চলছে ইদের মৌসুম, ব্যস্ততার শেষ নেই বিক্রেতা, ক্রেতা থেকে শুরু করে সকল পেশার মানুষের। তবে বিশেষ উৎসবগুলোতে যাদের ডিমান্ড সবচেয়ে বেড়ে যায়, তার নাম ‘দর্জি’। এবার ইদেও দর্জিদের নিয়ে বেশ আশ্চর্যজনক এবং নেতিবাচক রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে। অনেক দর্জি সময় মত জামা ডেলিভারি দিতে স্পিড মানি মানে ঘুষ চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গ্রাহকরা। দর্জি সমিতিতে গিয়েও এর কোন সমাধান পাননি তারা।
এমন ভুক্তভুগিরদের একজন গুলশানের মনিরা(২৪)। মুনিরা তার দর্জির ব্যাপারে জানান,‘আমার ড্রেস দেওয়ার কথা ছিলো ১৭ তারিখ। টাকা পয়সা সব ক্লিয়ার, তবুও সে আমার ড্রেস আটকে রেখেছে জাস্ট বিকজ স্পিডমানি দিতে রাজি হইনি তাই। এটা কি কোনো অফিস যে ফাইল আটকে রাখার মতো ড্রেস আটকে রাখবে?’
তবে মনিরার অভিযোগ বেশ হালকাভাবেই নিয়েছেন তার দর্জি রশিদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘অহন রাজি হইবো না জানি, চান রাইতের আগ পর্যন্ত সময় আছে। তখন ঠিকই দৌড়ায়া দৌড়ায়া আইবো..’
এদিকে স্পিডমানির বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন ধানমণ্ডিরর সূচনা টেইলার্সের মালিক সুজন। তিনি বলেন, ‘সরকারি কাজে সময় মত ফাইল পাইতে ঘুষ দিতে হলে আমাদেরকে দিতে কেন এত জ্বলে? আমরা কী এদেশে বানের জ্বলে ভাইসা আসছি? আমাদের কি নেই ঘুষ খাওয়ার অধিকার? নাকি এই অধিকার শুধু ওই ভদ্রপল্লির ঘুষখোরদের!’
সারাবছরের কথা মনে করে কিছুটা আবেগ প্রবণও হয়ে পড়েন সুজন। কাঁদো কাঁদো গলায় তিনি বলেন, ‘সারাবছর আমাদের কথা কারো তেমন মনে পড়ে না। পড়লেও কেমন যেন অবহেলা করে। আমরা কিন্তু এই শাসন, শোষণের বিরুদ্ধে তেমন কিছুই বলি না। দুঃখ পেয়ে মনে মনে বলি, একদিন সব অবহেলা দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দেবো...ইদ আসছে, দিস ইজ দ্য টাইম নাও..’
শুধু তাই নয়, সুজন আরও বলেন,‘দর্জি সমিতি থেকে ঠিক করা হইছে সময়মতো কাপড় পাইতে চাইলে এখন থেকে স্পিডমানি দিতে হবে। স্পিডমানি দেওয়া এখন ট্রেন্ড, আপনারা এতো ট্রেন্ড ফলো করেন, আর সামান্য এটা করতে পারেন না আমরা দর্জি দেখে, তা তো হবে না....’
এদিকে বনানীর মারিয়া নামের এক তরুণী তার দর্জির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন৷ এ ব্যাপারে মারিয়া(২৪) কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার সুতা আর চুমকির নকশা করা অরগেন্ডি কাপড়ের জামা বানাইতে দিছিলাম। ৮০০ টাকা গজের কাপড়। হালার পুত আমার জামা করছে কি না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এইজন্যই মামলা করলাম। এর শেষ আমি দেখে ছাড়বই, ইনশাআল্লাহ....’
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন