করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। করোনা অভিধানের ভাষায় বললে, হোম কোয়ারেন্টিন বা সেলফ কোয়ারেন্টিন মেনে চলা। যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদেরকে অন্তত ১৪ দিন ঘরে অবস্থান করতে হয়। তাছাড়া আমাদের দেশে করোনায় সংক্রমণ নাগামছাড়া হওয়ার আগেই একে থামিয়ে দিতে দেশের সব মানুষেরই উচিত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া। এক্ষেত্রে টানা বেশ কিছু দিন ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্তি চলে আসাটা স্বাভাবিক। তবে আপনার হাতের কাছে এমন কিছু রিসোর্স আছে যেগুলোর ঠিকঠাক ব্যবহার করলে আপনার বিরক্তিকর সময়টা কিছুটা হলেও উপভোগ্য হয়ে উঠবে। eআরকি থেকে জেনে নিন এমন ১০টি টিপস।
১# কিছুদিন আগেই বইমেলা গেলো। প্রচুর বই তো কিনেছেন! কিছু বই পড়েছেন, কিছু বই পড়েননি। কেউ কেউ হয়তো পড়াই শুরু করেননি। এই অবসরে বইমেলার বইগুলো পড়া শুরু করুন। রিভিউ লিখুন। প্রয়োজনে লেখককে ট্যাগ করে রিভিউ ফেসবুকে আপলোড করুন।
২# বইমেলার মাসে তো প্রচুর সেলফি ও ছবিও তুলেছেন। আপলোড দেননি অনেকগুলোই। ফেসবুকে ওইসব ছবি আপলোড দেয়া শুরু করুন। সবচেয়ে ভালো হয় উইয়ার্ড ও আর্কাইভে থাকা ছবিগুলো (ক্ষ্যাত আমলের ছবি) ছবিগুলো আপলোড দিলে। প্রচুর হাহা রিএ্যাক্টের সাথে সাথে মজার মজার কমেন্টও পড়বে। সেগুলোর উত্তর দিয়ে সময় ভালোই কাটবে।
৩# আপনি গান গাইতে পারেন? গলা ছেড়ে গান! গান গাইতে পারেন না? বাথরুম সিঙ্গার? আপনি আরো জোরে গলা ছেড়ে গান। বাথরুম সিঙ্গার বলে অন্যরা আপনার গান শুনতে চাইতো না! সমস্যা নাই। আপনিই আপনার গান শুনুন। আর রেটিং করুন, কোন গানটি কতটা বেসুরো গলায় গাইলেন। অন্যদেরকেও শোনান, এরপর সবাই মিলে উপভোগ কিংবা হাসাহাসি করুন। এই ছোট ছোট আনন্দগুলো ছাড়া কি আছে জীবনে!
৪# ইউটিউব হতে পারে অবসর কাটানোর দারুণ এক মাধ্যম। ইউটিউবে নানান বিষয় নিয়ে আলাদা আলাদা চ্যানেল আছে। আপনি মুভি নিয়ে আলোচনা পছন্দ করেন? স্পোর্টস সম্পর্কে জানতে ভালো লাগে? স্পেস সম্পর্কে জানার ব্যাপক আগ্রহ? এভাবে নিজের পছন্দের টপিক খুঁজে এক্সপ্লোরে নেমে পড়ুন। মাস কি; বছরই কেটে যাবে!
৫# আপনি যদি একা থাকেন ও রান্না পারেন তাহলে টুকটাক রান্না করুন। সেই রান্নার ছবি ফেসবুকে আপলোড করুন রেসিপিসহ। কেজানে, কোয়ারেন্টিনের এই দিনগুলোর পরে আপনি হয়তো বিখ্যাত কুক ব্লগার হয়ে যেতে পারেন। রান্না না পারলেও সমস্যা নাই। নিজের হাস্যকর রান্নার রেসিপি ও ছবিও কিন্তু ফেসবুকে দিতে পারেন। দিনশেষে আনন্দই পাবেন। তবে হ্যাঁ, নিজের খাওয়ার জন্য রান্না করুন, এক্সপেরিমেন্টের জন্য না। তবে যারা রান্না জানেন না, শিখে ফেলার এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর পাবেন না কিন্তু!
৬# আপনার বিশেষ কোন স্কিল যেমন-ছবি আঁকা, কার্টুন, ক্যারিকেচার কিংবা ইলাস্ট্রেশন, লেখালেখি ইত্যাদি যাই থাকুক না কেন, এই সময়টাতে নিজের পোর্টফোলিও সমৃদ্ধ করে ফেলতে পারেন। কিংবা আঁকতে বা লিখতে পারেন কেবলই মনের আনন্দে। ভালো কথা, এদিক ওদিক অনেক কাজ করেছেন কিন্তু সময় করে সব গুছিয়ে পোর্টফোলিওটা বানানো হয় না, এমন সমস্যায় যদি ভোগেন এতদিন তবে সেটাও সেরে ফেলছেন না কেন?
৭# অনেকদিন ধরে ভাবছেন নিজের কোন একটা স্কিল বাড়াবেন। হতে পারে গিটার শেখা, কিংবা স্প্যানিশ ভাষা শেখা কিংবা হতে পারে একদম প্রফেশনাল কোন স্কিল। এই সময়টা কাজে লাগান। ইন্টারনেটের বিভিন্ন সোর্স থেকে যতটুকু পারা যায় শিখে ফেলুন। বাকিটা কোয়ারেন্টিনের দিনগুলোর শেষে ঝালাই করে নিবেন।
৮# পরিচিত মানুষদের সাথে কথা বলুন, অর্থাৎ ইন্টারনেটে কানেকটেড থাকুন। অনেকদিন যাদের সাথে কথা বলা হয়নি, তাদের সাথে কথা বলুন। ফ্যামিলি, ফ্রেন্ডস, পুরোনো বন্ধু যারাই দূরে আছে সবার সাথেই ইমো, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইভার ইত্যাদির সোশ্যাল অ্যাপের মাধ্যমে কানেক্টেড থাকুন।
৯# scribd.com নামে একটা অনলাইন ই-বুক সাইট ওদের ১ মিলিয়ন বই ১ মাসের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। অবসর সময়ে এই সাইট থেকে পছন্দের বই খুঁজে পড়তে পারেন।
১০# আপনি যদি আক্রান্ত না হয়ে থাকেন, আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও নাই। কিন্তু সেফটির জন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাসায়ই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাহলে আপনার জন্য সময় কাটানো একদম সহজ। মীনা-রাজুর কাজ পরিবর্তনের মতো আপনার স্ত্রী বা মায়ের কাজগুলো প্রতিদিন করা শুরু করুন। সময় চলে যাবে। কারণ তারা বছরের পর এই কাজগুলো করেই বাসার পুরো সময়টা কাটায়। তাদের নিয়ে ভাববেন না, কয়েকদিন ফ্রি সময়ও তারা উপভোগই করবে।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন