উপমহাদেশের প্রথম স্টুডিও, 'দ্য বেঙ্গল ফটোগ্রাফার্স' 

১৪৩ পঠিত ... ১৭:৪২, নভেম্বর ১৫, ২০২৩

উপমহাদেশের-প্রথম-স্টুডি

ফটোগ্রাফির আবিষ্কার, প্রচার ও প্রসার ইউরোপে। এই উপমহাদেশে ফটোগ্রাফির প্রচলন ঔপনিবেশিক আমলে অর্থাৎ ১৮৪০ দশকে, অবশ্য সেই ইউরোপীয়দের দ্বারাই। ফটোগ্রাফি বিষয়ক এদেশীয় প্রথম সংগঠন ১৮৫৬ সালের ২রা জানুযার প্রতিষ্ঠিত হয় 'ফটোগ্রাফিক সোসাইটি অভ বেঙ্গল'। ১৮৫৭ সালের মার্চ মাসে কলকাতায় এক ফটোগ্রাফিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। উপমহাদেশের প্রথম এই প্রদর্শনীর ৩৮ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ১৭ জন ছিলেন বাঙালি। আর এই উপমহাদেশের প্রথম স্টুডিও প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬২ সালে কলকাতায়, নাম ছিল 'দ্য বেঙ্গল ফটোগ্রাফার্স'। দ্বিতীয় স্টুডিওটির নাম 'বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড', যা ১৮৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৮০-৯০ দশকে ফটোগ্রাফি সাধারণের নাগালে আসে। সেই সময় অবহেলিত বঙ্গ জনপদে ঢাকার নবাব খান বাহাদুর আহসান উল্ল্যাহ এবং তার ছেলে নবাব খাজা সলিমুল্লাহ ফটোগ্রাফির চর্চা করতেন কলকাতায়। হিন্দু জমিদার, সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি আর ঢাকার নবাবদের হাত থেকে ফটোগ্রাফি পূর্ববঙ্গে আসে বাংলা চলচ্চিত্রের জনক হীরালাল সেনের হাত ধরে। পূর্ববঙ্গের প্রথম স্টুডিও 'সেন অ্যান্ড ব্রাদার্স' প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯০ দশকের শেষের দিকে হীরালাল সেনদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের বগজুরী গ্রামে।

কাছাকাছি সময়ে ঢাকার নবাবদের আনুকূল্যে ইসলামপুরের পাটুয়াটুলীতে জার্মান ফটোগ্রাফার ফ্রিজ কাপের স্টুডিও প্রতিষ্ঠিত হয়। কাজেই ফ্রিজ কাপের ফটো স্টুডিওই ঢাকার প্রথম স্টুডিও।

১৯১০ সালে ঢাকার নবাবপুর রোডে 'আর সি দাস অ্যান্ড সন্স' নামে ঢাকার প্রথম বাণিজ্যিক স্টুডিও চালু হয়। এছাড়া পরবর্তীতে চালু হয় খাজা আফজালের স্টুডিও, খাজা সোলেমান কাদেরের স্টুডিও, চারুচন্দ্র গুহের স্টুডিও, টেকনিক্যাল আর্ট স্টুডিও, ডস অ্যান্ড কোম্পানি স্টুডিও, সেন স্টুডিও, স্টার স্টুডিও, ঢাকা মিউজিক্যাল মার্ট, যার অস্তিত্ব এখনও খুঁজে পাওয়া যাবে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির অপজিটের মার্কেটে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং পাকিস্তান সৃষ্টির পর স্টুডিওর সংখ্যা বেড়ে যায়। এই সময় স্টুডিওতে এসে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় নিজের, পরিবারের ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। বিয়ের পর স্টুডিওতে গিয়ে নবদম্পতির ছবি তোলা একটা রেওয়াজে দাঁড়িয়ে যায়। ইদ, পূজাসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে নতুন জামা-কাপড় পরে ফটোওয়ালার কাছে গিয়ে ছবি তোলার প্রচলন ছিল সেই সময়। শুরু থেকে ১৯৮০ দশকের শেষ পর্যন্ত সাদাকালো ফিল্মে ছবি তোলা হতো। ১৯৯০-এর দশকে রঙিন এবং নতুন শতাব্দীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে, সাদাকালো ফিল্ম উঠে গেছে। এক সময় গুলিস্তান ও এর আশপাশে মিনিট ক্যামেরা নামে কিছু ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা হতো। ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে মিনিট ক্যামেরাওয়ালারা বসত। আশির দশকেও দশ-বারোজন ক্যামেরাম্যান পথের ধারে তে-পায়ার ওপর বাক্স ক্যামেরা সাজিয়ে 'আর্জেন্ট ছবি' বলে চিৎকার করত। এখন তার একটিও অবশিষ্ট নেই।

 

তথ্যসূত্র: ঢাকার প্রাচীন পেশা ও তার বিবর্তন, ইমরান উজ জামান

১৪৩ পঠিত ... ১৭:৪২, নভেম্বর ১৫, ২০২৩

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top