চলছে ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতার মাস, ক্যান্সারকে পাত্তা না দিলে কী ঘটবে জানেন?

৩৫৭ পঠিত ... ১৬:৪৯, অক্টোবর ০৮, ২০২২

Cancer

ব্রেস্ট ক্যান্সারকে ‘নানস ডিজিজ (Nuns Disease)’ও বলা হয়। বাইরের দেশগুলোতে যেসব নারীরা সারাজীবন সন্ন্যাসব্রতী হয়ে জীবন কাটান, আসল কথা বাচ্চা-কাচ্চা নেন না—তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ ওভারিয়ান ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।

কারণ মেন্সট্রুয়াল সাইকেলের সংখ্যার সাথে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা সমানুপাতিক।

আরেকটু সহজভাবে বলার চেষ্টা করছি।

সাধারণত ২৮ দিনের মাসিক চক্রে ১৪-১৬ দিনের কাছাকাছি সময় একজন নারীর ওভ্যুলেশন হয়। (ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণকে ওভ্যুলেশন বলে)  

অভ্যুলেশনের সময় একজন মায়ের চেয়ে একজন চাইল্ডলেস নারীর অনেক বেশি ইস্ট্রোজেন উৎপন্ন হয়। এই অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারগুলোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

আরও যেসব গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টর আছে সেগুলো হলো, বয়স বৃদ্ধি, দ্রুত মাসিক শুরু এবং দেরিতে শেষ হওয়া, ফ্যামিলি হিস্ট্রিতে যদি অন্য কারো যদি থাকে, স্থূলতা, চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া, ফিজিক্যালি অ্যাক্টিভ না থাকা ইত্যাদি।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে কম-বেশি সবাই জানলেও ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস মাস অক্টোবরে আবারও একবার নিজেদের চেক করতে দোষ নেই। ক্যান্সার বাঙালিদের মতোই। বসতে দিলে শুতে চায়। যতো বেশিদিন একে অবহেলা করবেন, তত বেশি এটি আপনার শরীরে স্থায়ীভাবে ঘাঁটি গাড়তে গাড়তে আপনাকে চিনিয়ে দেবে সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরের রাস্তা।

এই মুহুর্তেই চেক করুন আপনার ব্রেস্ট এবং আন্ডারআর্মের চারপাশে কোনো লাম্প বা পিণ্ড আছে কি-না, ব্রেস্টের ভিতরে ও চারপাশে ফোলাভাব, ত্বকের পরিবর্তন কিংবা আকার আকৃতির পরিবর্তন হচ্ছে কি-না। বেশিরভাগ সময় মেয়েরা আক্রান্ত হলেও পুরুষরাও তালিকার একদম বাইরে নেই। ১০০০ জন পুরুষে ১ জনের ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে। তবে আজকে যে জিনিসটি একদম নতুন জানতে পারলাম তা হলো—শুধু মানুষ নয়, কুকুর এবং বেড়ালেরও ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়। মাঝেমাঝে বিড়ালের ক্ষেত্রে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।

অনেক আগে মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো পোকামাকড়ের মল ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওষুধ হিসেবে টিউমারে মাখানো হতো—গরুর মস্তিষ্কের সাথে ভীমরুলের/বোলতার মলের মিশ্রণ, চারদিন চারবেলা ডোজে।  

শুধু তাই নয়, সেদিন পর্যন্তও পোকামাকড়ের মল বা টক্সিনকে চিকিৎসা পারপাসে ব্যবহার করা হতো।

আমাদের এখন সুদিন চলছে। চিকিৎসার জন্য কারও মল মাখতে হয় না, ঘরের কাছেই ডাক্তার পাওয়া যায়। তবুও কেন আমরা উদাসীন?

WHO র হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে ২.৩ মিলিয়ন নারী,এবং মারা গেছেন ৬ লাখ ৮৫ হাজার নারী। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির আগাম পরিসংখ্যান মতে,২০২২ সালে আমেরিকাতে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা হবে ২ লক্ষ ৮৭ হাজার এবং মৃত্যুর সংখ্যা হবে প্রায় ৪৪,০০০ এর কাছাকাছি। আমাদের এই নড়বড়ে দুর্বল দেশে যেহেতু কারো গণনা করার সময় এবং ফায়দা নেই, তাই আমাদের নিজেদেরকেই নিজেদের দেখতে হবে।

আসুন এই অক্টোবর মাস থেকে আমরা নিজেরাও সচেতন হই, এবং আশেপাশে যত রহিমা, জমিলা, হাসুনীর মা আছে যারা এখনো সচেতন হতে পারেনি—তাদের সচেতন করি।

৩৫৭ পঠিত ... ১৬:৪৯, অক্টোবর ০৮, ২০২২

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top