আগের ঢাকার সঙ্গে এখনকার ঢাকার কোনো মিল নেই। না থাকারই কথা। ঢাকায় এক সময় ঘোড়ার গাড়ি, বাস আর রিকশা ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি দেখা যেতো না। মাঝেমধ্যে রাস্তায় দু’একটা কার দৌড়াতে দেখা যেতো।
তারপর ডিআইটি হলো, টেলিভিশন চালু হলো। ডিআইটি ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো। রামপুরা ভবনে টেলিভিশন গেছে অনেক পরে। রেডিওর অফিস ছিল নাজিমউদ্দিন রোডের দোতলা বাড়িতে। রেডিও অফিসের বিপরীত দিকের রাস্তার রেস্তোরাঁয় বসে চা খেতে খেতে আড্ডা দিতেন শিল্পী আর সাহিত্যিকরা।
গোলাম মুস্তফা, শামসুদ্দীন আবুল কালাম, শেখ লুৎফর রহমান, ফররুখ আহমদের পদচারণায় রেডিও অফিস মুখরিত হয়ে উঠত। লায়লা আর্জুমান্দ বানু, হুসনা বানু খানম ছিলেন তখনকার পরিচিত বেতার শিল্পী।
ঢাকার রাজপথে হেঁটে চলার সময় পথচারীকে কোনো গাড়ি ধাক্কা দিতো না। নির্বিঘ্নে সবাই পথ চলাচল করতেন। একুশে ফেব্রুয়ারি প্রতিপালিত হতো নীরবে। বর্তমান শহীদ মিনারের জায়গায় ছিল বড় একটা চতুর।
একুশে ফেব্রুয়ারির বিকালে শেখ লুৎফর রহমান ও অন্য শিল্পীরা রিকশা করে আসতেন। ডুগি, তবলা হাতে নিয়ে যন্ত্রশিল্পীরা ওপরে উঠে গিয়ে নিজেরাই চাদর বিছিয়ে বসতেন। একের পর এক গান গেয়ে চলতেন শিল্পীরা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শ্রোতারা গান শুনতেন। সন্ধ্যার আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যেত। শিল্পীরা রিকশায় উঠে বাড়ি ফিরতেন আর দর্শকরা একে একে নীরবে নিজেদের গন্তব্যস্থলে ফিরে যেতেন।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন