লিও টলস্টয়ের বিচিত্র জীবনের ৮টি অজানা কাহিনী

৯৫৯ পঠিত ... ১৩:৪৬, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২০

১৮২৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক লিঁও টলস্টয়। চলুন জেনে আসি তাঁর জীবনের কিছু অজানা কাহিনী।


১#
লিও টলস্টয় একবার বক্তৃতা করছিলেন। বক্তৃতায় সব প্রাণীর প্রতি অহিংস ও সহানুভূতিশীল হওয়ার কথা বলছিলেন। এমন সময় একজন প্রশ্ন করল,
'বনের ভেতর একটা বাঘ যদি আমাকে আক্রমণ করে, কী করব বলুন তো?'
টলস্টয় বললেন, 'নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। এমন ঘটনা জীবনে বারবার ঘটে না!'

২#
টলস্টয়ের জীবনীশক্তি ও কর্মোদ্যম ছিল প্রচন্ড দানবীয় রকমের। দক্ষ শিকারি এবং ভয়ংকর একগুয়ে স্বভাবের জন্যও তিনি পরিচিত ছিলেন। একবার যখন তিনি ভালুক শিকারে যান, একটা ভালুক থাবা মেরে চোখের নিচে থেকে বাঁদিকের গাল ছিড়ে নামিয়ে দেয়। দুই সপ্তাহ পরে ভালো হয়ে তিনি আবার শিকারে যান এবং ঐ ভালুকটিকে বধ করে তবেই ক্ষান্ত হন!

৩#
টলস্টয় ১৯০২ থেকে ১৯০৬ পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার-এর জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ১৯০১, ১৯০২ এবং ১৯১০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার-এর জন্যও মনোনীত হন। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, তিনি একবারও নোবেল পুরস্কার জিততে পারেননি!

৪#
বয়স আঠারো হওয়ার পর অঢেল পৈতৃক সম্পত্তি ও জমিদারির মালিকানা পাওয়ার পর টলস্টয় উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন শুরু করলেন৷ এতে করে তিনি কিছুদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে থাকাকালীন তাঁর হাতে এল বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের জীবনী, যা পড়ে তিনি জানতে পারলেন বেঞ্জামিন দিনশেষে তাঁর দোষগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখতেন। বই পড়ে তিনিও ভাবলেন এই অভ্যাস গড়ে তুলেছিলেন। বিয়ের আগে সেই ডায়েরি দিয়েছিলেন স্ত্রীর হাতে। সব জেনে পরবর্তীকালে স্ত্রী সোফিয়াই তাঁকে 'চরিত্রহীন' বলেছিলেন!

৫#
দেখা হওয়ার এক সপ্তাহের মাঝেই ১৮ বছর বয়সী সোফিয়াকে বিয়ে করেন ৩৪ বছর বয়সী টলস্টয়। টলস্টয়ের হাতের লেখা একমাত্র তাঁর স্ত্রী সোফিয়াই পড়তে পারতেন। তাই সোফিয়াকেই পাণ্ডুলিপি থেকে লেখা উদ্ধারের দায়িত্ব পালন করতে হতো। 'ওয়ার অ্যান্ড পিস' উপন্যাসটির সাতটি খসড়া তৈরি করেছিলেন সোফিয়া। আবার কারো মতে সংখ্যাটি সতেরো কিংবা একুশ!

৬#
'ওয়ার অ্যান্ড পিস’ এই যুগান্তকারী রচনাটি লিখতে টলস্টয়ের সময় লেগেছিল দীর্ঘ পাঁচ বছর!

৭#
রাশিয়ায় দুর্ভিক্ষের সময় একদিন আক্রান্ত অঞ্চল সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন টলস্টয়। ওই সময়েই একটি মেয়ে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলে সেই ঘটনাকে নিয়ে লিখলেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘আনা কারেনিনা'।

৮#
পাদ্রী-পুরোহিতদের বিরুদ্ধে কথা বলা ও সমালোচনার জন্য শাস্তিস্বরূপ টলস্টয়কে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে বহিষ্কার করা হল। যাজক সম্প্রদায় ঘোষণা দিলো টলস্টয় আর খ্রিস্টান বলে গণ্য হবেন না। এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে যারা ঈশ্বর ও যীশুকে নিয়ে ব্যবসা করে তাদের চেয়ে তিনি সহস্র গুণ বেশি ধার্মিক খ্রিস্টান। তাঁর মৃত্যু পরবর্তী সময়েও কোনো অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া করা হয়নি। সেবারই প্রথম রাশিয়া কোনো মৃত্যু দেখলো, যেখানে গীর্জার কোনো ভূমিকা ছিলো না!

৯৫৯ পঠিত ... ১৩:৪৬, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২০

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top