আমেরিকানরা পানীয়ের গ্লাসে বরফ দিলেও ইউরোপিয়ানরা দেয় না কেন?

১২৬৬ পঠিত ... ১৫:১৬, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০

আমেরিকান সিনেমাগুলোতে আমরা হয়তো অনেকেই লক্ষ্য করেছি যে তারা কোক, শ্যাম্পেন বা বিয়ারের গ্লাসে আগে ইচ্চামতো বরফ নেয়, তারপর সেটার উপর পানীয় ঢালে। পানীয়ের বেলাতে এটাই আমেরিকানদের অভ্যাস, যা ব্রিটিশদের বা ইউরোপিয়ানদের সম্পূর্ণ বিপরীত। 

এটাকে মার্কিনিদের অভ্যাস বা ঐতিহ্য যা-ই বলুন না কেন, এর শুরুটা হয়েছে উনবিংশ শতাব্দীতে। ততদিনে অধিকাংশ আমেরিকানের বাসায় আইস বক্স পৌঁছে গিয়েছিল। বড় বড় বরফ ফ্যাক্টরিগুলো ছিল উত্তর আমেরিকা কিংবা কানাডায়। সেখান থেকে বিশাল বিশাল বরফটুকরা আমেরিকায় পৌঁছাতো এবং এগুলো বেশিরভাগই বিক্রি হতো ব্রিটিশ ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোতে। পানীয়তে বরফটুকরা  দেওয়াটা ছিল তখনকার দিনের অন্যতম অভিজাত ফ্যাশন অনুষঙ্গ এবং আমেরিকাতে যেহেতু প্রায় প্রতিটি ঘরেই আইস বক্স ছিল, তাই পরিবারগুলো সহজেই আইস বক্সে করে বরফ জমা রাখতে পারতো। এজন্য এই অভ্যাসটি আমেরিকাতে খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে এবং এক পর্যায়ে এটি শুধু অভিজাত ফ্যাশন না থেকে সর্বমহলে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অন্যদিকে, ব্রিটেনেও পানীয়তে বরফ দেওয়াটাও ছিল উচ্চবিত্তদের ফ্যাশন। ব্রিটিনের হাই ক্লাস পার্টিতে শ্যাম্পেন বা দামি বিয়ারের গ্লাসে বরফ দেওয়ার প্রচলন ছিল। কিন্তু আমেরিকার মতো ব্রিটেনে আইস বক্স বা এই জাতীয় কোনো কিছু অতটা বিস্তৃতি লাভ করেনি এবং যার ফলে সেখানে বরফ আমদানিও কম হতো এবং বরফের দামও ছিল অত্যধিক বেশি। এ সবকিছুর কারণে ব্রিটেনে পানীয়ের গ্লাসে বরফ দেওয়ার ফ্যাশন ততটা জনপ্রিয় হয়নি। পরে  যখন পানিকে বরফ করার আধুনিক যন্ত্রও আবিস্কৃত হয়েছে, ব্রিটিশরা কখনো আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। একই ঐতিহ্য এভাবেই দুই দেশে বা দুই উপমহাদেশে ভিন্ন পথ নিয়েছে। 

তাই আপনি যদি এরপর আমেরিকা থেকে ব্রিটেনে যান, গ্লাসে বরফ না দিলে রাগ করবেন না যেন!

 

১২৬৬ পঠিত ... ১৫:১৬, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top