১৯৩৭ সালের বড়দিনের ঘটনা। চলছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। সেদিন খেলা ছিলো চেলসি বনাম শার্লটন ফুটবল ক্লাবের মধ্যে। একে তো চেলসির খেলা, তার ওপর বড়দিনের ছুটি, স্বাভাবিকভাবেই গ্যালারিতে ছিলো দর্শকদের উপচে পড়া ভীড়।
বেশ চমৎকারভাবেই এগোচ্ছিলো খেলা। চেলসির দেওয়া গোলের বিপরীতে শার্লটনও পাল্টা গোল দেওয়ায় খেলা একদম জমে উঠেছিলো। কিন্তু বাধ সাধলো ইংল্যান্ডের ঘন কুয়াশা। এক ঘন্টার মাথায় বাধ্য হয়ে খেলা স্থগিত ঘোষণা করলেন রেফারিরা। একে একে সব খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেও রয়ে গেলেন শার্লটনের বেচারা গোলরক্ষক স্যাম বারট্রাম। রেফারিদের খেলা থামানোর বাঁশির আওয়াজ গোলবারের পেছনে থাকা সমর্থকদের হইহুল্লোড়ের শব্দ ভেদ করে তার কানে আসেনি। ঘন কুয়াশার কারণে তিনি ফাঁকা মাঠও দেখতে পাননি। তিনি বরং ভাবছিলেন, তার সতীর্থরা বোধহয় এতই ভালো খেলছে যে তাদের প্রতিরোধ ভেদ করে চেলসির খেলোয়াড়েরা বল নিয়ে গোলবারের কাছেই আসতে পারছেনা! প্রায় পনেরো মিনিট ধরে তিনি দুই হাত ছড়িয়ে গোলবারের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন, যাতে চেলসির দেওয়া একটা শটও মিস না হয়!
পনেরো মিনিট পর একজন নিরাপত্তারক্ষী তাকে দেখতে পেয়ে জানান যে, ম্যাচটি আরো অনেকক্ষণ আগেই স্থগিত হয়ে গেছে, সব খেলোয়াড়েরাও মাঠ ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু স্যাম কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, তার সতীর্থ বন্ধুরা তাকে ফেলে মাঠ থেকে চলে যাবে। নিজের চোখে তাদের ড্রেসিংরুমে দেখার পর তিনি শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করেন যে সত্যিই তার বন্ধুরা তাকে না জানিয়েই চলে গেছে, যেখানে তিনি কিনা তাদের গোলবার রক্ষা করার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। সেসময় তিনি বন্ধুদের কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হলেও ঘটনাটি যে তার মনে আক্ষেপের দাগ কেটেছিলো, তা তিনি পরবর্তীতে নিজের আত্মজীবনীতেও উল্লেখ করেছিলেন।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন