ইদুল আজহা মানেই ঘরমুখী মানুষ। ইদ উপলক্ষে এবার নাড়ির টানে স্বজনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবারের মত এবারো দেখা দিয়েছে টিকিট সংকট। টিকিট প্রত্যাশী মানুষদের চাপে এবার টিকিট তো পাওয়া যাচ্ছেই না, বাস এবং ট্রেনের ছাদ পর্যন্ত যাত্রী বোঝাই থাকায় ঘরে ফিরতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষ এবার হামলে পড়েছে এয়ারপোর্টগুলোতে। কিন্তু সেখানেও টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় মানুষের দৃষ্টি এবার গেছে প্লেনের ছাদের দিকে।
গতকাল ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্লেনের ছাদে উঠেই গন্তব্যে রওনা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে ইউএসএ বাংলা এয়ারলাইন্সের জনৈক কর্মকর্তা জানান, 'যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি পৌছেছে। আমাদের প্লেনগুলোর ছাদে রেলিং থাকায় বিপদ ঘটার সম্ভাবনা নেই।'
প্লেনের ছাদে প্যারাসুট সরবরাহ করা হচ্ছে এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যাত্রীরা যেন বাড়ির কাছাকাছি আসলেই লাফ দিয়ে নামতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্যারাসুট এবং দূরবীন দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমরা প্লেনের ছাদে কোল্ড ড্রিংক্স, স্ন্যাক্স এগুলোও দিচ্ছি।'
প্লেনের ছাদে বাড়ি ফিরেছেন এমন একজন যাত্রীর কাছে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, 'প্লেনের ছাদে কোন এয়ার হোস্টেস নাই, বুঝেন অবস্থা! সেভেন আপটাও নিজে ঢেলে খেতে হয়েছে। এর চেয়ে বাসের ছাদে গেলেও তো ভাল থাকতাম। নেমে চা বিস্কুট খাওয়া যেত।'
তবে কিছু যাত্রী প্লেনের ছাদে যাত্রার এই নতুন ট্রেন্ডকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। দিনাজপুরগামী মোখলেস বলেন, ‘পেলেনের ছাদে এসি টেসি লাগে না, ব্যাপক ঠান্ডা। একটা অ্যাডভেঞ্চার আছে, ব্যাপারটা পছন্দ হইছে। বাস-ট্রেনের ছাদেত্তে পড়লেও মরার চান্স আছে, প্লেনের ছাদ থেকে পড়লেও আছে, তাইলে উঠলে তো পেলেনের ছাদেই ওঠা উচিৎ। ওপর দিয়া জ্যাম ট্যাম নাই, সব দিক দিয়া আরাম!’
তবে বাস-ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের মতো প্লেনের ছাদে যাত্রাতেও রয়েছে বিপদের ঝুঁকি। অতিরিক্ত স্পিডে ওভারটেক করার সময় উত্তরবঙ্গগামী একটি প্লেনের ছাদ থেকে যাত্রী নদীতে পড়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই যাত্রী কোতোয়ালী থানায় প্লেনের পাইলটের নামে একটি মামলাও করেছেন বলে জানা গেছে। পাইলট অবশ্য ওভারটেকের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।
