টমাস স্টার্নস এলিয়ট ছিলে একাধারে প্রাবন্ধিক, প্রকাশক, নাট্যকার, সাহিত্য ও সমাজ সমালোচক এবং বিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী কবিদের একজন। ১৮৮৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয়া, নোবেল বিজয়ী এই কবি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিতে পারেন।
১# ব্যক্তিজীবনে রসিকতা পছন্দ করতেন এলিয়ট
April is the cruelest month- জগদ্বিখ্যাত এই লাইনের রচয়িতা টি এস এলিয়টের পরিচয় একজন সিরিয়াস কবি হিসেবেই। কবিতা হিসেবে সিরিয়াস ঘরানার হলেও ব্যক্তিজীবনে টি এস এলিয়ট রসিকতা পছন্দ করতেন। পরিবার ও বন্ধুমহলে তার পরিচয় ছিলো রসিক টম। বিশেষ করে প্র্যাক্টিকেল জোক তার খুব পছন্দের ছিলো। প্র্যাংকের মধ্যে তার প্রিয় ছিল দুর্গন্ধ বোমা, বিস্ফোরিত সিগারেট। একবার তার ভাগনেকে নিয়ে লন্ডনের একটা জোক শপে গিয়ে দুর্গন্ধ বোমা কাছের একটা হোটেলে লবিতে রেখে এসেছিলেন। এছাড়া তার বাসায় আমন্ত্রিত অতিথিদের চেয়ারে শুধু বাতাস ভর্তি ফাঁপা কুশন রাখতেন।
২# দিনে কখনও তিন ঘণ্টার বেশি লিখতেন না এলিয়ট
এলিয়ট কখনও নিজেকে ফুল টাইম লেখক হতে দেননি। সবসময়ই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য চাকরি করেছেন। শিক্ষকতা করেছেন, করেছেন সম্পাদনা, সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও কাজ করেছেন। ব্যাংকেও চাকরি করেছেন কিছুদিন। দিনে তিনি সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা লিখতেন৷ এমনকি অনেক প্রকাশকের অনুরোধ সত্ত্বেও দৈনিক তিন ঘণ্টার লিমিট তিনি কখনও অতিক্রম করেন নি।
৩# এলিয়ট অত্যন্ত ব্রিটিশপ্রেমী ব্যক্তি ছিলেন
এলিয়ট মনেপ্রাণে ব্রিটিশ হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ১৯১৫ সালে ইংল্যান্ডে চলে গেছেন তাই নয়, ১৯২৭ সালে তিনি ব্রিটেনের নাগরিক হন। এবং সেজন্য এ্যাংলিকানিজমে ধর্মান্তরিত হন।
এলিয়ট বলতেন, আমার মস্তিষ্ক আমেরিকান, আমার হৃদয় ব্রিটিশ।
৪# সংস্কৃত শিখেছিলেন এলিয়ট
হার্ভার্ডে গ্র্যাজুয়েশনের সময় এলিয়ট কবি ও দার্শনিক জর্জ সান্টায়ানার দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এতই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে ১৯১১-১৯১৪ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ডে এলিয়ট ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃত ভাষা শিখেছেন।
৫# বুলশিট শব্দটির প্রথম ছাপার ব্যবহারকারী
১৯১০ সালের শুরুর দিকে এলিয়ট 'দ্য ট্রায়াম্ফ অফ বুলশিট' নামে একটি কবিতা লেখেন। তার হেটার্সদের সমুচিত জবাব দেয়া কবিতাটি অনেকটা যেন বিশ শতকের শুরুর দিকের টেইলর সুইফটের মেজাজ। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির মতে, বুলশিট শব্দটার প্রথম মুদ্রিত প্রকাশ ঘটে এলিয়টের কবিতায়। এই অর্থে এলিয়ট ছাপার হরফে বুলশিট শব্দ ব্যবহারের অগ্রদূত।
৬# সম্পাদকেরা ব্যর্থ লেখক কিনা- প্রশ্নের জবাবে এলিয়ট
প্রকাশক রবার্ট জিরো একবার এলিয়টের কাছে জানতে চান যে, বহুপ্রচলিত ধারণা যে বেশিরভাগ সম্পাদক আসলে ব্যর্থ লেখক- এলিয়ট এটা বিশ্বাস করেন কিনা। এলিয়ট কয়েক মুহূর্ত ভাবলেন। তারপর বললেন, হ্যাঁ আমি মনে করি অনেক সম্পাদক ব্যর্থ লেখক। কিন্তু একই কথা অধিকাংশ লেখকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন