মহাত্মা গান্ধীর জীবনের ১৩টি অজানা দিক

১০৯০ পঠিত ... ১৬:৩৩, অক্টোবর ০২, ২০২০

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীর দিন ২ অক্টোবরকে ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় 'আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গান্ধীজির জন্মদিন এবং আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে চলুন জেনে আসি তাঁর জীবনের কিছু অজানা দিক!

১# কাস্তবাইয়ের সাথে যখন গান্ধীর বিয়ে ঠিক হয় তখন তাঁর বয়স ৭ বছর। ১৮৮৩ সালে ১৩ বছর বয়সের গান্ধীকে ১৪ বছর বয়সী কাস্তবাইয়ের সাথে বিয়ের বন্ধনে বেঁধে দেয়া হয়। সেই বন্ধন গান্ধী সারাজীবন অটুট রেখেছিলেন।
শুধু তাই নয়, গান্ধীর সকল আন্দোলন এবং সুখ দুঃখের সাথীও ছিলেন কাস্তবাই। (উল্লেখ্য, ৩৭ বছর বয়সে গান্ধী নারী সংসর্গ পরিত্যাগ করেন। বৈবাহিক জীবনে কাস্তবাই এবং গান্ধী ৪ ছেলে সন্তানের জন্ম দেন)

২# গান্ধীর মা পুতলিবাই ছিলেন কঠিন ধর্মানুরাগী নারী। ছোটোবেলা থেকেই ধর্মীয় অনুশাসনে গান্ধী বড় হন। বিদেশ যাবার প্রাক্কালে পুতলিবাই তাঁকে শপথ করিয়েছিলেন যে তিনি মদ, মাংস এবং নারী হতে বিরত থাকবেন।
তবে বিদেশ গিয়ে নিরীক্ষাপ্রিয় গান্ধী এক বড় ভাইয়ের সাথে একবার ধূমপান করলেন। কিন্তু তাঁর ধূমপান ভালো লাগেনি। এছাড়াও মজার ব্যাপার হলো গান্ধীর এক মুসলিম বন্ধু শেখ মেহতাব তাঁকে বুঝিয়েছিলেন যে, ইংরেজরা মাংস খায় বলেই এত বুদ্ধি তাদের। একারণেই দেশ শাসনে হাতও পাকা। আর ভারতীয়রা নিরামিষাশী বলেই এখনো তাদের প্রজা হয়ে আছে।
গান্ধী সেই বন্ধুর কথায় প্রভাবিত হয়ে গরুর মাংস খেলেন!

৩# একবার ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট থাকা সত্ত্বেও গান্ধী কালো এবং ভারতীয় বলে ফার্স্ট ক্লাস কামরায় বসতে দেয়নি। বরং বিষয়টি নিয়ে বিবাদ করায় তাকে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। এই ঘটনাটি গান্ধীর মনে দাগ কেটেছিল। এরপরই গান্ধী বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন এবং সত্যাগ্রহের ধারণা সেখান থেকেই শুরু।

৪# লবণের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করায় গান্ধী হাজার হাজার ভারতীয়দের সাথে পায়ে হেঁটে ডান্ডির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ইতিহাস একে Salt March বলে থাকে। শুধু মাত্র নিজ হাতে লবণ তৈরির জন্য পায়ে হেঁটে ১২ই মার্চ থেকে ৬ই এপ্রিল পর্যন্ত এলাহাবাদ থেকে ডান্ডি পৌছান। এলাহাবাদ থেকে ডান্ডি প্রায় ২৪১ মাইল। সে সময় ব্রিটিশরাজ সেই অপমানের বদলা নিতে ৬০,০০০ ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে।

৫# এছাড়াও হাঁটা নিয়ে মহাত্মা গান্ধীর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। গান্ধী জীবনে এত হেঁটেছেন যে তাতে পুরো পৃথিবী দুইবার চক্কর দেয়া সম্ভব। অর্থাৎ দিনে প্রায় ১৮ কিলোমিটার করে হাঁটতেন তিনি।

৬# গান্ধী নিয়মিত তলস্তয়কে চিঠি লিখতেন। হিটলারের সাথেও বেশ চিঠি চালাচালি দেখা গিয়েছিল। যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ করে গান্ধী হিটলারকে একটি চিঠি লিখলেও তা আর হিটলারের কাছে পৌছায়নি। কারণ ব্রিটিশ সরকার এতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন।

৭# গান্ধীর সম্মানে ভারতে ৫৩টি বড় রাস্তা এবং সারা পৃথিবীজুড়ে ৪৮টি রাস্তার নামকরণ করা হয় গান্ধীর নামে। শুধু তাই নয়, Time Magazine এর 'Man of the year 1930' হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী।

৮# মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুর ২১ বছর, ১৯৬৯ সালে তাঁর নামে ডাকটিকিট প্রকাশ করে ব্রিটেন। উল্লেখ্য, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধেই লড়াই করেছিলেন গান্ধী!

৯# মহাত্মা গান্ধীর ইংরেজি উচ্চারণের মধ্যে আইরিশ প্রভাব ছিল। কারণ তাঁর প্রথম শিক্ষক ছিলেন একজন আইরিশ।

১০# মহাত্মা গান্ধীর ভক্ত ছিলেন মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপলের স্রষ্টা স্টিভ জবস। তাঁর দেখাদেখি জবসও গোলাকার ফ্রেমের চশমা পরতেন।

১১# একজোড়া বাঁধানো দাঁত ছিল গান্ধীর। প্রয়োজনের সময় ছাড়া সেটিকে কাপড়ে মুড়ে কাছে রাখতেন তিনি।

১২# ১৯৩৭, ১৯৩৮, ১৯৩৯ এবং ১৯৪৭ সালে মনোনয়ন দিলেও ১৯৪৮ সালে শান্তিতে নোবেল গান্ধীরই পাবার কথা ছিল। কিন্তু ২ অক্টোবর আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হওয়ায় গান্ধীকে পুরষ্কার দিয়ে খাটো করা যায়নি (তখন মরণোত্তর নোবেল পুরষ্কার দেওয়ার রীতি ছিলো না)।

১৩# গান্ধীর শেষকৃত্যে ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল যা প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছিল!

কি তীব্র ভালোবাসার উদাহরণ তৈরি করে গেছেন পৃথিবীজুড়ে, তাই না?

১০৯০ পঠিত ... ১৬:৩৩, অক্টোবর ০২, ২০২০

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top