৯, ২০১৯

Top