মনোসেক্স তেলাপিয়া একটি খেতে স্বাদু, দ্রুত বর্ধনশীল এবং লাভজনক মাছ। তাই আজকে আমরা মনোসেক্স তেলাপিয়ার চাষ পদ্ধতি নিয়ে কথা বলবো। তি থেকে চার মাসের মধ্যে এই মাছ বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে।
পুকুর তৈরি করা
পুকুরের আকৃতি ছোট বড় যে কোন রকমেরই হতে পারে। কিন্তু গভীরতা হতে হবে ৩ থেকে ৫ ফুট। পাড় ঠিক করে, আগাচাহা পরিষ্কার করে প্রতি শতাংশে ১ কেজি করে চুন দিতে হবে।
চুন দেয়ার তিন দিন পরে প্রতি শতাংসে বারো থেকে পনেরো কেজি গোবর সার দেবেন।
পোনা ছাড়া
পুকুর প্রস্তুতির পর প্রতি শতাংশে ১০-১৫ গ্রাম ওজনের সুস্থ সবল ২০০-২৫০টি পোনা ছাড়া যেতে পারে। পোনা মজুদের পর সম্পূরক খাদ্য হিসাবে চালের কুঁড়া, সরিষার খৈল, গমের ভূষি, ফিশমিল ইত্যাদি মিশ্রণ (২৮% প্রোটিন) প্রতিদিন পুকুরে মাছের দেহ ওজনের ৪-৮% হারে প্রয়োগ করতে হবে।
প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধির জন্য ১৫ দিন অন্তর অন্তর ৪-৬ কেজি গোবর সার অথবা ২-৩ কেজি মুরগীর বিষ্ঠা প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর জাল টেনে মাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করে সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
মাছ বিক্রি
পুকুরে পোনা মজুদের ৪-৫ মাসের মধ্যে ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। এ অবস্থায় পুকুর শুকিয়ে সমস্ত মাছ ধরে বিক্রি করতে হবে। এ পদ্ধতিতে চাষ করে প্রতি হেক্টরে ৮-৯ টন মাছ উৎপাদন করা সম্ভব।
মুনাফা কেমন: বাণিজ্যিকভাবে চাষের ক্ষেত্রে মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষে প্রতি হেক্টরে ১.২৫-১.৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ২.০-২.৫ লক্ষ টাকা মুনাফা করা যায়।
কিছু পরামর্শ
মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন ও চাষের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন-
১. প্রজনন হাপায় স্ত্রী ও পুরুষ মাছের অনুপাত সঠিক হারে রাখতে হবে। প্রজনন পুকুর সব সময় পরিস্কার প্রয়োজনীয় পরিমানে পানি (১-১.৫ মিটার) সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২. হরমোন মিশ্রিত খাদ্য প্রয়োগের ক্ষেত্রে পোনার সাইজের তারতম্য না হওয়াই ভাল। সে জন্য একই দিনে সংগৃহীত নিষিক্ত ডিম হতে উৎপাদিত পোনা একত্রে করে হাপায় রেখে হরমোন মিশ্রিত খাদ্য প্রয়োগ করা যেতে পারে।
৩. বাৎসরিক পুকুরে তেলাপিয়া চাষ না করাই ভাল। পুকুর অবশ্যই শুকিয়ে পরবর্তী চাষ শুরুর আগে সমস্ত মাছ ধরে ফেলতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন