ডিমের বাজার এখন যেন আস্ত এক কড়াইতে পরিণত হয়েছে। বাজারে দামের আগুনে কাঁচা ডিম কিনতে গেলেই দেখা যাচ্ছে সব সেদ্ধ হয়ে আছে। বাজারে গেলে আগের মতো আর 'ভাই, ডিম কত?' এই সহজ প্রশ্ন করা যাচ্ছে না। এখন ডিম কিনতে গেলে বুকের সাথে মানিব্যাগও কাঁপে। ডিমের দাম শুনে হৃৎপিণ্ডের বেহাল দশা। কারণ একেকটা ডিম যেন মুরগির খাঁচা থেকে বের হওয়ার আগেই সোনা হয়ে যাচ্ছে।
সরকার থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ঘোষণা এল—ডিমের দাম হবে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। এই শুনে জনতা বলল, 'এত পয়সা যোগ করার দরকার নেই, ১২ টাকা বললেই পারতেন।' কিন্তু বাস্তবে বাজারে গিয়ে দেখা গেল এক ভিন্ন দৃশ্যপট। একেকটা ডিমের দাম ১৫ টাকা! হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এটাই বর্তমান পরিস্থিতি। আর ডজন কিনতে চাইলে সেটার জন্য তো কিডনি বন্ধক রাখতে হবে। এক ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকা! এর মানে, এক ডজন ডিমের সাথে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে এক ডজন মাথাব্যথা।
তবে এভাবে ডিম সিদ্ধ হওয়ার বিষয়টিকে পজিটিভভাবে দেখছে সরকার। একটি ফেক আইডি থেকে তারা বলেন, ১৫ টাকা বাজার থেকে ডিম কিনলে কষ্ট করে আর সিদ্ধ করতে হবে না। সময় ও গ্যাস দুইটাই বেঁচে যাবে।
দাম আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন ডিম সিন্ডিকেটের সদস্যরা। সিন্ডিকেটের এক সদস্য ফেক আইডি থেকে বলেন, অনেকে অভিযোগ করছেন ১৫ টাকা দিয়ে কেনা ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ হচ্ছে না। হাফবয়েলের মতো থেকে যায়। আমরা ভাবছি কুইক রেন্টাল মডেলে পরিপূর্ণ সিদ্ধ ডিম বাজারে ছাড়ার। এতে দাম ১৫ থেকে বেড়ে ১৮ হইতে পারে। হোক, আমরা সবসময় গ্রাহককে সেরা পণ্যটাই দিতে চাই।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শুধু ক্রেতারা নয়, মুরগিরাও হতবাক। একটা মুরগি নাকি অন্য মুরগিকে বলছে, বুঝলি না, আমাদের ডিম এখন এমনই মূল্যবান যে একটা ডিম পাড়লে মনে হয় একটা আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স পাড়ছি!
মুরগির খোঁয়াড়ে এক সভা ডেকে সবাই বলছে, 'আমরা তো ডিম দিচ্ছি যথারীতি, কিন্তু বাজারে এত চাহিদা কেন?' অর্থনীতিবিদ মুরগিরাও হয়তো একটা কোর্স চালু করবে—'অর্থনীতির সোনালি ডিম: কীভাবে ডিম দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।'