টিনটিন স্রষ্টা হার্জ সম্পর্কে যে ১০টি মজার তথ্য আপনিও নাও জানতে পারেন

১৯৬৯ পঠিত ... ১৮:৫৫, মার্চ ০৩, ২০২১

বিশ্বখ্যাত কমিক বইয়ের ধারাবাহিক সঙ্কলন বা সিরিজ 'দুঃসাহসী টিনটিনের' জনক হার্জ তথা জর্জ প্রোস্পের রেমি জন্মেছিলেন ১৯০৭ সালের ২২ মে। ১৯৮৩ সালের ৩ মার্চ তিনি যখন লিউকেমিয়া সম্পর্কিত এক রোগে মৃত্যুবরণ করেন, তার আগে বিশ্ব পেয়ে গেছে এক অসাধারণ কমিক সিরিজ- টিনটিন! ১৯২১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত টিনটিনের বই লিখেছিলেন হার্জ, যে সিরিজটি এ পর্যন্ত ৭০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং পৃথিবী জুড়ে ২০ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক দুঃসাহসী টিনটিনকে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হার্জের সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য। 

herge tintin

১# রেমি হার্জের 'হার্জ' নামটি তিনি নিয়েছেন তার প্রথম নাম জর্জের (George) প্রথম অক্ষর G এবং রেমির (Rami) প্রথম অক্ষর R কে উল্টো করে RG লেখা থেকে। পরবর্তীতে এই দুই অক্ষর থেকে Herge নামটি আসে। 

২# বেলজিয় কার্টুনিস্ট জর্জ রেমি তথা হার্জের ‘সোভিয়েত দেশে টিনটিন’ (ফরাসি: Tintin au pays des Soviets) ছিল ‘দুঃসাহসী টিন‌টিন’ সিরিজের প্রথম বই। সিরিজের এটাই একমাত্র বই যা পরে রঙ্গিন সংষ্করনে পুনঃপ্রকাশিত হয়নি।

৩# নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে যাওয়ার পনের বছর আগেই হার্জের জগতের চাঁদে প্রথম পা দেয়া মানুষ হন টিনটিন। ১৯৫৪ সালে দুঃসাহসী টিনটিনের বিখ্যাত সব অভিযানের ১৭তম কমিক বই ‘চাঁদে টিনটিন’ এর গল্প অবস্থান নেয় চাঁদের মাটিতে। টিনটিনের সাথে সেইবার তার কুকুর স্নোয়ি, ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও ক্যালকুলাসও ঘুরে আসে চাঁদের দেশ থেকে। 

৪# টিনটিনের জমজ দুই থম্পসন চরিত্রের কথা মনে আছে? হার্জের এই দুই চরিত্রের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিল আসল দুই জমজ ভাই- স্বয়ং হার্জের বাবা ও চাচা। এছাড়াও অপেরা গায়িকা ক্যাস্টাফায়োর চরিত্রের অনুপ্রেরণাও নাকি হার্জ পেয়েছিল তাঁর দাদীমা থেকে। 

৫# টিনটিনের নিত্যসঙ্গী ও পোষা কুকুর ‘স্নোয়ি’র নাম মূল সংস্করণে ছিল মিলোউ (Milou)। মিলোউ নামটি নাকি হার্জ ধার করেছেন তাঁর প্রথম প্রেয়সীর থেকে। তাঁর প্রথম প্রেমিকা ম্যারি-লুইস ভ্যান কাস্টেম’কে (Marie-Louise Van Cutsem) তিনি ভালোবেসে মিলোউ বলে ডাকতেন। 

herge drawing

৬# সাফল্যের চূড়ায় উঠতে পারলেও হার্জ বিষণ্ণতা থেকে পালাতে পারেননি। হার্জ মনে করতেন, তিনি তাঁর নিজ সাফল্যের দাস। তাই টিনটিনের গল্প বলেই জীবন পার করে দেয়া জনপ্রিয় এই শিল্পী ১৯৪৭ সালে এমন একটি ছবি এঁকেছিলেন, যেখানে তিনি নিজে বসে আছেন এক অগোছালো কাগজে ভর্তি টেবিলের সামনে আর তাঁর দিকে তাকিয়ে চাবুক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ক্রোধে ফেটে পড়া টিনটিন। এছাড়াও সময়ে সময়ে তাঁর অন্যান্য আঁকাতেও উঠে এসেছিল তার মানসিক বিষণ্ণতার ছায়া। 

৭# টিনটিন সিরিজের পেছনের নানা চরিত্রে দেখা পাওয়া যায় স্বয়ং হার্জের। যদি আগে চোখে না পড়ে থাকে, তবে টিনটিনের বিভিন্ন অভিযানে হার্জকে খুঁজে বের করার মজার খেলা খেলতে পারেন এক্ষুনি। সঙ্গে আবারো ঘুরে আসা হবে টিনটিনের এডভেঞ্চারের জগতে। 

৮# হার্জ বিশ্বখ্যাত টিনটিন চরিত্রকে নানান আঙ্গিকে ফুটিয়ে তুললেও টিনটিনের এক্সপ্রেশন বা অভিব্যক্তি ছিল খুবি সীমিত। কিছু এক্সপ্রেশনই বারবার টিনটিনের চেহারায় ঘুরেফিরে আসে, অনেক সময় তাকে মনে হয় একেবারেই এক্সপ্রেশনলেস। এর কারণ, হার্জ চেয়েছিলেন মানুষ যেন টিনটিনের অবস্থানে নিজেদের কল্পনা করে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে। টিনটিনের চেহারায় যে অভিব্যক্তি ফুটে উঠতো তা অনুভব না করে সবাই নিজের মতো করে অনুভব করবে টিনটিনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা- এমনটাই ছিল হার্জের উদ্দেশ্য। 

৯# হার্জ টিনটিনকে বিশ্বব্যাপী ঘুরিয়ে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করালেও, তিনি নিজে কিন্তু জীবনে কখনোই অভিযানের স্থানগুলোর একটিতেও যাননি। কোনো জায়গা আদৌ না দেখে সেখানে অভিযানের গল্প লেখা যে চাট্টিখানি কথা নয়, নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন? কিন্তু এ কাজ অসাধারণ দক্ষতার সাথে করে দেখিয়েছেন এই কিংবদন্তি কার্টুনিস্ট।

১০# ১৯৮৩ সালের ৩মে লিউকেমিয়া সম্পর্কিত রোগে ভুগে ৭৬ বছর বয়সে মারা যান রেমি হার্জে। তিনি চলে গেলেও নিজের সিন্দুকে রেখে যান প্রায় ১৫০ পৃষ্ঠার স্কেচ, টিনটিনের বিভিন্ন সংলাপ ও কাহিনীর বর্ণনা যা এখনও রয়ে গেছে অসমাপ্ত। হার্জ চলে গেলেও সকলের জন্য রেখে গেছেন টিনটিনের দুঃসাহসী অভিযানের এক বিস্ময়কর জগত। 

১৯৬৯ পঠিত ... ১৮:৫৫, মার্চ ০৩, ২০২১

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top