একদিকে গণহারে গাছ নিধন আরেকদিকে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে বাড়ছে উষ্ণায়ন। তবে বৃক্ষনিধনের এই যুগেও গাছকে সন্তান স্নেহে লালন পালন করে বড় করে বৃক্ষমাতা খেতাব পেয়েছেন ভারতের কর্নাটকের বাসিন্দা সালুমারাদা থিম্মাক্কা। বয়স ১১০ এর বেশি হলেও নিজের বোনা গাছগুলোকে এখনও পরম যত্নে দেখভাল করে যাচ্ছেন এই নারী। তার আসল নাম আলা মারাদা থিম্মাক্কা হলেও গাছদের প্রতি ভালোবাসা এবং নিরলসভাবে তাদের জন্য কাজ করে যাওয়ায় তার নামের সাথে সালুমারাদা শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সালুমারাদা শব্দের অর্থ হচ্ছে গাছেদের সারি।
বিয়ের পর সন্তানাদি না হওয়াতে গাছদেরকেই নিজের সন্তান বানিয়ে নিয়েছিলেন। কাজ শুরু করেছিলেন মূলত নিজ গ্রামের আশপাশ থেকেই। থিমাক্কাদের গ্রামে বেশকিছু বটগাছ থাকলেও তাদের আশপাশের গ্রামগুলোতে বটগাছ সেসময় খুব একটা ছিলো না। তাই বটগাছ থেকে চারা কলম বানিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে চারা রোপন শুরু করলেন থিমাক্কা এবং তার স্বামী। নিজেদের সঞ্চয়ের অর্থ দিয়ে এভাবে চারা রোপন করতেন এবং ঘুরে ঘুরে সেগুলোর দেখভালও করতেন এই বৃক্ষমাতা। ১৯৯১ সালে স্বামীকে হারালেও গাছের প্রতি ভালোবাসা বিন্দুমাত্রও কমেনি থিমাক্কার। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে তার বোনা গাছের সংখ্যা ৮০০০ এর মতো। পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখার জন্য দেশ বিদেশের নানান পুরস্কারের পাশাপাশি থিমাক্কা পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদশ্রীও। উন্নয়নের নামে পৃথিবীজুড়ে গাছ নিধনের এই সময়েও থিমাক্কার মতো মানুষরা আমাদের বেঁচে থাকার আশা যোগান। তার জন্য রইলো ভালোবাসা।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন